পেট্রোল ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধিতে চিন্তার ভাঁজ আমজনতার কপালে। এমনিতে কোভিড ১৯ এর ফলে সাধারণ নিম্নবিত্ত – মধ্যবিত্ত মানুষের অর্থনৈতিক ভিতে ফাটল সৃষ্টি হয়েছে। এমতাবস্থায় পেট্রোল ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধিতে মাথায় হাত সাধারণের। এর পাশাপাশি বাজারে জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে মতামত নেওয়ার জন্য ভারত বার্তা প্রতিনিধি প্রীতম দাস যোগাযোগ করেছিল মাননীয় তৃণমূল নেতা শ্রী নির্মল ঘোষের সঙ্গে। তিনি এই বিষয়ে তার মতামত আমাদের ভারত বার্তা প্রতিনিধিকে জানান।
1) পেট্রোল ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধিতে আমজনতার যে হাঁসফাঁস তা নিয়ে কি প্রতিক্রিয়া দিতে চাইবেন ?
নির্মল ঘোষ : কেন্দ্রীয় সরকার প্রথমে বলল যে কোভিড মহামারীর জন্য সকলকে বিনা পয়সায় ভ্যাকসিন দেয়া হবে। আজ দিতে পারছে না , ব্যর্থ ! সুপ্রিম কোর্ট বলেছে তাও delay করছে। দ্বিতীয়ত , ভারতবর্ষের অর্থনীতিকে একটা এমন জায়গায় নিয়ে গেছে যার ফলে মূল যে কাঠামো সেটি দুর্বল হয়ে গেছে। দুর্বল হয়ে যাওয়াতে গ্রস ডোমেস্টিক প্রোডাক্ট যেটি সবসময় প্লাস হয় সেটি এই প্রথমবার মাইনাস হয়েছে। এর ফলে ভারতবর্ষের মানুষের মধ্যে সংকট সৃষ্টি হয়েছে। এই সংকটকে আরো বাড়িয়ে দিয়েছে পেট্রোল- ডিজেল , ক্রুড অয়েল এই সমস্ত জিনিসের দাম অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়াতে। এটা সর্বকালীন রেকর্ড বৃদ্ধি পেয়েছে। এই বৃদ্ধিতে সাধারণ মানুষের ওপর প্রত্যক্ষ প্রভাব পড়েছে।কারণ , আজকের দিনেও প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে চাষের কাজে ডিজেলের সাহায্যে পাম্পসেট ব্যবহার করে। ট্রান্সপোর্টেশন বা যাতায়াতের হৃদযন্ত্র হচ্ছে ডিজেল ও পেট্রল। সবদিক থেকেই গরীব মানুষ , সাধারণ মানুষ , খেটে খাওয়া মানুষ , শ্রমজীবী মানুষ তাদের ওপর অর্থনীতিতে বিরাট ধাক্কা এসেছে। এটা ওপর থেকে দেখে মনে হচ্ছে বৃদ্ধি পাচ্ছে কিন্তু ভেতর থেকে ভারতবর্ষের দরিদ্র মানুষকে আরো দরিদ্র করে দিচ্ছে। বেকার মানুষকে , কর্মজীবী মানুষকে আরো সংকটের মধ্যে ফেলে দিচ্ছে। এই সংকট জাতির সংকট ও যদি ভারত সরকার এই সংকট থেকে ভারতবাসীকে মুক্ত না করে তাহলে এক কঠিন সমস্যায় ভারতবর্ষ পড়বে।
২) কেন্দ্রীয় সরকারের বিশেষ কোনো ব্যবস্থা অবিলম্বে গ্রহণ করা উচিত জনগণের স্বার্থে ?
নির্মল ঘোষ : এরা বাস্তবক্ষেত্রে ভারতবর্ষের যে তিনটি পয়েন্ট আমি বললাম তার একটা ক্ষেত্রেও বাস্তব চিন্তাভাবনার দিকে যাচ্ছে না। তার জন্যে পেট্রোল ডিজেলের যে বৃদ্ধি যেখানে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে পেট্রোল ডিজেলের দাম নিম্নমুখী বা কম। সেখানে ভারতে সর্বোচ্চ বৃদ্ধি পেয়েছে। গণতন্ত্রে গরীব মানুষকে বাঁচিয়ে রাখাই হচ্ছে সরকারের কর্তব্য। সরকার এই কর্তব্য পালনে ব্যর্থ হয়েছে।
৩) ভারতবর্ষে এক সময় রেগুলেট ব্যবস্থা চালু ছিল কিন্তু ২০১০ সালে মনমোহন সিংয়ের সরকার ডিরেগুলেট ব্যবস্থা নিয়ে আসে। এরপর ২০১৪ সালে বিজেপি ক্ষমতায় এসে পুনরায় রেগুলেট ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনলেও ২০১৭ সালে ডিরেগুলেট ব্যবস্থা চালু করে। এই ডিরেগুলেট ব্যবস্থাকে সমর্থন করেন ?
নির্মল ঘোষ : পৃথিবীতে যারা যারা ওপেক কান্ট্রিস বা যারা তেল উৎপাদন করে সবজায়গায় তেলের দাম নিম্নগতি। এই নিম্নগতি হওয়াতেও তাহলে ভারতবর্ষে তেলের দাম উচ্চগতি কেন হচ্ছে ? অসম্ভব বৃদ্ধি কেন হচ্ছে ? এটি ভারত সরকারের ব্যর্থতা ছাড়া আর কিছুই না।
[সাক্ষাৎকার গ্রহণ : প্রীতম দাস]