কম খরচে লাভজনক ব্যবসার খোঁজে অনেকেই থাকেন। বিশেষ করে এমন কোনও কাজ, যা বাড়ি থেকে সহজেই শুরু করা যায় এবং যার চাহিদা সারা বছরই স্থায়ী থাকে। ঠিক এই জায়গাতেই আগরবাতি তৈরির ব্যবসা হতে পারে এক বড় সম্ভাবনা।
কেন লাভজনক আগরবাতি ব্যবসা
ভারতে প্রতিটি পূজা, উৎসব কিংবা ধর্মীয় অনুষ্ঠানে আগরবাতি ব্যবহার হয়। বাজারে এর চাহিদা কমে না। ব্যবসাটি ছোট আকারে হলেও মাসে স্থায়ী আয় এনে দিতে সক্ষম। বাড়ি থেকেই এটি শুরু করা যায়, আবার চাইলে মেশিন লাগিয়ে বড় আকারেও চালানো সম্ভব। খরচ তুলনায় মুনাফা বেশি হওয়াই এর প্রধান সুবিধা। বিশেষ কোনও প্রযুক্তি বা শিক্ষার প্রয়োজন নেই, শুধু পরিশ্রম ও সঠিক মার্কেটিং-ই সাফল্যের চাবিকাঠি।
প্রাথমিক খরচ ও কাঁচামাল
এই ব্যবসা শুরু করতে আনুমানিক ২০,০০০ টাকা খরচ হয়। এর মধ্যে ছোট মেশিন, কাঁচামাল ও প্যাকেজিংয়ের খরচ ধরা হয়েছে। কাঁচামালের মধ্যে থাকে বাঁশের কাঠি, চারকোল পাউডার, সুগন্ধি তেল এবং প্যাকেটিং সামগ্রী। এগুলি স্থানীয় বাজার বা wholesale দোকানেই সহজলভ্য।
ব্যবসার মডেল
ধরা যাক, মাসে প্রায় ৫০০ কেজি আগরবাতি উৎপাদন করা হলো। এক কেজি আগরবাতি তৈরির খরচ প্রায় ৮০-১০০ টাকা। আর বাজারে সেই পণ্য বিক্রি করা যায় ১৫০-১৮০ টাকায়। অর্থাৎ, প্রাথমিক খরচ বাদ দিয়েই ভালো লাভের সুযোগ রয়েছে। নিয়মিত উৎপাদন এবং বিক্রির উপর ভিত্তি করেই মাসে ৩০,০০০ টাকার বেশি আয় সম্ভব।
মার্কেটিং ও ব্র্যান্ডিংয়ের গুরুত্ব
আগরবাতির ব্যবসায় মুনাফা বাড়াতে হলে সঠিক মার্কেটিং অপরিহার্য। প্রথমে স্থানীয় দোকান, মন্দির ও wholesale বাজারে বিক্রি শুরু করা যেতে পারে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সুন্দর প্যাকেজিং এবং ছোট ব্র্যান্ড তৈরি করে বড় কোম্পানির সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নামাও সম্ভব। ব্র্যান্ড আইডেন্টিটি তৈরি করতে পারলে ক্রেতাদের বিশ্বাস অর্জন অনেক সহজ হয়।
লোন সুবিধার সুযোগ
যাঁদের হাতে প্রাথমিক মূলধন কম, তাঁরা সরকারের বিভিন্ন স্কিমের আওতায় ব্যবসায়িক লোন নিতে পারেন। ব্যাংক এবং NBFC প্রতিষ্ঠানগুলি মহিলা উদ্যোক্তা এবং নতুন ব্যবসায়ীকে সহজ শর্তে ঋণ দিয়ে থাকে। EMI ভিত্তিতে সেই ঋণ শোধ করেই ব্যবসা বড় আকারে নিয়ে যাওয়া সম্ভব।
কম খরচে লাভজনক এবং দীর্ঘস্থায়ী ব্যবসার অন্যতম বিকল্প হল আগরবাতি উৎপাদন। প্রায় ২০,০০০ টাকা বিনিয়োগ করেই শুরু করা যায় এই উদ্যোগ। সঠিক পরিকল্পনা, মার্কেটিং এবং মান বজায় রেখে এটিকে পরিবারের স্থায়ী আয়ের উৎসে পরিণত করা সম্ভব। তবে প্রকৃত খরচ ও আয় নির্ভর করবে স্থানীয় বাজারের মূল্য ও বিক্রির উপর। তাই ব্যবসা শুরু করার আগে স্থানীয় পর্যায়ে খোঁজখবর নেওয়া সবসময়ই বুদ্ধিমানের কাজ।














