কৃষক বিক্ষোভের জেরে হরিয়ানায় জারি হাই অ্যালার্ট, অগ্নিগর্ভ দিল্লির নিরিখে চারটি মামলা দায়ের
নয়াদিল্লি: সবদিক থেকে ৭২তম প্রজাতন্ত্র দিবসে (Republic Day) রাজধানী দিল্লির (Delhi) চিত্র ছিল অন্যবারের থেকে একেবারে আলাদা। একদিকে করোনা (Coronavirus) পরিস্থিতির জন্য জাঁকজমকহীনভাবেই এবারে প্রজাতন্ত্র দিবস পালনের আয়োজন করা হয়। যেখানে ছিলেন না কোনও প্রধান অতিথি। এমনকি বিদেশী অতিথিদের এবার দেখা যায়নি। যদিও প্রজাতন্ত্র দিবসে অংশ নেওয়ার জন্য ইংল্যান্ডের (England) প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনকে (Boris Jonson) আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল, তবুও ব্রিটেনে দ্বিতীয় পর্যায়ের করোনা পরিস্থিতি উদ্বেগজনক হওয়ার কারণে তিনি আসতে পারেননি। তাই সব মিলিয়ে প্রত্যেকবারের থেকে এবারের প্রজাতন্ত্র দিবস উদযাপনের চেহারাটা রাজধানী দিল্লিতে ছিল একেবারেই অন্যরকম। আর টকর মধ্যে কুচকাওয়াজ শুরু হওয়ার মুহূর্ত থেকেই ধীরে ধীরে যেভাবে আন্দোলনকারী কৃষকদের ট্রাক্টর মিছিলকে (Tractor Rally) ঘিরে পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হতে শুরু করে, তা বোধ হয় এর আগে কোনও প্রজাতন্ত্র দিবসে ঘটেনি।
প্রথম থেকে ট্রাক্টর মিছিল না করার পক্ষে সা
সওয়াল করেছিল দিল্লি প্রশাসন সহ কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু কৃষকরা ছিলেন তাদের দাবিতে অনড়। তাই অবশেষে প্রজাতন্ত্র দিবসের দিন কৃষকদের ট্রাক্টর মিছিল হবে, এমনটাই স্থির হয়। যদিও দিল্লি পুলিশের পক্ষ থেকে কিছু শর্ত দেওয়া হয়েছিল। যেমন, কুচকাওয়াজ শেষ হওয়ার পর বেলা বারোটা থেকে ট্রাক্টর মিছিল করবে কৃষকরা, এমনটাই জানিয়েছিল দিল্লি পুলিশ। এর জন্য বেশ কিছু রুটের পরিবর্তন ঘটানো হয়েছিল। কিন্তু কোনও শর্তকে না মেনে কুচকাওয়াজ শুরু হতেই সিংঘু সীমান্ত থেকে ট্রাক্টর মিছিল শুরু করে দেয় কৃষকরা। তারপরেই দিনভর ঘটে চলে অপ্রত্যাশিত ঘটনা। কৃষকদের বাধা দেওয়ার জন্য পুলিশ লাঠিচার্জ থেকে শুরু করে কাঁদানে গ্যাস ছোঁড়া, সবকিছু করতে থাকে। এমনকি এই পুলিশ-কৃষক সংঘর্ষে মৃত্যু হয় এক কৃষকের। পরিস্থিতি হাতের বাইরে যেতে দেখে জরুরি বৈঠকে বসে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। অবশেষে গতকাল, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় অবিলম্বে ট্রাক্টর মিছিল প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে সংযুক্ত কিষান মোর্চা।
তবে ট্রাক্টর মিছিল প্রত্যাহার করা হলেও নিজেদের দাবিতে এখনও পর্যন্ত অনড় কৃষকরা। তাই যে যার বিক্ষোভস্থলে ফিরে গিয়ে প্রতিবাদ একইভাবে চালিয়ে যাবে বলে কৃষক সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়। এদিকে সরগরম পরিস্থিতি হওয়ার কারণে ইতিমধ্যেই হরিয়ানায় জারি করা হয়েছে হাই অ্যালার্ট। সব জেলায় পুলিশ প্রধানদের চূড়ান্ত সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি মঙ্গলবার দিনভর যেভাবে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি ছিল রাজধানী দিল্লিতে, তার নিরিখে চারটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। সব মিলিয়ে অশান্ত রাজধানীর পরিস্থিতি, এমনটা বলাই যায়।