জ্যোতিষ

অশুভ শক্তিকে বিনাশ করতে ‘মা তারা’র আরাধনা করুন, শুভ ফল পাবেন

Advertisement

এই পৃথিবীর সমস্ত আনন্দ “মা” শব্দে লুকিয়ে আছে। তাই বোধহয় আমরা বারবার মাতৃ আরাধনায় নিজেদেরকে উৎসর্গ করি। আমাদের উচ্চারিত “মা”শব্দটি প্রধানত মা কালীকে উদ্দেশ্য করে, যে সত্য আমরা অনেক সময় উপলবদ্ধি করতে পারি না।

“মা” স্বয়ং ব্রহ্মস্বরূপিনী মহামায়া। মায়ের এই উৎপত্তির কাহিনী লুকিয়ে আছে আমাদের বিভিন্ন পুরাণ ও ধর্ম গ্রন্থে, যেমন শিবমহাপুরাণ, কালিকাপুরাণ এবং আমাদের অতি কাছের একটি গ্রন্থ “শ্রী শ্রী চন্ডীচরণামৃতেওঁ”। পুরাণ বলে একবার দেবী অম্বিকা অসুরদের বক্র বাক্য শ্রবণ করে অতীব ক্রোধিত হন, ফলে তাঁর গৌরবর্ণ কৃষ্ণরূপে পরিবর্তিত হয় এবং দেবীর ললাট প্রদেশ থেকে উৎপত্তি হয়ে চতুর্ভূজ মহাকালীর। দেবীর সেই  ভয়ঙ্কর রূপ দেখে অসুরেরা এদিক ওদিক পালাতে থাকে, দেবী সমরে অসুরদের নিধন করেন, বিশেষত চন্ড ও মুন্ডের শিরোচ্ছেদ করে দেবী  চামুন্ডা রূপে জগৎ বিখ্যাত হন। অন্য তথ্যে বলা আছে যে শিবজায়া পার্বতীর কোষ থেকে মায়ের উৎপত্তি তাই তাঁকে কৌশিকী রূপেও অর্চনা করা হয়ে থাকে। উল্লেখ্য:”পার্বতীর দেহকোষ হতে সমুদ্ভুতা। হইলেন অম্বিকা কৌশিকী নামে খ্যাতা”। (“সুধাময়ী চন্ডী” হতে গৃহীত)

মায়ের বিভূতির অন্ত নেই। শিববক্ষে তাঁর পদযুগল ইঙ্গিত করে মহাকালের পরাজয় মহাকালীর কাছে। মা মূলত ধ্বংসের দেবী, কিন্তু এই প্রক্রিয়া থেকেই আবার এক নতুন সৃষ্টির যাত্রা সূচিত হয়। মা নিরন্তর কাল কে নিয়ন্ত্রণ করে চলেছেন। প্রসঙ্গত বলি, বাংলার সকল প্রকার তন্ত্রক্রিয়া মা কালীকে ঘিরেই বিরাজমান আজও স্বমহিমায়ে!

দশ মহাবিদ্যার প্রথম মহাবিদ্যা আমাদের এই আনন্দময়ী মা। কিন্তু তিনি বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিভিন্ন রূপে বিরাজমান ভক্তকুলের মাঝে। প্রসঙ্গত বলি, সতীর দেহাংশ যেখানে যেখানে পতিত হয়েছিল, সেখানে সেখানে অধিকাংশই মা কালীর মন্দির নির্মিত হয়।

বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে আমরা কমলাকান্ত ও রামপ্রসাদের উল্লেখ পাই। আমাদের যত শ্যামা সংগীত আছে তা এদেরই সৃষ্ট। যুগযুগ ধরে পান্নালাল ভট্টাচার্যের মতো শিল্পীদের কাছ থেকে আমরা শ্যামা সংগীত শুনে আসছি, তৃপ্ত হচ্ছে আমাদের শুধুমাত্র এই মন না, চেতনাও বটে!

তাই আজ সকলে মিলে মাতৃভজনায় আরেকবার  মিলিত হই। প্রদীপের আলোয়ে মুছে যাক সব অন্ধকার। বাজির রোশনাইতে দূর হোক সকল নৈরাশ্য, সকল গ্লানি। বাঁধনহারা আনন্দে ভরে উঠুক আজকের এই দিনটি। পুজোর আয়োজনে যদিও বা কোনো ত্রুটি থাকে, মাতৃআশিস থেকে যেনো কোনোদিন ও বঞ্চিত না হয় এই মর্তবাসীগণ, এই একমাত্র অভিলাষ!!

– কুণাল রায়
সহ অধ্যাপক, ইংরেজী বিভাগ,
জর্জ কলেজ ,কলকাতা।

Related Articles

Back to top button