বলিউডবিনোদন

সুশান্ত মৃত্যুরহস্যে নতুন মোড়, দির্ঘদীন পর গ্রেফতার হলেন বলিউডের এই নামী পরিচালক

Advertisement

অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুত (sushant singh Rajput)-এর মৃত্যুরহস্য ক্রমশ দানা বাঁধছে। এবার নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব‍্যুরো বা এনসিবির জালে ধরা পড়লেন বলিউডের নামী সহকারী পরিচালক হৃষিকেশ পাওয়ার (Hrishikesh power)। 2 রা ফেব্রুয়ারি সকালে এনসিবির তদন্তকারী অফিসাররা হৃষিকেশকে আটক করেন। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করার পর সন্ধ্যায় গ্রেফতার করা হয়। এনসিবি সূত্রে জানা গেছে, হৃষিকেশ সুশান্তের বন্ধু ছিলেন। হৃষিকেশের বাড়িতে একাধিক ইলেকট্রনিক গ‍্যাজেট পাওয়া গেছে যেগুলিতে রয়েছে সন্দেহজনক তথ্য। হৃষিকেশের মোবাইল ফোন ও পাসপোর্ট বাজেয়াপ্ত করেছে এনসিবি।

কিছুদিন আগে সুশান্তের দিদি শ্বেতা (sweta singh kirti) সুশান্তের নিজের হাতে লেখা একটি চিঠি শেয়ার করেছিলেন ইন্সটাগ্রামে। সুশান্তের এই চিঠিটি নিজেকে উদ্দেশ্য করে লেখা একটি চিঠি। চিঠিতে নিজের উদ্দেশ্যে মুক্তাক্ষরে সুশান্ত লিখেছেন, তাঁর তিরিশ বছরের জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত কিছু হয়ে ওঠার জন্য ব্যয় করেছিলেন তিনি। তিনি জানিয়েছেন, টেনিস ও স্কুলের রেজাল্ট তিনি বরাবর ভালো করতে চাইতেন।

কিন্তু চিঠির কয়েকটি লাইন প্রশ্ন জাগাচ্ছে সুশান্ত-অনুরাগীদের মধ্যে। সুশান্ত লিখেছেন, তাঁর বর্তমান অবস্থান ঠিক নেই। তিনি লিখেছেন, তাঁর খেলাটা ভুল ছিল। আসলে তিনি বুঝতে পারেননি, নিজেকে খোঁজাটা ছিল আসল খেলা। সুশান্তের চিঠির এই কয়েকটি লাইন থেকে মনে হচ্ছে, তিনি কোনো জালে জড়িয়ে পড়েছিলেন। যদি তিনি সত্যিই আত্মঘাতী হয়ে থাকেন তাহলে তা জাল থেকে বেরোনোর উপায় না দেখেই তিনি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। এমনও হতে পারে, যদি সুশান্ত সত্যিই আত্মঘাতী হয়ে থাকেন, তাহলে তাঁকে হয়তো বাধ‍্য হয়ে এই কাজ করতে হয়েছে। বিভিন্ন মহিলাদের সঙ্গে বিভিন্ন সময় সম্পর্কে জড়িয়েছেন সুশান্ত। কিন্তু বলিউডের রাজনীতি ও চোরাগোপ্তা মাদকচক্রের সঙ্গে তিনি যে এভাবে জড়িয়ে যাবেন, তা তিনি ভাবতেও পারেননি। তিনি যদি আত্মহত্যা না করতেন, তাহলে হয়তো আরো খারাপ পরিণতি অপেক্ষা করছিল তাঁর জন্য। ধীরে ধীরে উন্মোচিত হবে সুশান্তের মৃত্যু রহস্য। সুশান্তের মৃত্যু আত্মহত্যা হয়ে থাকলেও অনায়াসেই বোঝা যাচ্ছে তার পিছনে রয়েছে গূঢ় কারণ। শ্বেতা তাঁর ভাইয়ের চিঠিটি ইন্সটাগ্রামে পোস্ট করে ক্যাপশন দিয়ে লিখেছেন, সুশান্ত অত্যন্ত গভীরতা নিয়ে ভাবতেন ।

গত বছর 14 ই জুন মৃত্যু হয়েছে অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুতের। কুপার হসপিটালে তাঁর প্রাথমিক পোস্টমর্টেম রিপোর্টে আত্নহত‍্যার তত্ত্ব উঠে এলেও তাঁর পরিবার মানতে পারেননি। সুশান্তের পরিবারের দাবিতে এবং বিজেপির রাজনৈতিক চাপের মুখে পড়ে মুম্বই পুলিশ সুশান্তের মৃত্যুর তদন্তভার সমর্পণ করে সিবিআই-কে। সুশান্তের পোস্টমর্টেমের দায়িত্ব দেওয়া হয় দিল্লীর এইমস-কে। কিন্তু কয়েক মাস আগে এইমস ও সিবিআই-এর তরফে জানানো হয়, সুশান্তের দ্বিতীয় পোস্টমর্টেম রিপোর্টেও দেখা যাচ্ছে, সুশান্ত আত্মঘাতী হয়েছেন। কিন্তু সুশান্তের পরিবার ও ঘনিষ্ঠ বন্ধুরা জানান, সুশান্তের পোস্টমর্টেম রিপোর্টকে প্রভাবিত করা হচ্ছে।

সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুরহস্যের হাত ধরেই উন্মোচিত হয় বলিউডের চোরাগোপ্তা মাদকচক্র। নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরো বা এনসিবি গ্রেফতার করে সুশান্তের প্রেমিকা রিয়া চক্রবর্তী (Reha Chakraborty)ও তাঁর ভাই সৌভিক চক্রবর্তী (souvik Chakraborty)- কে। 28 দিন জেলে কাটানোর পর রিয়া আপাতত জামিনে মুক্ত হলেও তাঁকে প্রতিদিন থানায় হাজিরা দিতে আদেশ দিয়েছে আদালত। আদালত জানিয়েছে, রিয়া মুম্বইয়ের বাইরে কোথাও যেতে পারবেন না। কিছুদিন আগে জামিনে ছাড়া পেয়েছেন রিয়ার ভাই সৌভিকও। এছাড়াও বলিউডের রথী-মহারথীদের জেরা করা হচ্ছে। নজরে রয়েছেন করণ জোহর (karan johar)ও মহেশ ভাট(Mahesh Bhatt)-এর মত সেলিব্রিটি। সারা আলি খান (sara ali khan) ও শ্রদ্ধা কাপুর(sradhdha Kapoor)-এর মোবাইল ফোন বাজেয়াপ্ত করেছে এনসিবি। জেরা করা হচ্ছে অর্জুন রামপাল (Arjun Rampal) ও তাঁর বান্ধবীকে।

অপরদিকে সিবিআই অফিসার নুপুর প্রসাদ (Nupur prasad)-এর একটি চিঠি টুইটারে পোস্ট করেছেন বিজেপি নেতা ও রাজ্যসভার সাংসদ সুব্রহ্মণ্যম স্বামী (subbrambhanyam swami)। চিঠিতে নুপুর প্রসাদ জানিয়েছেন, সিবিআই বৈজ্ঞানিক কৌশল ও উন্নত মানের ফরেন্সিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে নিখুঁত ও পেশাদারিত্ব-এর সঙ্গে তদন্ত চালাচ্ছে। তদন্ত এখনও সম্পূর্ণ হয়নি। এই কারণে সিবিআই কোনো সম্ভাবনাকে খারিজ করছে না।

এদিকে সুশান্তের দিদি শ্বেতা সিং কীর্তি এবং প্রাক্তন প্রেমিকা অঙ্কিতা লোখান্ডে(Ankita lokhande)সোশ্যাল মিডিয়ায় নতুন করে ‘জাস্টিস ফর সুশান্ত সিং রাজপুত’ ক‍্যাম্পেন শুরু করেছেন। সুশান্তের পরিবার ও অনুরাগীরা সুশান্তের স্মৃতিকে বাঁচিয়ে রাখতে বিভিন্ন প্রচেষ্টা করে চলেছেন। আপাতত ভারতবর্ষ অপেক্ষায় রয়েছে তার ভূমিপুত্র সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুরহস্য উদঘাটনের।

Related Articles

Back to top button