দুর্গাপূজা কমিটিগুলিকে অনুদান দেওয়ার রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্তে অনুমোদন দিল কলকাতা হাইকোর্ট। অর্থাৎ পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণা মত এবারে প্রায় ৪৩ হাজার পুজো কমিটিকে ৬০ হাজার টাকা করে অনুদান দিতে পারবে রাজ্য সরকার। এতে রাজ্যের খরচ হবে ২৪০ কোটি টাকা। তবে রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্ত একেবারেই শর্ত বিহীন রাখেনি কলকাতা হাইকোর্ট। এদিন কলকাতা হাইকোর্টের তরফ থেকে রাজ্যের এই সিদ্ধান্তের উপরে ছয়টি শর্ত আরোপ করা হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে।
পুজোয় অনুদান দেওয়া নিয়ে আদালতে পাঁচটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হয়েছিল। সরকারি কর্মীদের মহার্ঘ ভাতা যেখানে আটকে সেখানে পুজোয় এভাবে কিভাবে কোটি কোটি টাকা খরচা করা হয়, কিভাবে কোটি কোটি টাকা অনুদান দেওয়া হয় সেটা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছিলেন মামলাকারীরা। মঙ্গলবার এই মামলার রায় দিতে গিয়ে রাজ্যকে অনুদান দেবার অনুমোদন দিয়েছে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। তবে এর সাথেই রয়েছে ছয়টি শর্ত।
এই সমস্ত শর্তের মধ্যে রয়েছে – অনুদান দেওয়ার ক্ষেত্রে আদালতের আগের সমস্ত নির্দেশ এবং গাইড লাইন মেনে চলতে হবে রাজ্য সরকারকে। অনুদান শুধুমাত্র সেই ক্লাব অথবা পুজা কমিটি পাবেন যারা গত বছর সরকারেরবেঁধে দেওয়া নির্দেশিকা অনুযায়ী অনুদান খরচ করেছিলেন এবং নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ব্যয়ের শংসাপত্র জমা দিয়েছিলেন। এছাড়াও অনুদানের টাকা যাতে সাধারণ মানুষের স্বার্থে খরচ হয় তা দেখার জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে রাজ্য পুলিশকে। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য পুলিশের ডিজি এটা নিশ্চিত করবেন, যাতে এই টাকা নির্ধারিত খাতে খরচ হয়। ১৫ নভেম্বরের মধ্যে পূজা কমিটি গুলি তাদের ব্যয়ের শংসাপত্র, বিল এবং ভাউচার নির্ধারিত কর্তৃপক্ষের কাছে জমা করবেন। রাজ্য সরকার সেই সমস্ত ব্যয়ের শংসাপত্র পরীক্ষা করে যথাযথভাবে এবং নির্ধারিত খাতে খরচ করা হয়েছে কিনা সেটা বিচার করবে এবং তারপর ১৫ই ডিসেম্বরের মধ্যে কলকাতা হাইকোর্টের কাছে এই সংক্রান্ত একটি রিপোর্ট পেশ করবে।
তবে অনুদানের অনুমোদন পেয়ে এই মুহূর্তে কিছুটা হলেও স্বস্তিতে রয়েছে রাজ্য সরকার। এই প্রসঙ্গে রাজ্য সরকারকে কটাক্ষ করে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী বলছেন, “বাংলার দুর্গাপুজোর রাজনীতিকরণ ঘটতে শুরু করেছে। ভাবটা এমন করা হচ্ছে যেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দুর্গাপূজাতে নিজে টাকা দিচ্ছেন। দুর্গা পুজোতে পয়সা দিয়ে ব্যালেট বাক্স ভরাতে চাইছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।” যদিও তৃণমূল রাজ্য সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুনাল ঘোষ বলেছেন, “এ নিয়ে আমাদের কিছু বলার নেই। আদালত রায় দিয়েছে এবং সেই অনুযায়ী সবকিছু পালন করা হবে।”