উত্তরবঙ্গের আলিপুরদুয়ার এর সাংসদ জণ বারলা এবং বিষ্ণুপুরের সাংসদ সৌমিত্র খাঁ এর বঙ্গভঙ্গের দাবি নিয়ে এবারে মুখ খুললেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি তথা সাংসদ দিলীপ ঘোষ। ভোট পরবর্তী পরিস্থিতি দেখতে বীরভূম জেলায় এসেছিলেন দিলীপ ঘোষ। সেখানে এসে তিনি সরাসরি দলত্যাগী মুকুল রায় কে নিশানা করেছেন। দিলীপ ঘোষ বলেছেন, ” উনি চলে যাবার পরে বিজেপি রাহুমুক্ত হয়েছে।” এছাড়াও বঙ্গভঙ্গের দাবি তিনি সম্পূর্ণরূপে খারিজও করেছেন।
ভোট-পরবর্তী হিংসায় রাজ্যজুড়ে ঘরছাড়া বিজেপি কর্মীদের তালিকা তুলে ধরেছেন দিলীপ ঘোষ। তার পাশাপাশি করোনা ভাইরাসের টিকা নিয়ে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে রাজনীতি করার অভিযোগ তুলেছেন দিলীপ। দীলিপবাবু বলেছেন, ” পশ্চিমবঙ্গের জন্য প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদি ১০ লক্ষ টিকা বরাদ্দ করেছেন। কিন্তু এ রাজ্য সরকার এই নিয়ে রাজনীতি করছে।”
অন্যদিকে বিজেপি সংসদ জন এবং সৌমিত্রের উত্তরবঙ্গ এবং জঙ্গলমহল রাজ্যের দাবি প্রসঙ্গে দিলীপ সোমবার মন্তব্য করলেন। দিলীপ বললেন, ” পশ্চিমবঙ্গ কে আমরা একটি রাজ্য হিসেবে দেখি। রাজ্যের উন্নয়ন এবং অগ্রগতি বিজেপির প্রধান লক্ষ্য। অন্য কেউ এ বিষয়ে কি বললেন তার সঙ্গে দলের কোনো সম্পর্ক নেই। রাজ্যে বর্তমানে অশান্তির বাতাবরণ চলছে তাই অনেকে হতাশ হয়ে এরকম কথা বলে থাকতে পারেন।”
কিন্তু দীলিপবাবু মুখে এক রকম কথা বললেও, এখানে শুধুমাত্র যে বিজেপি রাজ্যের উন্নয়ন ও অগ্রগতির উপরে লক্ষ্য রাখছে সেরকমটা নয়। এমনিতেই বিজেপি এবারের নির্বাচনে খুব একটা ভালো ফল করতে পারেনি। বারংবার রাজ্যপাল এবং কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করে ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে সোচ্চার হয়েছেন রাজ্য বিজেপি নেতারা। বারংবার দিল্লি যাচ্ছেন শুভেন্দু অধিকারী, এবং রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর। তার মধ্যেই, নবনির্বাচিত সরকারকে অতিরিক্ত আক্রমণ করতে গিয়ে দুই বিজেপি সাংসদ সরাসরি বঙ্গভঙ্গের মত একটি বিষয় তুলে নিয়ে এসেছেন।
বাংলার মানুষের কাছে বঙ্গভঙ্গ অত্যন্ত দুঃখের একটি বিষয় ছিল। ১৯০৫ সালে ব্রিটিশদের বঙ্গভঙ্গের চক্রান্ত ভেস্তে দিয়েছিল বাঙালিরা। সেই সময় এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিলেন সকলে। যদি এইরকম ঘটনার পুনরাবৃত্তি আবার ২০২১ এ ঘটতে শুরু করে তাহলে বিজেপির পক্ষে ব্যাপারটা কোনভাবেই ভালো হবে না। মানুষের কাছে ভুল বার্তা যাবে এবং এতদিনের পরিশ্রমে বিজেপি যতটা জনভিত্তি তৈরি করতে পেরেছে সেটাও হারিয়ে যাবে। তাই অন্যান্য সাংসদরা যাই বলুন না কেন, এখনো পর্যন্ত তাই একক পশ্চিমবঙ্গের বুলিই আওড়ে যাচ্ছেন রাজ্য বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব।