প্রতিদিন লাখো অর্ডার ভেসে আসে অনলাইন মার্কেটপ্লেসে। দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে পৌঁছে যায় অসংখ্য পণ্য। কিন্তু এর পিছনে যে ডেলিভারি নেটওয়ার্ক কাজ করে, তা কতটা লাভজনক? সাম্প্রতিক বছরগুলিতে দেখা যাচ্ছে, সঠিক মডেল মেনে কুরিয়ার ও লজিস্টিক কোম্পানিগুলি এই ডিজিটাল ইকোনমিতে স্থায়ী আয়ের পথ তৈরি করে ফেলেছে। রাঁচির এক স্টার্টআপ উদ্যোক্তা অতুল জানিয়েছেন, উৎপাদন খরচ না থাকায় লজিস্টিকস সেক্টর বর্তমানে বিনিয়োগকারীদের কাছে অত্যন্ত লাভজনক হয়ে উঠেছে। মাত্র ২ লক্ষ থেকে ৫ লক্ষ টাকার মধ্যে কেউ চাইলে নিজের কুরিয়ার ব্যবসা শুরু করতে পারেন। ফ্র্যাঞ্চাইজি মডেল এই যাত্রাকে আরও সহজ করে তুলেছে। উদাহরণস্বরূপ, জাস্ট ডেলিভারি কর্পোরেশনের ফ্র্যাঞ্চাইজি হতে চাইলে আপনার প্রয়োজন হবে প্রায় ২০০ থেকে ২৫০ বর্গফুট জায়গা এবং ১ লক্ষ টাকার ফ্র্যাঞ্চাইজি ফি-সহ মোট ২-৫ লক্ষ টাকার বিনিয়োগ।
এই ব্যবসায় রয়্যালটি বা কমিশনও প্রযোজ্য। কোম্পানি আপনার পরিচালন খরচ অনুযায়ী প্রায় ১০% কেটে নেয়। বাকি আয়ের হিসাব মাসের ২০ তারিখে আপনার অ্যাকাউন্টে জমা করা হয়। এর মানে, আপনার আয় সরাসরি নির্ভর করবে ডেলিভারির সংখ্যার উপর। কাজ শুরু করতে প্রয়োজন হবে এক বা দুটি কম্পিউটার অথবা ল্যাপটপ। সঙ্গে থাকবে কোম্পানির বিশেষ সফ্টওয়্যার, যা রিয়েল টাইমে লজিস্টিক কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ ও ব্যবসা পরিচালনা সহজ করে দেবে। প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও থাকে, যাতে নতুন উদ্যোক্তারা কার্যপ্রণালী দ্রুত বুঝতে পারেন। অনবোর্ডিংয়ের সময় কোম্পানিই প্রথম ২০টি পার্সেল ডেলিভারি করে দেয়, যাতে সিস্টেমের প্রক্রিয়া পরিষ্কার বোঝা যায়।
চার্জের কাঠামোও বেশ স্পষ্ট। ১০ গ্রাম থেকে ১ কেজি ওজনের সাধারণ শিপমেন্টের জন্য প্রতি প্যাকেটে প্রায় ৬ টাকা নেওয়া হয়। আবার ই-কমার্স পার্সেলের জন্য প্রতি কেজি হারে প্রায় ৩০ টাকা চার্জ করা হয়। ফলে, ওজন ও আকার যত বাড়বে, আয়ও তত বাড়বে। অভিজ্ঞদের মতে, নিয়মিত চাহিদা থাকলে মাসে গড়ে ৪০ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা আয় সম্ভব। যারা উৎপাদনের ঝামেলা ছাড়াই ব্যবসায় নামতে চান, তাদের জন্য কুরিয়ার ও লজিস্টিকস হতে পারে এক কার্যকরী বিকল্প।














