অরূপ মাহাত: হিন্দুদের আরাধ্য দেবতা শ্রীগণেশ। হিন্দু মতে দেবতাদের সর্বোচ্চ পর্যায়ে গণেশের স্থান। সেই গণেশ দেবতার ঐতিহাসিক পটভূমি খুঁজে দেখার চেষ্টা করি আজ। শ্রী গণেশের আরেক নাম গণপতি। এই ‘গণপতি’র প্রথম উল্লেখ পাওয়া যায় হিন্দুদের প্রাচীন ধর্মগ্রন্থ ঋগ্বেদে। ঋগ্বেদে উল্লিখিত মন্ত্রে ‘গণানাম গণপতিম হবামহে…’ ও ‘বিষ্ণু সীদা গণপতে…’ এই বাক্যবন্ধ দুটি বৈদিক যুগে গণপতির ধারণা দেয়। যদিও অনেকেই মনে করেন, বৈদিক গণপতি ও বর্তমান কালে পূজ্য গণপতি এক নন। তবে একথা অস্বীকার করা যায় না যে, বেদোত্তর যুগে ঋগ্বেদের ‘গণপতি-ব্রহ্মণস্পতি’ বিবর্তনের মাধ্যমে পৌরাণিক ‘গজবদন-গণেশ-বিঘ্নেশ্বর’-এর রূপ পেয়েছে।
ঋগ্বৈদিক গণপতি ‘বৃহস্পতি’ বা ‘বাচস্পতি’ নামেও পূজিত হতেন। যা জ্যোতির্ময় দেবতা রূপে পরিচিত। তাঁর গাত্রবর্ণ রক্তিমাভ-স্বর্ণালি। অস্ত্র ছিল অঙ্কুশ বা কুঠার। মনে করা হত যে, তাঁর আশিষ ভিন্ন কোনও ধর্মীয় সিদ্ধি সম্ভব নয়। ‘গণ’ নামক একটি নৃত্যগীত পরিবেশনকারী একটি দলের সাথে তিনি সর্বদা থাকতেন বলে মানুষের বিশ্বাস। সকলের দেবতার রক্ষকারী হিসেবেও তাঁকে কল্পনা করা হত।
তবে বৈদিক গণপতি ছাড়াও গণেশের অনেক রূপ রয়েছে বলে অনেকের বিশ্বাস। বর্তমানে পূজিত পৌরাণিক গণেশের সাথে বৈদিক গণপতির সম্পর্ক মেনে নিতে চান না অনেকেই।