তাকে সরাতে বিষ (Poison) খাওয়ানো হয়েছিল! নিজের ফেসবুক (Facebook) অ্যাকাউন্টে এমন দাবি করলেন ইসরোর (ISRO) বিশিষ্ট বিজ্ঞানী তপন মিশ্র (Tapan Mishra)। আহমেদাবাদ স্পেস অ্যাপ্লিকেশন সেন্টারের প্রাক্তন পরিচালক তপন মিশ্র দাবি ২৩ মে ২০১৭-তে ইসরোর প্রধান দফতরে তাঁর খাবারে বিষাক্ত আর্সেনিক ট্রাইঅক্সাইড খাবার মিশিয়ে দেওয়া হয়েছিল। ঘটনার তিন বছর পর সেই কথা প্রকাশ্যে আনলেন তপনবাবু।
তপন মিশ্র দাবি করেছেন ধোসা ও চাটনির সঙ্গে বিষ মিশিয়ে খাওয়ানো হয়েছিল। তবে সেবার কপালজোরে তিনি বেঁচে যান। কে বা কারা, কেন তাঁকে খুনের চেষ্টা করেছিল, সেই সম্পর্কে তিনি কোনো তথ্য দিতে পারেননি। তবে তাঁকে যে মারার চেষ্টা হয়েছিল, সেই ব্যাপারে তিনি নিশ্চিত বলে দাবি করেছেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী। বিষয়টি ভারত সরকারের তদন্ত করে দেখা উচিত বলেও মনে করেন তিনি।
নিজের ফেসবুক পোস্টে লং কেপ্ট সিক্রেট বলে একটি পোস্ট করেছেন তিনি। সেখানেই এমন বিস্ফোরক অভিযোগ করেছেন তপন মিশ্র। সেই সময়ে ইসরো-র সদর দফতর বেঙ্গালুরুতে ওই সংস্থার হয়ে একটি প্রচারমূলক সাক্ষাৎকার চলছিল। আগামী মাসেই ইসরো-র সিনিয়র অ্যাডভাইজার পদ থেকে অবসর নেবেন তপন। বিজ্ঞানীর দাবি, ২০১৭-র জুলাইয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের এক নিরাপত্তা আধিকারিক তাঁকে বিষ মেশানো খাবারের বিষয়টি জানান। তাঁর উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসকের কাছে যেতেও পরামর্শ দেন ওই আধিকারিক। এ নিয়ে দিল্লিতে এমসের মেডিক্যাল রিপোর্টও ফেসবুকে পোস্ট করেছেন তপন।কিন্তু এখন প্রশ্ন হচ্ছে, চার বছর আগে কেন তিনি এই নিয়ে মুখ খোলেননি! তপন মিশ্রার দাবি, তিনি চলতি মাসেই অবসর নেবেন। তাই এখন মন খুলে কথা বলতে পারছেন।
তপন মিশ্রা আশঙ্কা করছেন, এমন দাবির পর ফের তাঁকে খুনের চেষ্টা করা হতে পারে। তাই তিনি সব কিছু প্রকাশ্যে জানিয়ে রাখতে চাইছেন। তপন মিশ্রর দাবি যে আর্সেনিকের প্রভাবে তাঁর নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হত। একই সঙ্গে স্কিনে নানান রকম সমস্যা হয়েছিল তাঁর। ফেসবুক পোস্টে তিনি মেডিকাল রিপোর্টও জুড়ে দিয়েছেন যেখানে এইমসের চিকিৎসকরাও তাঁর শরীরে আর্সেনিকের প্রভাব খুঁজে পেয়েছেন। এই ঘটনার বিস্তারিত তদন্ত হওয়া উচিত বলেই জানিয়েছেন তিনি।
তপন মিশ্রর বক্তব্য, রেডার ইমেজিং স্যাটেলাইট বা রিস্যাট গবেষণায় তাঁর অবদানের কারণে পৃথিবীর যে কোনও প্রান্তের ছবি দিনের মতো রাতেও দেখা সম্ভব হয়েছে। আর এই প্রযুক্তিকে হাতিয়ার করে সেনা বা গুপ্তচর সংস্থা ছবি তুলতে পারে। শুধু দেশের মধ্যেই নয়, পৃথিবীর যে কোনও প্রান্তে যে কোনও সময়ে এই ছবি তোলা সম্ভব বলে জানিয়েছেন তিনি। এমনকি মেঘলা আকাশেও ছবি তোলা যায়। আমেরিকা, রাশিয়া ও ইজরায়েলের বিভিন্ন সংস্থা ভারতকে ওই প্রযুক্তি দশ গুণ দামে বিক্রি করেছে। তাদের স্বার্থ ক্ষুণ্ণ হয় বলে উল্লেখ করেছেন বিজ্ঞানী।তাঁর দাবি যে এই আক্রমণের নেপথ্যে ছিল গুপ্তচররা যারা একজন গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা বিজ্ঞানীকে সরিয়ে দিতে চেয়েছিল। ইসরোর তরফ থেকে এখনও এই দাবি নিয়ে কিছু বলা হয়নি।