সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে একটি ভিডিও। ভিডিওয় দেখা যাচ্ছে চুল কাটার বিরুদ্ধে একরত্তি পুঁচকে-র ছোট্ট প্রতিবাদ, ‘’আরে, কেয়া কর রহে হো’’। সে তার হেয়ারস্টাইল বদল করতে নারাজ। বেচারা নাপিতও পারেন না তাকে ধরে রাখতে। অবশেষে নাপিত প্রয়োগ করলেন তাঁর ‘ট্রিকস’। তিনি বাচ্চাটিকে বাবার নাম, কাকার নাম এবং আরো অনেক প্রশ্ন করে ভুলিয়ে রেখে সবে মাত্র অর্ধেক চুল কেটেছেন, খুদে বেজায় চিৎকার করে বলে উঠল, “আরে, কেয়া কর রহে হো”। এই ভিডিও দেখে হাসিতে ফেটে পড়েছেন নেটিজেনরা। খুদে অবশ্য জানতে পারেনি, এই প্যান্ডেমিক পরিস্থিতিতে সে অনেকের মুখে হাসি ফুটিয়ে তুলেছে।
একরত্তির এই ভিডিও দেখে আপামর নেটিজেনরা ভেসে গেছেন নস্টালজিয়ায়। শৈশবে রবিবারের সকাল মানেই ছিল চুল কাটার দিন। বাড়িতে বাবাদের দায়িত্ব ছিল, দুই সপ্তাহ আগে কাটা চুল কয় ইঞ্চি বেড়েছে তা মেপে দেখা। যথারীতি তারপরেই কারোর বাড়িতে ডাক পড়ত নাপিতকাকুর, কাউকে আবার টানতে টানতে নিয়ে যাওয়া হতো পাড়ার সেলুনে। সেখানে ‘চুল কাটবো না’ বলেও লাভ হতো না। নাপিতকাকু চেয়ারের উপর একটি কাঠের পাটাতন দিয়ে বসিয়ে দিতেন, হাতে ধরিয়ে দিতেন ‘চাচা চৌধুরী’ কমিকস। ‘চাচা চৌধুরী’ এবং তার শাগরেদ সাবুর কাণ্ডকারখানা পড়তে পড়তে কখন যে নাপিতকাকুর কাঁচির কারসাজিতে চুলের ভোলবদল হতো তা টের পাওয়া যেত না। এরপর বাড়ি নিয়ে এসেই বেচারা খুদের দল গচ্ছিত হয়ে যেত তাদের মায়েদের ডিপার্টমেন্টে।
এরপর বাথরুমে বা কলতলায় শুরু হত মা এবং খুদের কুরুক্ষেত্র। সর্বজনবিদিত ক্লিনিক প্লাস শ্যাম্পুর পাতা ছিল বরাদ্দ। মা জোর করে শ্যাম্পু মাখাতেন চুলে এবং তার সাথে চলত খুদের কান্না “আমার চোখ জ্বালা করছে, শ্যাম্পু করব না”। মা-কে তখন মনে হত পৃথিবীর সবচেয়ে নিষ্ঠুর সৎ মা। এরপর হিঁচড়ে হিঁচড়ে চুলের জট ছাড়িয়ে সিঁথি কেটে চুল আঁচড়ে মা যখন ছেড়ে দিতেন, তখন মনে হতো “আমাকে মনে হয় কুড়িয়ে পেয়েছে, এত বাজে বাবা-মা কারোর নেই”। পরে অবশ্য কিছুটা হলেও দুঃখ ভুলতে সাহায্য করতে মায়ের হাতের রান্না করা সুস্বাদু গরম মাংস ভাত। এবার খুদের এই ভিডিও দেখে নেটিজেনদের আরো একবার বলতে ইচ্ছা করছে “মুছে যাওয়া দিনগুলি আমায় যে পিছু ডাকে”।