উত্তরাখণ্ডের জোশিমঠের মানুষের জন্য নতুন বছর শুরু হওয়াটা খুব একটা ভালো হয়নি। তারা আজকাল দিন কাটাচ্ছে আতঙ্কে। প্রত্যেকের মনে একটাই আশঙ্কা যে কবে তাদের পাহাড়ে ঘেরা জোশিমঠ হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়বে। আর উত্তরাখণ্ড সহ গোটা দেশের মানুষ এই ব্যাপার নিয়ে উদ্বিগ্ন। প্রতিমুহূর্তেই সোশ্যাল মিডিয়া সাইটে ভূমিধসের ভয়াবহ ছবি সামনে আসছে এবং বাড়িতে বাড়িতে বিশাল ফাটলের ছবি দেখে হাড়হিম হয়ে যেতে পারে আপনার। এই বিষয় নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন হিমালয় ভূতত্ত্ব গবেষক অধ্যাপক যশপাল সুন্দরীয়াল। কি বলেছেন তিনি? ব্যাপারটা কি সত্যিই ভয়াবহ? জানতে এই প্রতিবেদনটি অবশ্যই সম্পূর্ণ পড়ুন।
আপনাদের জানিয়ে রাখি উত্তরাখণ্ডের জোশিমঠে রাস্তা এবং বাড়িতে ফাটল দেখা গিয়েছে। যে কোন জায়গায় মাটি ফেটে যাচ্ছে এবং এখনো পর্যন্ত প্রায় ৬০৩ টি বাড়িতে ফাটল দেখা গিয়েছে। স্বভাবতই এই পাহাড়ি শহরের বাসিন্দারা আতঙ্কের সাথে দিন কাটাচ্ছেন। এই প্রসঙ্গে অধ্যাপক যশপাল বলেছেন, “পাহাড়ের অধিকাংশ গ্রাম ও শহর ভূমিধসের ধ্বংসাবশেষের ঢালের ওপর নির্মিত। এই জোশিমঠের ভূপৃষ্ঠে পাথর কম রয়েছে এবং মাটির পরিমাণ বেশি। আর এর পাশাপাশি দুর্বল জল ব্যবস্থাপনা এই অঞ্চলের ভিত্তি দুর্বল করে দিয়েছে। এমন অবস্থায় বিভিন্ন উন্নয়নের কাজ সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। সাম্প্রতিক ঘটনা মাথায় রেখে খুব তাড়াতাড়ি সরকারকে জেগে উঠতে হবে এবং অ্যাকশন প্ল্যান বানিয়ে মোকাবিলা করতে হবে।”
অধ্যাপক যশপাল আরও জানিয়েছেন, “এনটিপিসির বিষ্ণু গরুর প্রকল্পের টানেলের বিস্ফোরণ এতটাই শক্তিশালী ছিল যে তা যোশীমঠে কৃত্রিম ভূমিকম্প সৃষ্টি করেছে। ফলে ঢালে অবস্থিত শহরের ভিত ভেঙে গিয়েছে।” এছাড়া এখানে এত উচ্চ ভবন কি করে অনুমতি পেল সেই প্রশ্নও তুলেছেন তিনি। তবে দুর্যোগ সচিব ডঃ রঞ্জিত সিনহা জসীমঠ এর বাড়িতে ফাটল প্রসঙ্গে টানেল নির্মানের যোগাযোগ নিয়ে অস্বীকার করেছেন। এখনো পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো প্রমাণ সামনে আসেনি বলেই জানিয়েছেন তিনি। তবে তিনি অধ্যাপকের সাথে সম্মত হয়ে বলেছেন যে জোশিমঠ সূক্ষ্ম পৃষ্ঠে অবস্থিত শহর এবং এর নিষ্কাশন সমাধান খুব তাড়াতাড়ি করা উচিত। এছাড়াও তিনি জানিয়েছেন যে সরকারের সবচেয়ে বড় কাজ ও মিশন হল মানুষকে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়া।