ভারতের প্রথম বুলেট ট্রেন প্রকল্প ঘিরে দীর্ঘদিন ধরেই জনমনে ছিল কৌতূহল। অবশেষে সেই কৌতূহলের অনেকটাই অবসান হল, কারণ প্রকাশিত হয়েছে দেশের প্রথম হাই-স্পিড বুলেট ট্রেনের সম্পূর্ণ রুটম্যাপ। মুম্বই থেকে আহমেদাবাদ পর্যন্ত বিস্তৃত এই করিডর বদলে দিতে চলেছে দেশের রেল পরিবহণের গতি ও মানচিত্র।
১২টি স্টেশন, আধুনিক প্রযুক্তি
প্রকল্পের আওতায় মোট ৫০৮.১৭ কিমি পথ অতিক্রম করবে এই বুলেট ট্রেন। শুরু হবে মুম্বইয়ের বান্দ্রা কুর্লা কমপ্লেক্স থেকে, থামবে থানে, ভিরার, বোইসার, বাপি, বিলিমোরা, সুরাট, ভরুচ, ভাদোদরা, আনন্দ/নাডিয়াদ, আহমেদাবাদ হয়ে শেষ হবে সাবরমতীতে। এই করিডরটি মহারাষ্ট্র, গুজরাট এবং দাদরা ও নগর হাভেলির উপর দিয়ে যাবে।
প্রকল্পটির ৯০.৬ শতাংশ অংশ থাকবে উঁচু ভায়াডাক্টের উপর, ৫.১ শতাংশ যাবে ভূগর্ভস্থ পথে এবং বাকি অংশটি চলবে মাটির সমতলে। বিশেষ আকর্ষণ হল থানেতে অবস্থিত ২ কিমি দীর্ঘ আন্ডারসি টানেল।
জাপানি প্রযুক্তির ছোঁয়া
এই হাই-স্পিড রেল ব্যবস্থায় ব্যবহৃত হচ্ছে জাপানের বিখ্যাত শিনকানসেন প্রযুক্তি। ই-৫ সিরিজের ট্রেনগুলি ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৩২০ কিমি গতিতে ছুটবে, যা ভারতের যাত্রী পরিবহণ ব্যবস্থায় এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ।
বাজেট এবং অর্থায়ন
প্রকল্পটির মোট আনুমানিক খরচ ধরা হয়েছে ₹১.১ লক্ষ কোটি টাকা। এর মধ্যে ₹৮৮,০০০ কোটি টাকা ঋণ দিচ্ছে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (JICA), মাত্র ০.১ শতাংশ সুদে। এই ঋণ পরিশোধের সময়সীমা ৫০ বছর, যার মধ্যে ১৫ বছর মরাটোরিয়াম থাকবে।
উন্নয়নের অগ্রগতি
প্রকল্পটি মূলত ২০২৩ সালের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা ছিল, তবে জমি অধিগ্রহণ সহ নানা প্রশাসনিক জটিলতায় তা পিছিয়ে গিয়েছে। এখন পূর্ণ পরিষেবা চালুর সম্ভাব্য সময় ধরা হয়েছে ২০২৮ সাল। গুজরাটে আংশিক পরিষেবা চালু হতে পারে ২০২৭ সালের মধ্যে। ইতিমধ্যেই ৩০০ কিমি ভায়াডাক্ট নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে এবং সুরাট স্টেশনের কাজ দ্রুত এগোচ্ছে।
পাঠকের প্রশ্নের উত্তর:
ভারতের প্রথম বুলেট ট্রেন কোন দুটি শহরের মধ্যে চলবে?
→ মুম্বই ও আহমেদাবাদের মধ্যে।
এই রুটে মোট কয়টি স্টেশন থাকবে?
→ মোট ১২টি স্টেশন।
বুলেট ট্রেনের সর্বোচ্চ গতি কত হবে?
→ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৩২০ কিমি।
এই প্রকল্পের মোট খরচ কত?
→ আনুমানিক ₹১.১ লক্ষ কোটি টাকা।
কবে থেকে পরিষেবা শুরু হতে পারে?
→ পূর্ণ পরিষেবা ২০২৮ সালে, আংশিক পরিষেবা ২০২৭ সালে চালু হতে পারে।














