মাইথোলজি

শুভ মহাসপ্তমী : দেবী কালরাত্রি, মায়ের সপ্তম বিভূতি

Advertisement

দেবী মহালক্ষ্মীর শুভ আগমন বার্তায় ধরণী আজ ধন্য। দিকে দিকে নিনাদিত হচ্ছে শঙ্খধ্বনি। তাঁর মুকুট গগন স্পর্শ করছে। তিনি দশপ্রহরণ ধারণ করে , দশদিক আলো করে পর্বত চূড়ায় বিরাজ করছেন স্বমহিমায়। তিনি সর্বত্র বিরাজমান। সৃষ্টির প্রতিটি অনুপরমাণুতে তাঁর চিরন্তন উপস্থিতি। তিনিই দুর্গা। তিনিই ভদ্রকালী। তিনিই সকল কর্মে সিদ্ধি প্রদায়িনী স্বয়ং সিদ্ধিদাত্রী।

আজ শুভ মহাসপ্তমী। দেবী কালরাত্রি রূপে পূজিত হবেন আজ। দেবীর অপর নাম মহাকালী। মহাকালের বক্ষের ওপর তাঁর এক চরণ, অপরটি মেদিনীর ওপর। মহাকালকে জয় করে উনি মহাকালী। দেবী চতুর্ভূজা। এক হস্তে খড়্গ। এক হস্তে বজ্র। এবং বাকি দুই হস্ত বরমুদ্রা ও অভয়মুদ্রা ভঙ্গিমায় ভক্তদের নিরন্তর আশীষ বর্ষণ করে যাচ্ছেন। দেবীর বাহন গাধা। দেবী মুক্তকেশী। করালবদনা। মাতৃশক্তির এক ভয়ঙ্কর রূপ। তবে এ কথাও সত্য মায়ের ছিন্নমস্তা রূপের ন্যায় এই রূপও তাঁর এক ‘বরাভয়া’ রূপ। মা সকল অশুভ শক্তি নাশকারিনি। ভূত, প্রেত, পিশাচ ও নানা অশুভ শক্তির প্রতীক মায়ের আগমন বার্তা শ্রবণ মাত্রই সেই স্থান পরিত্যাগ করে। তিনি সকল মঙ্গলের উৎস। সকল পার্থিব কামনাপূর্তি করে থাকেন।

পুরাণ মতে দেবী কালরাত্রি ও দেবী মহাকালী, এক এবং অভিন্ন। দেবী শুম্ভ ও নিশুম্ভ এর মহাবলশালী অসুরদ্বয় চন্ড ও মুন্ডকে বধ করে দেবী চামুন্ডা রূপে বিখ্যাতা হন। উল্ল্যেখ দেবী চন্ডিকা দেবীকে এই নামে ভূষিত করেছিলেন। অন্যদিকে কৈলাশবাসিনী পার্বতী দেবী কালরাত্রির মাধ্যমে দুর্গমাসুরকে সাবধান করেছিলেন যে সে যেন কৈলাশ আক্রমন করার বাসনা পরিহার করে। কিন্তু অসুর দেবীর কথা অমান্য করে কৈলাশ আক্রমন করে এবং দেবী তাঁকে বধ করে দুর্গারূপে জগৎমাঝে পরিচিতি পান। বলাবাহুল্য এই দেবী কালরাত্রি স্বয়ং জগৎ পালক শ্রী হরিকেও যোগনিদ্রায়ে আচ্ছন্ন করে রেখেছেন। দেবীর আরাধনার পদ্ধতি কিছুটা হলেও ভিন্ন স্বাদের। জগৎজননী যতই উগ্ররূপ ধারন করুন না কেন, সন্তানের কাছে উনি শুধুমাত্র একজন মা। এবং যার অন্যকোন পরিচয়ের প্রয়োজন নেই। এই নিখিল ব্রহ্মান্ড তাঁর থেকেই আরম্ভ ও প্রলয়কালে তাঁর মধ্যেই বিলীন হয়ে যায়। সত্য ও সনাতনের জন্য উনি অনন্ত ও মহাপাতকিদের জন্য উনি নৃমুন্ডমালিনি, সংহারকারিনি মহাকালী!!

Written by – কুণাল রায়

Related Articles

Back to top button