অল্প আয়, সাদামাটা জীবনযাপন, তবুও কোটি টাকার সঞ্চয়—শুনতে অবিশ্বাস্য লাগলেও বাস্তবে সম্ভব হয়েছে। বেঙ্গালুরুর এক সাধারণ মানুষ দেখিয়ে দিয়েছেন, শৃঙ্খলা ও বোঝাপড়া থাকলে বিলাসিতা ছাড়াই আর্থিক স্বাধীনতা অর্জন করা যায়।
ছোট থেকে বড় যাত্রা
২০০০ সালে, মাত্র ৫০০০ টাকা নিয়ে গ্রাম থেকে বেঙ্গালুরুতে আসেন ওই ব্যক্তি। তখন তাঁর বয়স মাত্র ২৭। প্রথম চাকরিতে মাসিক আয় ছিল মাত্র ৪২০০ টাকা। সেখান থেকেই শুরু হয় সঞ্চয়ের যাত্রা। কোনওদিন ক্রেডিট কার্ড নেননি, কারও কাছ থেকে ঋণ চাননি, এমনকি অপ্রয়োজনীয় খরচও এড়িয়ে গিয়েছেন।
এক কাজ, কিন্তু অটল অধ্যবসায়
জীবনের বেশিরভাগ সময় প্রুফরিডার হিসেবে কাজ করেছেন তিনি। বেতনের পরিমাণ ধীরে ধীরে বেড়ে ৬৩,০০০ টাকায় পৌঁছায়, কিন্তু জীবনযাত্রায় কখনও বাড়তি খরচ ঢোকাতে দেননি। প্রয়োজনীয় খরচ বাদ দিয়ে বাকিটা নিয়মিত সঞ্চয় করেছেন। ফলস্বরূপ, আজ তাঁর ব্যাংকে ১.০১ কোটি টাকা জমা আছে। পাশাপাশি শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করেছেন প্রায় ৬৫,০০০ টাকা। সবচেয়ে বড় সাফল্য—এক টাকাও ঋণ নেই তাঁর নামে।
চাকরি ছেড়ে দিয়েও স্থায়ী আয়
দৃষ্টিশক্তি কমে যাওয়ায় কোভিডের কিছু আগে চাকরি ছাড়েন তিনি। তবে এরই মধ্যে স্থায়ী আমানতে গড়ে তোলা সঞ্চয়ই আজ তাঁর প্রধান ভরসা। শুধু সুদ থেকেই প্রতি মাসে প্রায় ৬০,০০০ টাকা আয় করেন তিনি। পরিবারের মাসিক খরচ গড়ে ২৫,০০০ টাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ। এর মধ্যে ৬৫০০ টাকা ভাড়াও অন্তর্ভুক্ত।
সরল জীবন, শান্ত মন
তাঁর জীবনযাত্রা যতই সাদামাটা হোক, সন্তুষ্টি রয়েছে অফুরন্ত। বেঙ্গালুরুর উপকণ্ঠে একটি ছোট 1BHK ফ্ল্যাটে থাকেন তিনি। বাড়িওয়ালাদের সঙ্গে সবসময় সুসম্পর্ক বজায় রেখেছেন, কখনও ভাড়ায় দেরি করেননি। গাড়ি না কিনে হেঁটে চলাকেই বেছে নিয়েছেন তিনি। পরিবার খুব কমই চিকিৎসকের কাছে যায়, কারণ শুরু থেকেই স্বাস্থ্যকর অভ্যাস ও নিয়মিত জীবনযাপন মেনে চলেন সকলে।
অনুপ্রেরণা বহু মানুষের জন্য
তাঁর গল্প প্রমাণ করে দেয়—জীবনে আর্থিক স্বাধীনতা পেতে লাখ লাখ টাকার বেতন প্রয়োজন নেই। প্রয়োজন সঠিক পরিকল্পনা, শৃঙ্খলা, স্বাস্থ্যকর অভ্যাস এবং আত্মনিয়ন্ত্রণ। সাধারণ প্রুফরিডারের চাকরি করেও যে ১ কোটি টাকার বেশি সঞ্চয় সম্ভব, বেঙ্গালুরুর এই মানুষটি তার জীবন্ত প্রমাণ।














