শ্রেয়া চ্যাটার্জি – বাঙালির খাদ্যতালিকায় কিছুই বাদ যায় না। নানা ধরনের সবজি থেকে শুরু করে সবজির খোসা বীজ সবই তারা রান্নায় নানাভাবে ব্যবহার করে থাকেন। কবির ভাষায় –
পান্তা ভাতে মরিচ পেঁয়াজ
গরম ভাতে ভর্তা
সকাল-বিকাল খেয়ে জবর
ঘুমায় গাঁয়ের কর্তা
বুঝাই যাচ্ছে ভর্তার রেসিপি টা খুব একটা আধুনিক নয়। মরিচ অর্থাৎ লঙ্কা পেঁয়াজ সহযোগে ভর্তা খাওয়ার রেওয়াজটা অনেক আগে থেকেই বাঙালির খাদ্য তালিকা যুক্ত হয়েছিল। তবে ভর্তা যে উপকরণটি ছাড়া অচল সেই মরিচ অর্থাৎ লঙ্কা কিন্তু এনেছিল পর্তুগীজরা। নিরামিষ পদ হিসেবে গরম গরম ভাতের সঙ্গে চলতেই পারে যেকোনো সবজির ভর্তা। আজ আমাদের মেনুতে রয়েছে ‘বরবটির ভর্তা’।
পুষ্টিগুণে ভরপুর বরবটি। কখনো তরকারিতে কখনো বা ভাজা কখনো ভর্তা নানা রূপে একটি খাওয়া যেতে পারে। সারা বছর এই সবজিটি পাওয়া যায়। এতে প্রচুর পরিমাণে রয়েছে ভিটামিন এ ও সি ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন, পটাসিয়াম ইত্যাদি। প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকার জন্য যারা কোষ্ঠকাঠিন্য রোগে ভুগছেন তারা সহজেই বরবটি খেতে পারেন। ক্ষতিকর কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে বরবটি। তাই এই সবজিটি হার্ট অনেকখানি সুরক্ষিত থাকে। বরবটি তে উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়। বরবটিতে আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ‘কে’। যার ফলে অস্টিওআর্থারাইটিস সমস্যায় যারা ভুগছেন তারা খেতেই পারেন বরবটি। চুল পড়া কমাতেও জুড়ি মেলা ভার বরবটির। তবে অনেকেই সবজি খেতে পছন্দ করেন না। একটু অন্য স্বাদের অর্থাৎ বরবটির ভর্তা বানালে নিশ্চিতভাবে গরম ভাতের সঙ্গে চেটেপুটে খাবেন প্রত্যেকে।
উপকরণঃ বরবটি ভালো করে বেটে নেওয়া, পেঁয়াজ কুচি, রসুন কুচি, নুন স্বাদ মতন, ধনেপাতা কুচি, লঙ্কা কুচি, সরষের তেল
প্রণালীঃ কড়াইতে প্রথমে তেল গরম করতে হবে। তেল গরম হলে সেখানে পেঁয়াজ কুচি, রসুন কুচি দিয়ে ভালো করে লাল লাল করে ভাজতে হবে। তারপর বেটে রাখা বরবটি ভালো করে জল ঝরিয়ে কড়াইতে দিতে হবে। খুন্তি দিয়ে নাড়তে নাড়তে একেবারে শুকনো হয়ে আসবে। আস্তে আস্তে ধনেপাতা, কাঁচা লঙ্কা এবং নুন দিয়ে ভালো করে ভাজতে হবে। পাশ দিয়ে তেল বের হলেই বুঝতে পারবেন রান্না প্রায় হয়ে এসেছে। কিছুক্ষণ নাড়াচাড়া করে গরম গরম ভাতের সঙ্গে পরিবেশন করুন ‘বরবটির ভর্তা’।