শুভেন্দু-মুকুলকে কেন গ্রেফতার করা হল না, মুখ খুললেন CBI
নারদা কান্ডের তদন্তের জন্য ইতিমধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে ৪ জন নেতাকে। এদের মধ্যে রয়েছেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিম এবং মদন মিত্র। তার সাথে রয়েছেন প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। এই তালিকায় বর্তমানে দুইজন নবনির্বাচিত সরকারের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী। অথচ একই অভিযোগে অভিযুক্ত হওয়া সত্ত্বেও এখনো পর্যন্ত কোনরকম পদক্ষেপ গ্রহণ করা হলোনা রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং কৃষ্ণনগর উত্তর আসনের বিধায়ক মুকুল রায়কে।
কিন্তু এই দুইজনকে কেন গ্রেফতার করা হলো না এই প্রসঙ্গে প্রশ্ন তুলেছেন তৃণমূল কংগ্রেস নেতারা। তার পাশাপাশি অভিযোগ উঠেছে রাজ্যপালের অতি সক্রিয়তা নিয়ে। তৃণমূল নেতা সৌগত রায় এবং কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেছেন রাজ্যপাল বিজেপির হয়ে কাজ করছেন এবং ব্যাপারটি সম্পূর্ণরূপে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। কিন্তু সিবিআই আবার দাবি করেছে, যে মুহুর্তে নারদা কান্ডের সমস্ত অভিযোগ উঠেছিল তখন সাংসদ ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী এবং মুকুল রায়। তারা দুজনে লোকসভা এবং রাজ্যসভার সাংসদ ছিলেন বলে জানিয়েছেন তারা। তাই তাদের যুক্তি, শুভেন্দু অধিকারী এবং মুকুল রায় কে গ্রেপ্তার করার জন্য লোকসভার অধ্যক্ষ এবং রাজ্যসভার চেয়ারম্যান এর অনুমতি প্রয়োজন লাগবে।
কিন্তু ওই দুই অনুমতি এখনো পর্যন্ত মেলেনি বলে জানিয়েছে সিবিআই কর্তৃপক্ষ। তবে রাজ্যের যে নেতাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে এখনও পর্যন্ত গ্রেফতারী পরোয়ানা জারী হয়নি।তাই এই অনুমোদন বেআইনি বলে দাবি করেছেন রাজ্যের বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে যখন বিধানসভা নির্বাচনের আগে নারোদা স্টিং অপারেশন ভিডিও ভাইরাল হতে শুরু করে তখন বিতরকের মুখে পড়েছিলেন বেশকিছু তৃণমূল নেতা। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী, মুকুল রায়, ফিরহাদ হাকিম, সহ আরো অনেকে। ২০১৪ সালে এই স্টিং অপারেশন চালানো হয়েছিল। তৎকালীন আইপিএস অফিসার এইচএমএস মির্জাকে গ্রেফতার করেছিল সিবিআই।
এরপর মুকুল রায়, শোভন চট্টোপাধ্যায় এবং শুভেন্দু অধিকারী বিজেপিতে যোগদান করেন। নারোদা মামলা অনেকটা ঠান্ডা হয়ে যায়। কিন্তু সম্প্রতি আবারও মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে নারোদা স্টিং অপারেশন মামলা। গ্রেফতার করা হয়েছে রাজ্যের দুই মন্ত্রী, এক বিধায়ক এবং একজন প্রাক্তন বিধায়ক কে যিনি সম্প্রতি বিজেপি ত্যাগ করেছেন। উঠে আসছে রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করার তত্ত্ব।
শুভেন্দু অধিকারী এবং মুকুল রায়ের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। আজকেই আদালতে সিবিআই নারদ কান্ডে প্রথম চার্জশিট জমা দিতে চলেছে বলে খবর। নন্দীগ্রামে জয় লাভ করা শুভেন্দু অধিকারী বর্তমানে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। অন্যদিকে কৃষ্ণনগর উত্তর আসন থেকে জয়লাভ করেছিলেন মুকুল রায়। দুজনে এখন বিজেপির বিধায়ক। তাহলে কি বিজেপিতে যোগদান করা মানেই সমস্ত মামলায় ক্লিনচিট পেয়ে যাওয়া? যদিও সিবিআই জানাচ্ছে, তারা একেবারে নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করছে এবং শুভেন্দু অধিকারী এবং মুকুল রায় কেউ জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে সিবিআই সূত্রের খবর। যদিও রাজ্যের সব মহল থেকেই সিবিআই এর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠা শুরু হয়েছে।