পশ্চিমবঙ্গে আগে প্রায় ১০ কোটি ৬০ লক্ষ ডিজিটাল রেশন কার্ড ছিল। কিন্তু আধার-বায়োমেট্রিক ব্যবস্থা চালু হওয়ার পর বৈধ রেশন কার্ডের সংখ্যা কমে ৯ কোটি ১২ লক্ষে দাঁড়িয়েছে। অবশিষ্ট কার্ডগুলিকে দীর্ঘদিন ধরে অব্যবহৃত থাকার কারণে সাময়িকভাবে ‘ব্লক’ বা নিষ্ক্রিয় করে রাখা হয়েছে। প্রায় চার বছর ধরে এই কার্ডগুলি নিষ্ক্রিয় অবস্থায় রয়েছে। এর ফলে রেশন ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা আসার পাশাপাশি খাদ্য সামগ্রী ও সরকারি অর্থ সাশ্রয় হয়েছে। এবার সেই পথেই হাঁটছে কেন্দ্রীয় সরকার।
কেন্দ্রের প্রস্তাবে রাজ্যের সম্মতি
পশ্চিমবঙ্গের খাদ্য সাথী প্রকল্পের আওতায় ডিজিটাল রেশন কার্ডধারীরা বিনামূল্যে রেশন পান। তবে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের মধ্যে রেশন ব্যবস্থাপনা নিয়ে বেশ কিছু মতানৈক্য রয়েছে। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় খাদ্যমন্ত্রক রাজ্য সরকারগুলোর কাছে বিভিন্ন প্রস্তাব পাঠিয়েছে। যদিও কিছু বিষয়ে রাজ্য আপত্তি জানিয়েছে, তবে নিষ্ক্রিয় রেশন কার্ড সংক্রান্ত প্রস্তাবে সম্মতি দিয়েছে।
নিষ্ক্রিয় রেশন কার্ড ফের চালুর নিয়ম
কেন্দ্রের নির্দেশিকা অনুযায়ী—
৬ মাস ধরে রেশন না নিলে কার্ড নিষ্ক্রিয় হবে।
এরপর ৩ মাসের সময়সীমা দেওয়া হবে গ্রাহকদের।
নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় নথি ও ই-কেওয়াইসি করলে কার্ড পুনরায় চালু হবে।
পশ্চিমবঙ্গ সরকার ২০২১ সালেই এই নিয়ম কার্যকর করেছিল, যার ফলে কয়েক মাসের মধ্যে প্রায় ১.৫ কোটি রেশন কার্ড ব্লক হয়ে যায়।
রাজ্যের নতুন নিয়ম
২০২৪ সালের আগস্টে রাজ্য সরকার ‘পিডিএস কন্ট্রোল অর্ডার’ জারি করে:
২ মাস ধরে রেশন না তুললে কার্ড সাময়িক নিষ্ক্রিয় হবে।
৬ মাসের মধ্যে পুনরায় সক্রিয় না করলে কার্ড সম্পূর্ণ বাতিল হবে।
স্থানীয় খাদ্য দপ্তর বা রেশন দোকানের ই-পস মেশিনে বায়োমেট্রিক যাচাই করে পুনরায় কার্ড চালু করা যাবে।
অনেক রেশন গ্রাহক এই নিয়ম সম্পর্কে অবগত নন, ফলে অনেকেই অযথা খাদ্যসামগ্রী পাওয়ার অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। সর্বভারতীয় রেশন ডিলারদের সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বম্ভর বসুর মতে, গ্রাহকদের সরাসরি জানানো উচিত কার্ড ব্লক সংক্রান্ত তথ্য, যাতে তাঁরা সময়মতো প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারেন।
এই নতুন নিয়ম কার্যকর হলে বহু রেশন কার্ড চিরতরে বাতিল হতে পারে!