মলয় দে নদীয়া: অত্যন্ত কর্মচঞ্চল ব্যক্তিও গতকাল পর্যন্ত দৃঢ় প্রতিজ্ঞ ছিলেন অন্যান্য বন্ধের মতন পালন করবেন জনতার কারফিউ। ছাত্র যুব সমাজের একাংশ সোশ্যাল মিডিয়ায় নানান বীরত্বের পোস্ট করলেও, সন্ধ্যার বৃষ্টির পর, রাতে, মাঝ রাতে, ভোর রাতে বৃষ্টির সময়, সম্পূর্ণ অন্য রকম পরিবেশে বিছানায় শুয়ে হয়তো বা চিন্তা করেছেন, ঘুম না আসা রাতে পর্যন্ত। তাইতো আজ সকাল থেকে এক ঐক্যবদ্ধ আত্মোপলব্ধি সিদ্ধান্তের ফল দেখলো সংবাদমাধ্যমে।
চাক্ষুষ দেখার প্রশ্নই ওঠে না, শতকরা 99% মানুষ-ই নিজেদের গৃহবন্দী করে রেখেছেন একপ্রকার নিরুপায় হয়েই। শাসক দলের ভয়ে নয়, বিরোধীদলের বিরোধিতায় নয়, বিজ্ঞান কুসংস্কার এর যুক্তিতে নয়, মুখ্যমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রী বিতর্কে নয়, চরম বিপদসংকুল পরিস্থিতিতে শত্রু মিত্র, ধনী-দরিদ্র, জাতিভেদ ভুলে সকলেই আত্মোপলব্ধির মাধ্যমে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন।
আরও পড়ুন : করোনা ঠেকাতে দেশজুড়ে বন্ধ ট্রেন চলাচল, চলবে না কোন লোকাল, দূরপাল্লার ট্রেন
জেলার বিভিন্ন, জলপথে লঞ্চ ,নৌকা ফেরিঘাটের বন্ধ পারাপার। গুরুত্বপূর্ণ কৃষ্ণনগর, রানাঘাট, শান্তিপুর, চাকদহ সহ বিভিন্ন বাস টার্মিনাল থেকে হাতে গোনা দু’একটি বাস ছাড়া চলেনি কোন বাস। অন্যান্য বন্ধের ক্ষেত্রে দোকান বাজার নির্ধারিত জায়গায় না বসলেও খানিকটা দূরেও লক্ষ্য করা যায়। কিন্তু আজকের ছবিটা সম্পূর্ণ ভিন্ন, কোথাও ক্যামেরায় ধরা পড়েনি ন্যূনতম দু-একটি সবজির দোকানও। তবে কলঙ্কের কাজলকালি রূপে শহরের বিভিন্ন জায়গায় কেটে নয় গোটা মুরগি কেনার হিড়িক দেখা মিললো। বিভিন্ন হাসপাতালে প্রবাসী বাঙালি, বেড়াতে গিয়ে ফিরে আসা সাধারণ মানুষের হাসপাতালে স্ক্রিনিং টেস্ট এর জন্য অপেক্ষারত জনগণের ভিড় ছিলো চোখে পড়ার মতো।
শিয়ালদহ থেকে কৃষ্ণনগর , শান্তিপুর ,গেদে, কল্যাণী গামী দুএকটি ট্রেন বাদে চলছে সমস্ত লোকাল ট্রেন। কিন্তু তাতে শুধুমাত্র, জনাকয়েক বাড়ি ফেরার উদ্দেশ্যে, বাকি কিছু চিকিৎসা জনিত কারণেই যাত্রী হিসেবে পুরো 12 বগীর ট্রেনে সর্বসাকুল্যে জনাচল্লিশেক। সকালে দুধের গাড়ি খবরের কাগজের গাড়ি শহরে প্রবেশ করলেও দেখা মিললো না ক্রেতাদের। রাস্তাঘাটে পুলিশ প্রশাসনের কোন প্রয়োজন নেই বলেই , হয়তো উপস্থিতির হার অতি নগণ্য।