নয়াদিল্লি: করোনা পরিস্থিতিতে দীর্ঘ লকডাউনের পর বাজারে দ্রব্যমূল্য কার্যত আকাশছোঁয়া। আলু, পেঁয়াজ, শাক-সবজি কিনতে গিয়ে মধ্যবিত্তদের মাথায় হাত পড়েছে। সবকিছুই প্রায় চড়া দামে বিকোচ্ছে। এতেই দিশেহারা সাধারণ মানুষ৷ তার ওপর গোদের ওপর বিষফোঁড়ার মতো কাজ করছে রান্নার তেলের দাম। গত কয়েকমাসে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে সর্ষে, সয়াবিন, সানফ্লাওয়ারের মতো রান্নায় ব্যবহৃত বা ভোজ্য তেলের দাম৷ দাম এতটাই ঊর্ধ্বমুখী যে, কেন্দ্রীয় সরকারের মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠেছে এই প্রসঙ্গ।
এই সপ্তাহের শুরুর দিকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের নেতৃত্বাধীন মন্ত্রিগোষ্ঠীর বৈঠকেই রান্নার তেলের দাম বাড়ার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়৷ আমদানি বাড়িয়ে পেঁয়াজের দাম কিছুটা কমানো সম্ভব হয়েছে৷ সরকারি হস্তক্ষেপে কিছুটা কমেেছ আলুর দামও৷ কিন্তু ভোজ্য তেলের দাম বেড়েই চলেছে৷ কীভাবে তা নিয়ন্ত্রণ করবে সরকার, এই নিয়েই চিন্তার ভাঁজ পড়েছে কেন্দ্রের মাথায়।
ক্রেতা সুরক্ষা দফতরের হাতে আসা তথ্য বলছে গতকাল বৃহস্পতিবার গোটা দেশে এক লিটার সর্ষের তেলের গড় দাম ছিল ১২০ টাকা৷ সেখানে এক বছর আগে তা ছিল ১০০ টাকা৷ ২০১৯ সালের ১৮ অক্টোবর দেশে এক লিটার সয়াবিন তেলের গড় দাম ছিল ৯০ টাকা, যা বর্তমানে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১০ টাকা প্রতি লিটার৷ সানফ্লাওয়ার সহ অন্যান্য তেলের ক্ষেত্রেও একইভাবে দাম বেড়েছে৷
একটি সর্বভারতীয় সংবাদপত্রের এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, বৃহস্পতিবার কলকাতায় খুচরো বাজারে ১ লিটার সর্ষের তেলের দাম ছিল ১৩৭ টাকা৷ এক বছর আগে তা ছিল ১০১ টাকা৷ এদিন কলকাতায় সয়াবিন তেল বিক্রি হয়েছে ১১৩ টাকা প্রতি লিটারে এবং সানফ্লাওয়ার অয়েলের দাম ১৩৫ টাকার আশেপাশে ঘোরাফেরা করেছে৷ বছরখানেক আগেও যা ছিল যথাক্রমে ৯৪ এবং ১০২ টাকা৷
তবে এক্ষেত্রে কলকাতার থেকেও দিল্লি, মুম্বই, চেন্নাইয়ের মতো শহরগুলিতে ভোজ্য তেলের দাম আরও বেশি৷ দিল্লিতে এক লিটার সর্ষের তেলের দাম ১৫০ থেকে ১৫৫ টাকার মধ্যে ঘোরাফেরা করছে৷ বাণিজ্য নগরীতে তা ১৬০ টাকা ছাড়িয়ে গিয়েছে৷ সুতরাং, সব মিলিয়ে আলু, পেঁয়াজ, শাক-সবজির পাশাপাশি রান্নার তেলের দাম এত বেড়ে যাওয়ায় চিন্তার ভাঁজ পড়েছে সাধারণ মানুষের কপালে। কীভাবে রান্না তেলের দাম কিছুটা কমিয়ে আমজনতাকে স্বস্তি দেওয়া যায়, এখন সেটাই ভাবছে কেন্দ্রীয় সরকার।