সুনীল মন্ডলের বিজেপি এবং তৃণমূল নিয়ে মন্তব্যের পর থেকেই বঙ্গ রাজনীতিতে বোঝা যাচ্ছেনা কে কোথায় আছেন আর মনে মনে কোথায় আছেন, আবার কোথায় যাওয়ার প্ল্যানিং কষছেন। তবে শুধু সুনীল না, এবারে খোদ বিজেপি বিধায়ক তৃণমূল নেতা মুকুল রায়কে নিয়েই বিতর্কের সূত্রপাত। আজকে একটি সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি হঠাৎ করেই বলে ওঠেন, ‘দেখা যাক উপনির্বাচন হোক। ভারতীয় জনতা পার্টির পক্ষ থেকে আমি বলতে পারি তৃণমূল উপনির্বাচনে পর্যুদস্ত হবে। কৃষ্ণনগরে বিজেপি স্বমহিমায় প্রতিষ্ঠা পাবে। এখানে তৃণমূল হেরে যাবে।’
মুকুলের এই মন্তব্যের পরেই বিতর্কের ঝড় রাজনৈতিক মহলের একাংশে। আজকে কৃষ্ণনগর পৌরসভায় একটি দলীয় কাজে গেছিলেন মুকুল। সেখানেই একটি কাজে বক্তৃতা রাখছিলেন তিনি। বারবার সেখানকার তৃণমূল নেতারা তার ‘ভুল’ ধরিয়ে দিচ্ছেন। কিন্তু শেষে সেই ভুলটা করেই ফেললেন কৃষ্ণ নগরের বিজেপি বিধায়ক তথা বিধানসভার পাবলিক একাউন্ট কমিটির চেয়ারম্যান তৃণমূলের মুকুল।
বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির ভরাডুবির পরেই হঠাৎ করে জার্সি বদলে তৃণমূলের জন্য খেলতে নেমে পড়েন মুকুল। এখন তিনি তৃণমূলের সেই পুরনো মুকুল। ত্রিপুরার মতো একটি রাজ্য যেখানে তৃণমূল বীর বিক্রমে নিজেদের আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা করছে, সেখানের কিছুটা দায়িত্ব সামলাচ্ছেন তৃণমূলের এই চানক্য। তবে সেই চাণক্যের থেকেই এমন ভুল কার্যত আশা করেনা তৃণমূল। অনেকেই বলছেন, এটাই নাকি মুকুলের মনের কথা। তিনি নাকি এখনো মনেপ্রাণে বিজেপিতে আছেন, শুধু তৃণমূলের কান্ডারী হয়ে। কিন্তু সেক্ষেত্রে কথা ওঠে, তাহলে শুভেন্দু অধিকারী কেনো তার মনের কথা বুঝে নিয়ে তাকে পাবলিক একাউন্ট কমিটির চেয়ারম্যান থাকতে দিচ্ছেন না। তিনি কেনো এমন একটা ব্যাপার নিয়ে নাড়াচাড়া করতে শুরু করে দিয়েছেন, যেখানে তার নিজের পরিবারের ‘বিশেষ একজনের’ রাজনৈতিক ভবিষ্যত ঝুলে আছে?
কথা যাই উঠুক না কেনো, মুকুল কিন্তু এখন তৃণমূলের এবং বিজেপিকে তিনি উৎখাত করেই ছাড়বেন, এই কথা তিনি জিভ কেটে আবারো আজকে বুঝিয়ে দিলেন। স্লিপ অফ টাং এর উপমায় মুড়ে তিনি নিজের প্রকৃত বক্তব্য পেশ করলেন সেকেন্ডের মধ্যেই, যেটা আসলে বলতে এসেছিলেন। আগের মন্তব্যটি করার মুহূর্তের মধ্যেই তিনি বুঝতে পারেন মুখ ফস্কেছে। তাই নিজের বক্তব্য ফিরিয়ে নিয়ে আবারো ‘তৃণমূলের’ মুকুল বললেন, ‘বিজেপির অস্তিত্ব থাকবে না। মা মাটি মানুষের কাছে তাদের সঙ্কট প্রতিষ্ঠিত হবে। ওটা স্লিপ অফ টাং।’