বাংলাদেশের বিমান বাহিনী তাদের পুরনো যুদ্ধবিমান বহরকে আধুনিকায়নের লক্ষ্যে চীনের জে-১০সি মাল্টিরোল যুদ্ধবিমান কেনার পরিকল্পনা করছে। এই সম্ভাব্য চুক্তি দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনৈতিক সমীকরণে নতুন মাত্রা যোগ করতে পারে।
বাংলাদেশের আধুনিকায়নের প্রয়াস
বাংলাদেশের বিমান বাহিনী বর্তমানে মিগ-২৯ এবং এফ-৭ যুদ্ধবিমান পরিচালনা করে, যা প্রযুক্তিগতভাবে পুরনো এবং রক্ষণাবেক্ষণে ব্যয়বহুল। বিমান বাহিনীর প্রধান হাসান মাহমুদ খান সম্প্রতি চীন সফরে গিয়ে মাল্টিরোল যুদ্ধবিমান ও আক্রমণ হেলিকপ্টার সংগ্রহের আগ্রহ প্রকাশ করেন। প্রাথমিকভাবে প্রায় ১৬টি জে-১০সি যুদ্ধবিমান কেনার পরিকল্পনা রয়েছে।
জে-১০সি যুদ্ধবিমানের বৈশিষ্ট্য
জে-১০সি একটি চতুর্থ প্রজন্মের প্লাস মাল্টিরোল যুদ্ধবিমান, যা উন্নত অ্যাভিওনিক্স, সক্রিয় ফেজড অ্যারে রাডার এবং দীর্ঘ পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র বহন করতে সক্ষম। এর উন্নত বৈশিষ্ট্য বাংলাদেশের আকাশ প্রতিরক্ষা সক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করতে পারে।
ভারতের উদ্বেগ
পাকিস্তান ইতিমধ্যে জে-১০সি যুদ্ধবিমান সংগ্রহ করেছে, এবং এখন যদি বাংলাদেশও একই পথে এগোয়, তবে ভারতের জন্য এটি একটি কৌশলগত চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে। ভারতের সীমান্তে চীনা প্রযুক্তির যুদ্ধবিমান উপস্থিতি ভারতের নিরাপত্তা পরিকল্পনায় নতুন মাত্রা যোগ করতে পারে।
আর্থিক ও কৌশলগত বিবেচনা
যদিও জে-১০সি তুলনামূলকভাবে সাশ্রয়ী, তবে এর রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় এবং দীর্ঘমেয়াদী নির্ভরতা বাংলাদেশের জন্য আর্থিক চাপ সৃষ্টি করতে পারে। চীনা ঋণের মাধ্যমে এই চুক্তি বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশের উপর চীনের প্রভাব আরও বাড়তে পারে।
চীন-বাংলাদেশ সম্পর্কের গভীরতা
চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের সামরিক সহযোগিতা নতুন নয়। এই সম্ভাব্য চুক্তি দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক আরও গভীর করতে পারে, যা ভারতের জন্য কৌশলগতভাবে উদ্বেগের বিষয়।
প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলী (FAQ)
প্রশ্ন ১: বাংলাদেশ কেন জে-১০সি যুদ্ধবিমান কিনতে চায়?
উত্তর: বাংলাদেশ তাদের পুরনো যুদ্ধবিমান বহরকে আধুনিকায়নের জন্য জে-১০সি যুদ্ধবিমান কিনতে চায়, যা উন্নত প্রযুক্তি ও বহুমুখী কার্যক্ষমতা প্রদান করে।
প্রশ্ন ২: জে-১০সি যুদ্ধবিমানের প্রধান বৈশিষ্ট্য কী?
উত্তর: জে-১০সি উন্নত রাডার সিস্টেম, দীর্ঘ পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র বহনক্ষমতা এবং আধুনিক অ্যাভিওনিক্সসহ একটি মাল্টিরোল যুদ্ধবিমান।
প্রশ্ন ৩: এই চুক্তি ভারতের জন্য কীভাবে প্রভাব ফেলতে পারে?
উত্তর: বাংলাদেশের জে-১০সি সংগ্রহ ভারতের জন্য কৌশলগত চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করতে পারে, কারণ এটি ভারতের সীমান্তে চীনা প্রযুক্তির উপস্থিতি বাড়াবে।
প্রশ্ন ৪: চীন-বাংলাদেশ সামরিক সম্পর্কের বর্তমান অবস্থা কী?
উত্তর: চীন এবং বাংলাদেশের মধ্যে সামরিক সহযোগিতা দীর্ঘদিনের, এবং এই সম্ভাব্য চুক্তি সেই সম্পর্ককে আরও গভীর করতে পারে।














