কলকাতায় নতুন আরো একটি কীর্তিমান স্থাপন করা হচ্ছে কলকাতা মেট্রো রেলওয়ে তরফ থেকে। জানা যাচ্ছে, শতাব্দী প্রাচীন কলকাতা পুরসভার জলাধার এবং একাধিক শতাব্দীপ্রাচীন বাড়ি রক্ষা করে মেট্রোরেলের যাত্রীদের সুবিধার্থে তিনটি সুরঙ্গ বানানোর কাজ চলছে। একই জায়গায় তৈরি হচ্ছে তিনটি সুরঙ্গ। আসলে মেট্রো যাত্রীদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করেই এই নতুন সুরঙ্গ তৈরি করা হচ্ছে।
তবে এর পিছনে অবশ্যই বৈজ্ঞানিক বিভিন্ন কারণ রয়েছে। আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুসারে মাটির নিচে যদি দুটি মেট্রো স্টেশনের মাঝে মাঝে দূরত্ব আড়াই কিলোমিটার এর বেশি হয় তাহলে মাঝামাঝি অংশে একটি স্টেশন তৈরি করতে হয়। কলকাতা ইস্ট ওয়েস্ট মেট্রো প্রকল্পের ক্ষেত্রে শিয়ালদহ থেকে এসপ্ল্যানেড মেট্রো স্টেশনের মধ্যে দূরত্ব টা অনেকটা বেশি। এই কারণেই মাঝামাঝি একটা জায়গায় স্টেশন করার প্রয়োজন ছিল, যেটা হলো সুবোধ মল্লিক স্কয়ার। কিন্তু সুবোধ মল্লিক স্কয়ারে পর্যাপ্ত পরিমাণ জমি পাওয়া গেল না, এই কারণেই যাত্রীদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে স্টেশন এর বদলে তৈরি করা হচ্ছে বিশাল আকার একটি শ্যাফট।
মাটির 13 কিলোমিটার নিচে এই তিনটি সুরঙ্গ তৈরি করা হচ্ছে। এই তিনটি সুড়ঙ্গের মধ্যে থাকবে থাকবে ভেন্টিলেশন টানেল, যেখানে আপনারা ইমারজেন্সি টানেল পাবেন একটি। সেই টানেল দিয়ে যাত্রী ওঠানামা করতে পারবেন। ১৩ মিটার নিচে থেকে এই সুরঙ্গ বানানোর কাজ শুরু হয়েছে। এই সুরঙ্গ মাটির ২২ মিটার নিচে পর্যন্ত থাকবে। ইতিমধ্যেই এই শ্যাফট তৈরির কাজ শুরু করে দেওয়া হয়েছে।
তবে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রজেক্ট ইঞ্জিনিয়ার দীনেশ দানি জানিয়েছেন, কলকাতার এরকম একটি জনবহুল এলাকায় বহু জলাধার কিংবা অ্যাকুইফার রয়েছে। এরকম জায়গাতে ক্রমাগত জল নিষ্কাশন হতে থাকে। দ্বিতীয়তঃ হল যে খানে কাজ করা হচ্ছে সেখানকার কিছুটা দূরে কলকাতা পুরসভার শতাব্দীপ্রাচীন একটি জলাধার রয়েছে। পুরানো এই জলাধারের স্থাপত্যের জন্য মেট্রোরেলের কাজের যাতে কোনো সমস্যা না হয় সেদিকেও নজর রাখতে হচ্ছে। এছাড়াও এই ধরনের একটি শ্যাফট তৈরি করতে গেলে প্রচুর পরিমাণে কম্পন অনুভূত হতে পারে, যার কারণে আশেপাশে সমস্ত বাড়ি ঘরের মধ্যে ফাটল ধরতে পারে।। এই কারণেই মূলত বেশ চিন্তিত রয়েছেন প্রজেক্ট ইঞ্জিনিয়ার। তবে আপাতকালীন পরিস্থিতির কথা ভেবে এই তিনটি সুড়ঙ্গ তৈরি করা হচ্ছে। মনে করা হচ্ছে খুব শীঘ্রই এই তিনটি সুরঙ্গ চালু হয়ে গেলে ধর্মতলা পর্যন্ত চালু হয়ে যাবে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো।