ব্যবসা-বানিজ্য ও অর্থনীতি

ঋণ পরিশোধ না হলে গ্যারেন্টারকে কি সব টাকা পরিশোধ করতে হবে? জেনে নিন ব্যাংকের সমস্ত নিয়ম

শুধুমাত্র প্রাথমিক প্রচেষ্টা ব্যর্থ হলে ব্যাংক আইনি পদক্ষেপ শুরু করে

Advertisement

আপনি যদি এখন লোন নেওয়ার পরিকল্পনা করে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনার মনে প্রশ্ন জাগছে যে কত টাকা আপনাকে সময় মত শোধ করতে হবে। আপনি পুরো ধার শোধ করতে পারবেন কিনা সেটাও একটা প্রশ্ন হয়ে উঠছিল সবার মনে। ইচ্ছাকৃতভাবে কিছু লোক লোন ডিফল্ট করে থাকেন। যারা ডিফল্ট তারা মনে করেন ব্যবস্থা নেওয়া হলেও তারা সবকিছু সামলে নিতে পারবেন। এই কারণেই সাধারণ লোকেদের ব্যাংক এই ধরনের টাকা দিতে এবং এই ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করতে ভয় পায়। ঋণ দেওয়া-নেবার ক্ষেত্রে এটা কিন্তু বাধ্যতামূলক। আমরা হোম লোন নিয়ে বাড়ি তৈরি করি অটো লোন নিয়ে গাড়ি কিনি। তারপরে সেই দিনের সুদ পরিশোধ করতে হয় আমাদের। যদি সেই সুদ এবং মূল পরিমান পরিশোধ না করা হয় তাহলে ঋণ খেলাপি হিসেবে সেটাকে গণনা করা হয়।

ঋণ পরিশোধ না করা বা ঋণ খেলাপি ঘোষণা করা কি একটা বড় সমস্যা সৃষ্টি করে? এটা সম্পূর্ণভাবে নির্ভর করে ঋণ গ্রহণকারী ব্যক্তির উপরে। যারা ঋণ খেলাপির নিয়ম কানুন এবং তাদের অধিকার জানেন তারা ব্যাংক এবং এই ধরনের আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সাথে কথাবার্তা বলে তাদের মতামত জোরালোভাবে উপস্থাপন করেন। তারা বুঝিয়ে দিতে পারেন কেন তারা এখন টাকা ফেরত দিতে পারছেন না। তখন ব্যাংক তাদেরকে লোন ডিফল্টার হিসেবে ঘোষণা করে থাকে। লোন ডিফল্ট এর ক্ষেত্রে দুই ধরনের সমস্যা হয়। প্রথমত আপনার ক্রেডিট স্কোর নেগেটিভ এর দিকে চলে যায়। যদি আপনি ঋণ গ্রহণ করেন এবং তা পরিশোধ না করেন তাহলে আপনার ক্রেডিট সম্পর্কিত সমস্ত তথ্য CIL এর কাছে পাঠানো হয়। ফলে পরবর্তীতে আপনার ঋণ গ্রহণ করতে অনেক অসুবিধা হয়। অন্যদিকে, যদি আপনি ঋণ নেওয়ার জন্য কোন সম্পত্তি বন্ধক রাখেন তবে ব্যাংক সেই সম্পত্তি দখল করতে পারে। পরবর্তীতে সেই জিনিসটিকে নিলামে তুলে দিতে পারে ব্যাংক।

আপনি কি গ্রেস পিরিয়ড পেয়ে থাকেন?

তবে বিষয়টা এমন নয় যে ঋণ পরিশোধ না হলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। ভারতের সমস্ত ব্যাংকের তরফ থেকে এরকম একটা শিথিলতা রয়েছে। প্রথমে ব্যাংকের তরফ থেকে ঋণগ্রহীতার কাছে একটা নোটিশ পাঠানো হয় যেখানে ঋণ এবং সুদের পরিমাণ উল্লেখ করা থাকে। যদি ব্যাংক মনে করে ঋণ গ্রহীতা ইচ্ছাকৃতভাবে ঋণ পরিশোধ করছেন না, ইএমআই দিচ্ছেন না, তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হতে পারে। তবে ঋণ গ্রহণকারী ব্যক্তির যদি একজন গ্যারেন্টার থাকে, তবে ব্যাংক প্রথমে তার সাথে যোগাযোগ করে। এর জন্য একটা আলাদা করে গ্যারেন্টার চুক্তি থাকে। সম্পূর্ণ বিষয়টা লেখা থাকে। সেখানে লেখা হয় যদি ঋণ গ্রহণকারী ব্যক্তি ঋণ পরিশোধ না করেন, তাহলে জামিনদারকে টাকা পরিশোধ করতে হয়।

তবে যদি কোনোভাবে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় যে ঋণগ্রহীতা কোনভাবেই সময় মত ঋণ পরিশোধ করতে পারলেন না এবং সুদের পরিমাণ ঋণের মূল পরিমাণ থেকে বেশি হয়ে গেল, সে ক্ষেত্রে কিন্তু একটা ওয়ান টাইম সেটেলমেন্টের জায়গা থেকে যায়। এই সময় ব্যাংক এই ধরনের ঋণকে নন পারফর্মিং এসেট হিসেবে গ্রহণ করে এবং ঋণ গ্রহণকারী ব্যক্তিকে দেউলিয়া হিসেবে ঘোষণা করে দেয়। এই মুহূর্তে সেই ব্যক্তি নিজেকে ঋণ পরিশোধে অক্ষম বলে দাবি করেন। তখন অল্প পরিমাণ টাকা দিয়ে ঋণ থেকে বেরিয়ে আসা যেতে পারে। সেই সময় ব্যাংক বেশিরভাগ সুদের পরিমাণ মুকুব করে দেয় এবং শুধুমাত্র মূল টাকা আপনাকে ফেরত দিতে হয়। তবে এটার সুবিধা গ্রহণ করলে, আপনি আর ভবিষ্যতে কোন ঋণ নিতে পারবেন না। আপনার ক্রেডিট স্কোর শূন্য হয়ে যাবে।

Related Articles

Back to top button