আসন্ন বাংলা বিধানসভা নির্বাচনের আগে শুভেন্দু ইস্যু নিয়ে তোলপাড় গোটা বঙ্গ রাজনীতি। এরই মাঝে আজ অর্থাৎ সোমবার ভোটযুদ্ধে সম্মুখ সমরে নেমে পড়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজকে ছিল মুখ্যমন্ত্রীর মেদিনীপুরে জনসভা। সেখানেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নাম না করে কার্যত বুঝিয়ে দিলেন শুভেন্দু অধিকারী মন্ত্রিত্ব পদ ছেড়ে দেওয়ার পর তৃণমূল কংগ্রেসের কিছুই ক্ষতি হয়নি। অধিকারী পরিবার ছাড়াই জেলায় দল চালাতে পারবে তৃণমূল। আজকের সভায় একাধিকবার তিনি বিজেপির বিরুদ্ধে নানা ইস্যুতে আক্রমণ শানিয়েছেন। সেই সাথে তার মুখে আজ বিকল্প নেতা হিসাবে অখিল গিরির ও মৃগেন মাইতির মত নেতার নাম উঠে এসেছে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরাসরি বিরোধী শিবির গোষ্ঠীকে আক্রমণ করে বলেছেন, “কংগ্রেস সিপিএম বা বিজেপি ঘোলা জলে মাছ ধরতে নেমেছে। ওরা ভাবছে এভাবে করলেই ভোট জিতে নেওয়া যাবে। কিন্তু তা কি কখনো সম্ভব? রাজ্যের প্রান্তে প্রান্তে তৃণমূল নেতাদের গালাগালি করে বেড়াচ্ছে। সেই সাথে দাঙ্গা লাগাচ্ছে, মিথ্যা কথা বলছে, অপপ্রচার করছে, কুৎসা করছে, চক্রান্ত করছে, সরকার ভাঙছে, দল ভাঙছে এবং সবচেয়ে বড় কথা মানুষের ভালোবাসা ভাঙছে।” কিন্তু এসব করে তৃণমূলের সাথে লড়াই করা যাবে না বলে স্পষ্ট তিনি জানিয়েছেন। তিনি বিরোধী শিবিরকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, “ভারতবর্ষে মাটি থেকে ওদের উৎপাত হওয়ার সময় চলে এসেছে। আগে নিজেদেরকে বাঁচাক তারপর আমাদের কথা ভাববে।”
আজকের সভায় নাম না করে শুভেন্দু অধিকারীকে বার্তা দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বিদ্রুপ করে বলেছেন, “তৃণমূল কংগ্রেস অত দুর্বল নয়। কেউ যদি ভাবে তৃণমূল কংগ্রেসকে ব্ল্যাকমেইল বা বার্গেনিং করবে তাহলে সে ভুল।” সেইসব বিজেপি দল বা বিজেপি দলের বন্ধুকে স্পষ্ট জানিয়ে রাখি, “আগুন নিয়ে খেলবেন না। এরকম কুৎসা রাজনীতি করে অন্য কাউকে জব্দ করা যাবে কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেসকে না। তৃণমূল কংগ্রেস বেঁচে আছে মানুষের ভালোবাসায়। মানুষকে আলিঙ্গন করে তৃণমূলের অস্তিত্ব। আর তৃণমূল জন্মলগ্ন থেকেই লড়াই করে বাঁচতে শিখেছে। এসব দুর্নীতির রাজনীতি তৃণমূলের কোন ক্ষতি করতে পারবে না।” সেইসাথে শুভেন্দু অনুগামীদের একহাত নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেছেন, “সবাই নাকি দুর্নীতিবাজ, তাহলে উনারা কি সাধুপুরুষ!”
এছাড়াও এদিন জনসভায় মুখ্যমন্ত্রীর মুখে মেদিনীপুরের অখিল গিরির কথা উঠে এসেছে। তিনি জানিয়েছেন, তৃণমূল কংগ্রেস যখন তৈরি করেছিলাম কাঁথি থেকে প্রথম অখিল গিরি লড়াই করেছিল। হয়তো প্রথমবার জিততে পারেনি। কিন্তু দ্বিতীয়বার জিততে পেরেছিলাম। তাও মাত্র ২২ দিনের জায়গায়।” এছাড়াও এদিন সভা শেষে দলীয় কর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি তাৎপর্যপূর্ণ বার্তা দিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী দলীয় কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, “কোন প্ররোচনায় মাথা নত করবেন না। কোন অত্যাচার এর কাছে মাথানত করবেন না।”