শ্রেয়া চ্যাটার্জি : মানুষ একদিন নিজের প্রয়োজনেই প্লাস্টিক তৈরি করেছিল, প্লাস্টিক কে বন্ধু বলে মনেও করেছিল। কিন্তু এখন সেই প্লাস্টিক আমাদের চরম শত্রুতে রুপান্তরিত হয়েছে। ব্যবহার করতে করতে এতোটাই জড়িয়ে পড়েছে, মানুষ হাজার চেষ্টা করলেও এখন কিছুতেই প্লাস্টিকের ব্যবহারের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না। পৃথিবীতে যে পরিমাণ প্লাস্টিক এখনো পর্যন্ত জমা আছে সেই পরিমাণ প্লাস্টিক কে নিয়ে ঠিক কী করবে সেটাই মানুষ বুঝে উঠতে পারছে না? তাই উদ্বৃত্ত প্লাস্টিক যাতে পুনর্ব্যবহার করে মানুষের উপকারে লাগে, এমন অনেকভাবে কাজে লাগানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।
এমনই একটি ভালো কাজে এগিয়ে এসেছে ব্যাংককের একটি বুদ্ধমন্দির। প্লাস্টিকের জলের বোতল এবং সামগ্রীকে তারা বিভিন্ন উপায়ে পলিয়েস্টার সুতোয় পরিণত করে সেই সুতো থেকে বানাচ্ছে প্লাস্টিকের সুন্দর সুন্দর পোশাক। এই মন্দিরের একটি অদ্ভুত নিয়ম আছে, সেটা হল এই মন্দিরের দর্শনার্থীদের থেকে শুধু প্লাস্টিকের বোতল সংগ্রহ করা হয়। এই মন্দিরে প্রায় গত দু বছরে ৪০ টনেরও বেশি প্লাস্টিক বোতল জমা পড়ে। ইতিমধ্যেই সেই প্লাস্টিক থেকে আপাতত ৮০০ টির মতো পোশাক তৈরি করা হয়েছে।
মন্দির থেকে এমনিতেই খাদ্যসামগ্রী, জামাকাপড় দান করা হয়। এই পোশাকগুলো দান হিসাবেই ব্যবহার করা হচ্ছে। শুধু সেই শহরেই নয়, তার আশেপাশের শহর-গ্রাম থেকেও বোতল সংগ্রহ করে আনা হচ্ছে। তাদের এই অভিনব উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাতেই হয়। এতে অনেক দরিদ্র মানুষ পোশাক পেয়ে উপকৃত হচ্ছেন এবং উদ্বৃত্ত প্লাস্টিক গুলোর একটা পুনর্ব্যবহার এর পথ তৈরি হচ্ছে, যা সত্যিই বেশ একটা অভিনব।
একসময় যে জিনিসটিকে আমরা তৈরি করেছিলাম আমাদের উন্নতির জন্য, সেই জিনিসটি যে এইভাবে আমাদের উন্নতির পথে এবং সর্বোপরি বেঁচে থাকার পথকে এমন কন্টক সম করে তুলবে তা বোধহয় আমরা কেউই ভাবতে পারিনি। তাই এখনই এখনই প্লাস্টিক মুক্ত পৃথিবী পাওয়া আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। কিন্তু প্লাস্টিকের পুনর্ব্যবহার করে যাতে পৃথিবীর ভালো হয়, সেই দিকটা বোধহয় আমরা সকলেই ভাবতে পারি।