আমরা বাঙালিরা বরাবরই উৎসব প্রিয়, তাই কথায় বলে আমাদের নাকি “বারো মাসে তেরো পার্বন”! এই মন ছুঁয়ে যাওয়া উৎসব গুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ভাইফোঁটা বা ভ্রাতৃদ্বিতীয়া। ভ্রাতা ও ভগিনীর মাঝে আরেকবার সম্পর্ক সুদৃঢ় করার এক একনিষ্ঠ প্রয়াস, রাখি বন্ধন উৎসবের পরে।
বলাবাহুল্য যে প্রতিটি উৎসবের পেছনে রয়েছে এক কাহিনী। এক্ষেত্রেও ব্যতিক্রম নয়। পুরাণ বলে এই দিন স্বয়ং যমরাজ তাঁর ভগিনীর গৃহে গিয়েছিলেন। ভগিনী যমুনা তাঁর ভ্রাতা কে কপালে তিলক কেটে সেদিন স্বাগত জানিয়ে ছিলেন তাঁর গৃহে এবং ভ্রাতা যমরাজ তাঁকে আশীর্বাদ করেছিলেন। প্রসঙ্গত বলি এরা দুজনেই সূর্যদেবের সন্তান। অন্যদিকে আরেকটি কাহিনী হচ্ছে যে একবার ভগবান শ্রীকৃষ্ণ নরকাসুরকে পরাভূত করবার পর, তাঁর ভগিনী সুভদ্রার গৃহে গিয়েছিলেন, সুভদ্রা তাঁকে স্বাগত জানিয়ে, কপালে তিলক কেটে ভ্রাতৃদ্বিতীয়ার এই রীতিকে আরম্ভ করেন। এর পর থেকেই প্রতিপদ ও দ্বিতীয়া তিথিতে এই উৎসব খুব সমারোহে পালন করা হয়ে থাকে।
এই দিন বোনেরা উপোষ থেকে, ভাইদের দীর্ঘায়ু কামনা করে কপালে তিলক পরিয়ে দেন, অনামিকা আঙ্গুলের দ্বারা। মিষ্টি ও আশীর্বাদের পালা চুকলেই, দ্বিপ্রহরে ভুঁড়ি ভোজের আয়োজন, সাথে প্রচুর আনন্দ, উপহার ও শুভ কামনার এক নিরন্তর ধারা প্রবাহিত হতে থাকে!
ভাইফোঁটার এই ছোট্ট পারিবারিক অনুষ্ঠান বন্ধন কে আরো দৃঢ় করে তোলে। সাথে চিরকাল পাশে থাকার এক প্রতিশ্রুতি ও বহন করে, নিঃসন্দেহে। তাই এই শুভ ক্ষনে আরেকবার নয় এক সাথে, একই ছাদের নীচে, এক অনাবিল আনন্দ ধারার প্রতি বিন্দুকে পান করে নিজেদের তৃপ্ত করি!! “শুভ ভাইফোঁটা”
– কুণাল রায়
সহ অধ্যাপক, ইংরেজী বিভাগ,
জর্জ কলেজ ,কলকাতা।