জেঠু! কার্নিভ্যালও শেষ… প্যান্ডেল ভাঙছে… একদিনের জন্য বাড়ি ভাড়া পাওয়া যাবে?
এক বছর পরে উমা ঘরে আসছেন। সাথে তার ছেলেমেয়ে লক্ষ্মী, সরস্বতী গণেশ, কার্তিক। সাথে তাদের বাহন এরাও আছে। চার দিন বেশ আনন্দে থাকার পরে, এবার মায়ের যাবার পালা। বাক্স-প্যাঁটরা গুছিয়ে মা রেডি শশুর বাড়ির পথে। ওদিকে তো শিব তো আছেন একা একাই। মাএর তা নিয়ে চিন্তার শেষ নেই। দশমী কয়েকদিন আগে শেষ হলেও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মাননীয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে কয়েক বছর আগে থেকেই চালু হয়েছে একটি কার্নিভাল। শুনলে একটু বিদেশী বিদেশী ব্যাপারটা মাথায় আসতে পারে। সত্যি দেখতে কিন্তু অনবদ্য। লরিতে করে যায় একেকটা সব বড় বড় দুর্গা ঠাকুর, শুধু ঠাকুর ই নয় তার সামনে পিছনে থাকে সেই ক্লাবের নানান রকম অনুষ্ঠান। একেবারে চাঁদের হাট। তাই দুর্গাপুজো শেষ হবার পরে মনটা যে ভারাক্রান্ত হয়ে ওঠে, তা কিন্তু কার্নিভাল দেখে অনেকটাই আবার সেই আনন্দে মনটা ফিরিয়ে নিয়ে আসতে পারি।
কিন্তু এখন দুর্গা পূজা শেষ, কার্নিভালও শেষ। মা পড়ে গেছেন জলে। আর মাত্র একদিন বাকি। এরপরে মায়ের কন্যা লক্ষ্মী আবারো আসতে চলেছেন আমাদের কাছে। সামনেই যে কোজাগরী লক্ষ্মী পুজো। তাই বুঝি মা লক্ষ্মী কে বলেছেন’ তুই বরং থেকেই যা আর তো একটা দিনের ব্যাপার’। লক্ষ্মী ও মায়ের কথা অমান্য করতে পারেননি। কিন্তু প্রশ্নটা হচ্ছে তিনি থাকবেন কোথায়? তাই তিনি অগত্যা বাধ্য হয়েই নিজের ঘর খুঁজতে বেরিয়েছেন। লোকের দ্বারে দ্বারে গিয়ে তিনি যেন করুন স্বরে বলছেন
‘একটা ঘর ভাড়া পাওয়া যাবে’?
এই শুনে অনেকে হয়তো তার মুখের উপর দরজা বন্ধ করছে। আবার কেউ কেউ বিরক্তি প্রকাশ করছে।
ঠিক এইভাবে লক্ষ্মী রূপী মেয়েরাও ঘরে ঘরে নির্যাতিতা, শোষিতা, অত্যাচারিতা হয়ে থাকে প্রতিনিয়ত। বাড়িতে পুজোর ঘটা দেখলে আপনার চক্ষু চড়কগাছ হলেও বাড়ির বউ মা কিন্তু প্রতিনিয়ত অবহেলিত হচ্ছেন পরিবারে। এখানে ভগবান লক্ষ্মী আর বাড়ির সত্তিকারের মেয়ে লক্ষ্মী সব যেন মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে। বাড়িতে কন্যা সন্তান জন্ম নিলে রাগ প্রকাশ না করে, বৌমার ওপর অযথা দোষারোপ না করে, একটা কথা বলতেই পারেন মনে মনে বা গান গেয়ে ‘এসো মা লক্ষ্মী বসো ঘরে আমার ই ঘরে থাকো আলো করে’
Written by – শ্রেয়া চ্যাটার্জী