গত বছরের অ্যাকশন রিপ্লে যেন চলতি বছর। আগের বছরে সম্পূর্ণ লকডাউনে করোনার সাথে যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছিল বঙ্গবাসী। চলতি বছরেও কার্যত লকডাউনে বঙ্গবাসী করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছে। গতবছর বাংলায় গোদের ওপর বিষফোঁড়া মত উপস্থিত হয়েছিল আম্ফান ঘূর্ণিঝড়। চলতি বছরের এই মাসের শেষেই দক্ষিণবঙ্গে আছড়ে পড়তে চলেছে ঘূর্ণিঝড় যশ, এমনটাই ভবিষ্যৎবাণী করেছে আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর। গতবছর আমফানের আস্ফালনে দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলাসহ রাজ্যের প্রাণকেন্দ্র কলকাতা শহর তছনছ হয়ে গেছিল। ঘূর্ণিঝড়ের বহুদিন বাদেও লন্ডভন্ড হয়েছিল তিলোত্তমা। তবে গতবছরের শিক্ষা থেকে যাবতীয় ব্যবস্থাপনা আগে থাকতেই সেটাই রাখতে চায় কলকাতা পুর প্রশাসন। তাই তারা দুর্যোগ মোকাবিলার জন্য অনেকদিন আগে থেকেই প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করে দিয়েছে।
তবে বলে রাখা ভালো, কলকাতা পুরসভা প্রশাসক মন্ডলীর প্রধান ফিরহাদ হাকিম বর্তমানে নারদ কান্ডে প্রেসিডেন্সি জেলে বন্দি রয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে সাইক্লোন যশের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের মাঠে নামার জন্য পূর্ব পরিকল্পিত ছক তৈরি করছে পুরসভা। তারা গতকাল অর্থাৎ বুধবার আপৎকালীন বিভাগের তাদের সাথে বৈঠক করে জল-সরবরাহ, আলো, নিকাশি এবং উদ্যান বিভাগগুলির আগে থাকতে প্রস্তুতি সেরে রাখতে চায়। আপাতত আপৎকালীন পরিষেবার সাথে যুক্ত সমস্ত অফিসের কর্মীদের ছুটি বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। পাম্পিং স্টেশনে ২৪ ঘন্টা কর্মীদের রাখা হবে। কলকাতা শহরের বিভিন্ন জায়গায় মোট ৭৪ টি পাম্পিং স্টেশনে প্রস্তুতি চূড়ান্ত করে নিয়েছে।
অন্যদিকে মাত্রাবৃত্ত বৃষ্টি হলে রাস্তায় যাতে না জল জমে তার জন্য পুরসভার ১৬০ জন শ্রমিককে নিয়ে ২৪ ঘন্টার ডিউটি রোস্টার বানানো হয়েছে। এছাড়া ঝড়ের কারণে রাজপথ যাতে না অবরুদ্ধ হয় তার জন্য আগে থাকতে প্রস্তুতি নিচ্ছে উদ্যান বিভাগ। গতবছর বড় বড় গাছ রাস্তায় পড়ে থাকায় গাছ ছড়াতে অনেকদিন সময় লেগেছিল। তাই এবার মূলত গাছ কাটা এবং গাছ ছড়ানোর জন্য দুটি টিম তৈরি করা হয়েছে। প্রত্যেকটি টিমে ৬ জন করে লোক থাকবে। এছাড়া দুটি ক্রেন ও ২২ টি হাইড্রোলিক ল্যাডারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়া প্রত্যেকটি দপ্তরে শুকনো খাবার ছাড়াও ত্রিপল, বিপর্যয় মোকাবিলা সরঞ্জাম, জামা কাপড় ইত্যাদি যথেষ্ট পরিমাণে মজুদ রাখা হচ্ছে।