চার বছরের যাত্রা শেষ, গলা কেঁপে কেঁপে কী বললেন ‘রাণীমা’ ওরফে দিতিপ্রিয়া
গত রবিবার সন্ধ্যে ৬টার সময়ে ড্রয়িং রুমে সবার চোখ টিভির দিকে। রবিবারের সন্ধেবেলা সকলের চোখ থেমে গিয়েছিল টেলিভিশনের পর্দাতেই। গতকাল সম্প্রচার হয় একঘণ্টা জুড়ে ‘করুণাময়ী রানি রাসমণি’র তিরোধানের বিশেষ পর্ব। যেখানে সারা এপিসোড জুড়ে দেখানো হয়েছিল ‘রানিমা’ শেষশয্যায়। চোখ ছলছল করে উঠেছিল আপামর বাঙালি মা কাকিমার। দিতিপ্রিয়ার দুরন্ত অভিনয়ে একঘণ্টা যেন সবাই বাক্যহারা হয়ে গিয়েছিল। আর সেই ফাঁকেই ধারাবাহিকের টিআরপি হইহই করে বেড়ে যায়।
গত কাল রাণী রাসমণি’- রাণীমা ওরফে দিতিপ্রিয়ার পথ চলা শেষ হয়। অভিনেত্রী যখন স্কুলে পড়তেন সেই সময় এই ধারাবাহিকে মূল অভিনেত্রী হিসেবে পা রাখা। কথা ছিল রাণী রাসমনির কৈশোর অবস্থা অভিনয় করার। কিন্তু ছোট্ট দিতিপ্রিয়ার অনবদ্য অভিনয় সকলের মন জয় করে নেয়। বড় রাসমনি থেকে সকলের রাণী মা হয়ে ওঠার সফরে দিতিপ্রিয়া থেকে গেলেন। এই ধারাবাহিকে দীর্ঘ চার বছরের দিতিপ্রিয়ার অভিনয় ধারাবাহিকের টিআরপি সেরা দশে রেখেছিল।
রাণীমার সেটে ইন্দ্রপুরিতে শেষ দিন অভিনেত্রী দিতিপ্রিয়া নস্টালজিক হয়ে পড়েছিলেন। জনবাজারের বাড়িতে বসেই রাণীমা নিজেই পূর্ব অভিজ্ঞতা শেয়ার করলেন রাণীমা। কথা বলতে প্রথমেই গলা বুজে আসে অভিনেত্রীর। প্রথমেই বললেন, এই ধারাবাহিকে শুরু হয়েছিল চার বছর আগে। হালিশহরে প্রথম গঙ্গা স্নানে বাবু রামচন্দ্রের সাথে দেখা, তারপর মাত্র এগারো বছর বয়সে কলকাতার জানবাজারের ধনী জমিদার বাবু রাজচন্দ্র মার-এর সঙ্গে সাতপাকে বাধা। বিয়ে করে স্বামীর হাত ধরে প্রথম কলকাতার জানবাজারের বাড়িতেই পা রাখেন রাণীমা।
এরপর প্রথম কন্যা পদ্মের মা হওয়া। এরপর কুমারি,করুণা, আর জগদম্বার জন্ম দেন। চার মেয়ের বিয়ে দিয়ে জামাই আসে বাড়িতে। প্রথমে করুণাময়ী এরপর কুমারীর মৃত্যু চোখের সামনে দেখা। তারপর ১৮৩৬ সালে স্বামী রাজচন্দ্রের মৃত্যু। এরপর তিনি স্বহস্তে নিজে জমিদারির ভার তুলে নেন এবং অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে তা পরিচালনা করতে থাকেন। ইংরেজদের সাথে লড়াই, দক্ষিণেশ্বে মন্দির , এরপর হয়ে ওঠেন সকলের মাতা, অনেকে লোকমাতাও বলতেন রাণীমাকে।
দিতিপ্রিয়ার পথচলা শেষ হলেও ধারাবাহিক এই মুহূর্তে শেষ হচ্ছেনা। শুরু হতে চলেছে রাণী রাসমনির উত্তর পর্ব। আর এই পর্বে সন্দীপ্তার যাত্রা শুরু হবে। মা সরদার ভূমিকায় থাকছেন সকলের প্রিয় সন্দীপ্তা সেন। এই উত্তর পর্বে থাকবে গদাধর থেকে শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ আর মা সারদার জীবনযাত্রা। রবিবার সন্ধ্যায় শেষ দিন রাণীমা ওরফে দিতিপ্রিয়াকে ফুল দিয়ে ফেয়ার ওয়েল জানানো হয় ধারাবাহিকের গোটা টিমের তরফ থেকে। ফুলে ফুলে ভরে ওঠে সেটের চারিদিক। হাসি মুখে সকলের সঙ্গে সেলফি তুলে ওই সেট থেকে বিদায় নেন অভিনেত্রী। তবে বিদায় নেওয়ার আগে দিতিপ্রিয়া নিজেও সকলের প্রশংসা করেন তেমনই মিস করবেন এই ধারাবাহিকের সেট আর মা ভবতারিণী আর সকলকে। সকলের অনুগামীদের উদ্দেশ্যে জানান যে এই ধারাবাহিক এখনই বন্ধ হবে না, তাই সকল দর্শকদের করুণাময়ী রাণী রাসমণি উত্তরসূরি দেখার অনুরোধ ও করেন।