প্রসেনজিৎ চ্যাটার্জি (prasenjit chatterjee) টলিটাউনের কতিপয় নায়কদের অন্যতম যাঁরা একসময় নিজের ইমেজের কথা না ভেবে টলিউডে একের পর এক ফিল্মে অভিনয় করে গেছেন। মহানায়ক উত্তমকুমার (uttam kumar)- এর মৃত্যু-পরবর্তী টলিউডে দেখা দিয়েছিল কাজের খরা। মহানায়কের মৃত্যুর পর ক্রমশ প্রযোজক ও পরিচালকরাও নিজেদের সরিয়ে নিচ্ছিলেন ইন্ডাস্ট্রি থেকে। তাঁদের ধারণা ছিল উত্তম কুমার ছাড়া অপর কোনো নায়ক নেই। সুতরাং ফিল্ম তৈরী না হওয়ার জন্য কলাকূশলীদের হাতেও কাজ ছিল না। সেই সময় অনেকেই চিকিৎসার অভাবে ও না খেতে পেয়ে মারা গেছেন। এই সময় এগিয়ে এসেছিলেন অঞ্জন চৌধুরী (Anjan chowdhury), হরনাথ চক্রবর্তী (Haranath chakraborty), প্রসেনজিৎরা। অঞ্জন চৌধুরীর প্রোডাকশন থেকে তৈরী হতে লাগল একটু অন্যরকম ধারার ফিল্ম যা ক্লাসিক নয়। ফিল্মে উঠে এল কাজের মেয়ের দুঃখ, গ্রাম বাংলার বৌ, গাছের ফাঁকে নাচ। এই সমস্ত কিছুই প্রসেনজিৎ-কে বানিয়েছিল ‘পোসেনজিৎ’। প্রসেনজিৎ জানতেন, এতে তাঁর ইমেজ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। কিন্তু তার পাশাপাশি তিনি জানতেন এই ফিল্মের কাজ বন্ধ হয়ে গেলে আবারও দুর্দশার অন্ধকার নেমে আসবে টলিউডে।
একসময় ইন্ডাস্ট্রিতে এলেন জিৎ (Jeet) ও দেব(Dev)-এর মত নতুন প্রতিভা। পরিচালক ও প্রযোজকরা ক্রমশ ঝুঁকতে শুরু করলেন তাঁদের দিকে। ধীরে ধীরে প্রসেনজিৎ-এর হাতে কমতে থাকল কাজের সংখ্যা। একসময় পারিবারিক টানা-পোড়েন ও পরিচালকদের মূখ ফিরিয়ে নেওয়ার ফলে হারিয়ে গেলেন প্রসেনজিৎ। কিন্তু তার কিছুদিন পরেই ‘অটোগ্রাফ’ -এর প্রস্তাব নিয়ে প্রসেনজিৎ-এর কাছে গিয়েছিলেন সৃজিত মুখার্জি (srijit Mukherjee)। ‘অটোগ্রাফ’ বাণিজ্যিকভাবে চূড়ান্ত সফল হওয়ার পাশাপাশি আপামর বাঙালি দর্শক দেখেছিল প্রসেনজিৎ-এর মত এক শক্তিশালী অভিনেতাকে। সৃজিতের হাত ধরে আবারও সেকেন্ড ইনিংস শুরু করলেন প্রসেনজিৎ। আজ প্রসেনজিৎ টলিউডের অন্যতম ব্যস্ত নায়ক। তবু তিনি ভোলেননি ‘পোসেনজিৎ’ ডাক। কারণ এই ডাক তাঁকে পরিণত করেছে এক পোড়খাওয়া অভিনেতায়।
সম্প্রতি জি বাংলা সোনার সংসার অ্যাওয়ার্ডে আমন্ত্রিত ছিলেন বলিউডের ‘হিরো নং 1′ গোবিন্দা (Govinda)। এই অনুষ্ঠানের একটি ক্লিপ সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। ক্লিপে দেখা যাচ্ছে গোবিন্দা অভিনীত ‘কুলি নং 1′ ফিল্মের ‘তুঝকো মির্চি লাগি তো গানের সঙ্গে গোবিন্দা প্রসেনজিৎ-কেও নাচের অনুরোধ করলেন। দুই নায়কের দমদার নাচ দেখে রীতিমত উচ্ছ্বসিত হয়ে মঞ্চে উঠে এলেন কাঞ্চন মল্লিক (kanchan mullick),বিশ্বনাথ বসু (Biswanath Basu), নীল মুখোপাধ্যায় (Nil mukhopadhyay)। তাঁদের সঙ্গে পা মেলালেন অনুষ্ঠানের সঞ্চালক দিতিপ্রিয়া রায় (Ditipriya Roy) এবং আবীর চট্টোপাধ্যায় (Abir chatterjee)। তবে সবাইকে ছাপিয়ে ‘চিচি’ গোবিন্দা ও ‘বুম্বাদা’ প্রসেনজিৎ-এর ম্যাজিক ছড়িয়ে পড়ল চারিদিকে। 28 শে মার্চ দোলের দিন সন্ধ্যা 7 টায় সম্প্রচারিত হবে জি বাংলা সোনার সংসার অ্যাওয়ার্ড। এদিন হয়তো প্রসেনজিৎ-এর থেকে মুখ ঘুরিয়ে নেওয়া পরিচালকারাও দেখবেন এই অনুষ্ঠান। অনেকেই হয়তো সমালোচনাও করবেন ‘বুম্বাদা’-কে নিয়ে। বাট এনিওয়েজ, ‘তুঝকো মিরচি লগি তো ম্যায় কেয়া করুঁ’।