সিঙ্গাপুর ইন্দোনেশিয়া এবং মালয়েশিয়ার মতো দেশে দ্রুতহারে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে। ইতি মধ্যেই এই সমস্ত দেশে করোনা বিধি নিষে জারি হয়ে গিয়েছে। আর তার মধ্যেই এবারে ভারতের সামনে এসে পড়েছে একটা বড় বিপদ। নাম করোনাভাইরাসের নতুন ভেরিয়েন্ট JN 1। কেরালাতে এই সংক্রমণ দ্রুত হারে বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে। ইতিমধ্যেই এই করোনায় মৃত্যু হয়েছে দুইজনের। এবার রাজ্যে গত ২৪ ঘন্টায় কেরালায় করোনা আক্রান্ত হলেন ১১৫ জন। এই নিয়ে কেরালায় একদিন করোনাক্রান্ত ১৭৪৯ জন।
ইতিমধ্যেই ভারত সরকারের বিভিন্ন ল্যাবরেটরির তরফ থেকে এই ভাইরাস নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের ল্যাবরেটরি ফোরাম INSACOG ইতিমধ্যেই এই করোনাভাইরাসের সাব পপুলেশনে ১৯টি নতুন সিকোয়েস্ট খুঁজে পেয়েছে। এর মধ্যে ১৯ টি পাওয়া গেছে শুধুমাত্র মহারাষ্ট্র এবং গোয়া থেকে। আরেকটি পাওয়া গিয়েছে কেরালা থেকে। এই নতুন সাব পপুলেশনের নাম দেওয়া হয়েছে পিরোলা। এই ভাইরাসটি হলো আদতে JN.1 করোনার BA.2.86 ভেরিয়েন্টের একটি পপুলেশন।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী এখনো পর্যন্ত দেশে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ১৪২ জন। তার মধ্যে ১১৫ জন রয়েছেন কেরালায়। কেরালা থেকে দ্রুত হারে এবারে এই করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে মহারাষ্ট্র এবং গোয়াতে। গত ২৪ ঘন্টায় যতজন করোনা রোগী করোনা মুক্ত হয়েছেন তার সংখ্যা হল ১১২ জন। দেশে ধীরে ধীরে মাথাচাড়া দিচ্ছে করোনাভাইরাসের এই নতুন প্রজাতি। পরিস্থিতি বিচার করে রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল গুলিকে একটি নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে। জানানো হয়েছে এবার RTPCR পরীক্ষার সংখ্যা বৃদ্ধি করতে হবে প্রত্যেকটি জায়গায়।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই নতুন সাব ভেরিয়েন্ট কিন্তু অন্যান্য গুলির থেকে অনেক বেশি মিউটেশন নিয়ে আসছে এবং এই ভাইরাস অনেক বেশি তাড়াতাড়ি ছড়িয়ে পড়তে পারে। এর আগে পর্যন্ত যে কয়টি করোনাভাইরাস পপুলেশন এসেছে তাতে স্পাইক প্রোটিন মিউটেশনের ভূমিকা এতটা বেশি ছিল না। কিন্তু এই নতুন ভেরিয়েন্টে অনেক বেশি মিউটেশন হচ্ছে। যেহেতু মিউটেশনের পরিমাণ এতটা বেশি তাই ভ্যাকসিন কতটা ভালোভাবে কাজ করবে এর বিরুদ্ধে তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। এই স্পাইক প্রোটিন মানব কোষের রিসেপটারকে আরো ভালোভাবে আকৃষ্ট করতে পারছে এবং যেকোনো কোষের ভিতরে ভাইরাসকে আরো ভালোভাবে প্রবেশ করতে সহায়তা করছে। তবে, যেহেতু এই ভাইরাসের মিউটেশন বেশি হচ্ছে তাই সংক্রমনের সম্ভাবনা বেশি থাকলেও রোগের মাত্রা কিছুটা কম হবে। প্রথমদিকে যে সমস্ত ভেরিয়েন্ট এসেছিল তার তুলনায় অনেক কম থাকবে মৃত্যুহার। কিছু কিছু ক্ষেত্রে আপনারা ইনফ্লুয়েঞ্জার মত উপসর্গ লক্ষ্য করতে পারেন। এই নিয়ে এখনই আতঙ্কিত হবার কিছু নেই বলেই আশ্বস্ত করছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী।