দেশের প্রথম ঝুলন্ত রেল সেতুর নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়ে দিলেন ভারতের রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। তিনি জানিয়েছেন, এই সেতুর সবকটি কেবিল লাগানোর কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে। একটি টুইট বার্তা রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব জানিয়েছেন, ভারতের প্রথম ঝুলন্ত রেল সেতু অঞ্জি খাদ সেতুর নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। তিনি টুইট বার্তায় লিখেছেন, ‘মাত্র ১১ মাসে দেশের প্রথম কেবল রেল সেতু তৈরি হয়েছে। এই সেতুর ৯৬ টি কেবলের সব কটি জোড়া হয়ে গিয়েছে। এই কেবলগুলির সম্মিলিত দৈর্ঘ্য হল ৬৫৩ কিলোমিটার পর্যন্ত।’ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি রেলমন্ত্রীর এই টুইট রিটুইট করে লিখেছেন ‘অসাধারণ’।
উধমপুর থেকে শ্রীনগর পর্যন্ত রেল লাইন প্রকল্পের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ খুঁটি হল এই সেতু। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে এই রুটে আগামী বছর বন্দে ভারত ট্রেন ছুটতে পারে বলে আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন ভারতের রেলমন্ত্রী। আর সেটা হলে ভারতের প্রথম কেবল সাসপেনশন ব্রিজ এর উপর দিয়ে বন্দে ভারত করে শ্রীনগর পর্যন্ত পৌঁছে যাওয়া যাবে। একটিমাত্র স্তম্ভের উপরে দাঁড়িয়ে রয়েছে একটি বিশাল রেলওয়ে সেতু। জম্মু-কাশ্মীরে রীয়াসী জেলায় এই সেতুটি রয়েছে। এই সেতুর ওপর দিয়ে ১০০ কিলোমিটার গতি বেগে ছুটতে পারবে ট্রেন।
জানা গিয়েছে এই সেতু ১৫ মিটার চওড়া এবং এর মূল বিস্তৃতি ২৯০ মিটার। এই সেতুর মোট দৈর্ঘ্য ৪৭৩.২৫ মিটার এবং একটি মাত্র স্তম্ভ ধরে রেখেছে এই পুরো সেতুটিকে। ভিত থেকে তার দৈর্ঘ্য ১৯৩ মিটার এবং নদীগর্ভ থেকে আরও ৩৩১ মিটার গভীর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে এই সেতু। জানা গিয়েছে, ৯৬টি তার এই সেতুটিকে ধরে রেখেছে। ভারতীয় রেলের এক একটি ট্রেনের দৈর্ঘ্য ৮২ মিটার থেকে ২৯৫ মিটার পর্যন্ত। দাবি করা হচ্ছে ৪০ কেজি বিস্ফোরকও এই সেতুটিকে উড়িয়ে দিতে পারবে না। ঘন্টায় ২১৩ কিলোমিটার বেগে আসা ঝড় সেতুটিকে নাড়াতে পারবেনা।
রেলমন্ত্রক যদিও চাইছে ২০২৪ সালের মধ্যে এই ব্রিজে রেল চলাচল চালু করতে। জানানো হয়েছে ভারতীয় প্রযুক্তিতে তৈরি এই ব্রিজ, যেকোনো প্রাকৃতিক প্রতিকূলতার সঙ্গে লড়াই করতে সক্ষম। ভূমিকম্প হলেও এই সেতু একেবারে সুরক্ষিত থাকবে বলে দাবি করা হয়েছে। এই ব্রিজ এবং রেলপথের কাজ শেষ হলে সরাসরি ট্রেনে করে দিল্লি থেকে শ্রীনগর পর্যন্ত যাওয়া যাবে। অন্যদিকে সম্প্রতি কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব জানিয়েছেন, ২০২৪ সালের মধ্যে জম্মু ও কাশ্মীরে চালু হয়ে যাবে বন্দে ভারত এক্সপ্রেস। এর আগে এই বছরের শেষের দিকে রেল চলাচল চালু হয়ে যাবে এই সেতুর উপর দিয়ে।
উল্লেখ্য, উধমপুর থেকে শুরু হওয়া এই রেল লাইন শ্রীনগর হয়ে একেবারে নিয়ন্ত্রণ রেখার কাছাকাছি পর্যন্ত চলে যাবে বলে জানানো হয়েছে রেল সুত্রে। এই রেল লাইনের সর্বাধিক বিস্তৃতি হবে একেবারে বারামুল্লা পর্যন্ত। এর ফলে পাকিস্তান সীমান্ত পর্যন্ত এবার ট্রেনে করে যেতে পারবেন আমজনতা। এদিকে দিল্লি থেকে শ্রীনগর পর্যন্ত বন্দে ভারত ট্রেন চালানো হতে পারে বলে দাবি করা হচ্ছে রেলের তরফ থেকে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে এই বছরের শেষের দিকেই রেল চলাচল শুরু হয়ে যাবে অঞ্জি খাদ সেতুর উপর দিয়ে।