ব্যারিকেড ভেঙে রণক্ষেত্র নিজাম প্যালেস! পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি, ব্যাপক ইটবৃষ্টি
নারদ স্টিং অপারেশন কাণ্ডের রাজ্যের ৩ বিধায়ক ফিরহাদ হাকিম, সুব্রত মুখোপাধ্যায় এবং মদন মিত্র কে গ্রেফতার করেছে সিবিআই। তার পাশাপাশি গ্রেফতার করা হয়েছে প্রাক্তন বিধায়ক তথা কলকাতা প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়কে। এই চার জনকে গ্রেফতারের পর একেবারে রণক্ষেত্র নিজাম প্যালেস। লকডাউন চলছে রাজ্যে কিন্তু এই সমস্ত লকডাউনকে একেবারেই তোয়াক্কা না করে, বিক্ষোভে ফেটে পড়েছেন তৃণমূল কর্মী সমর্থকরা।
ব্যারিকেড ভেঙে পুলিশকে ধাক্কা মেরে নিজাম প্যালেসে ঢোকার চেষ্টা করছেন তৃণমূল কর্মীরা। কেন্দ্রীয় বাহিনীর সঙ্গে দফায় দফায় মারধোর ধস্তাধস্তি, রাস্তায় শুয়ে প্রতিবাদ, নিজাম প্যালেস এর ভিতরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ধরনা অবস্থান সবকিছু মিলিয়ে একেবারে অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠেছে বাংলা। তৃণমূলের সর্বস্তরের কর্মীরা এই বিক্ষোভে অংশ গ্রহণ করেছেন। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি আনানোর জন্য ইতিমধ্যেই নিরাপত্তা বৃদ্ধি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। প্রসঙ্গত, আজকেই এই চার নেতার বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করেছে সিবিআই এবং আজকেই চারজনকে নগর দায়রা আদালতে পেশ করার প্রক্রিয়া চলবে।
আদালতের বাইরে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি না হয় সেই জন্য প্রচুর পুলিশ মোতায়ন করে ফেলা হয়েছে। অন্যদিকে নিজাম প্যালেস এর পরিস্থিতি বিচার করেই পুলিশের গোয়েন্দা প্রধান মুরলীধর শর্মা মাইক ব্যবহার করে ভিড় সরানোর চেষ্টা করলেন। মাইকিং কোন ভাবে কাজ করলো না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আসার পরেই অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠল নিজাম প্যালেস এর বাইরের চত্বর।
আর এই বিষয়টা নিয়ে সবথেকে বেশি প্রশ্ন চিহ্ন উঠেছে রাজ্যপালের উপরে। প্রথম থেকেই রাজ্যপাল যে বিজেপির সমর্থক সেটা কোন কোন ভাবে প্রকাশ পাচ্ছে। উনি বিজেপি সমর্থকদের বাড়ি যাচ্ছেন, তাদের সঙ্গে কথা বলছেন, সাথেও বিজেপি বিধায়ককে নিয়ে যাচ্ছেন। এবারে সেই প্রসঙ্গেবিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যপাল কে উদ্দেশ্য করে বললেন এরকম একটা গর্হিত কাজ তিনি কিভাবে করতে পারেন। তার কথায়, “আমরা হাই কোর্টে লিখিত জানিয়েছিলাম আমাদের কাছ থেকে ওরা কোনো অনুমোদন গ্রহণ করেনি। রাজ্যপাল যেদিন ওদের অনুমোদন দিয়েছিলেন সেদিন আমি বিধানসভার অধ্যক্ষ পদে বহাল ছিলাম। সেই সময় বিধানসভা বাইপাস করে রাজ্যপাল কিভাবে এই জিনিসটা অনুমোদন দিতে পারেন? আমিতো অবাক হয়ে যাচ্ছি এটা দেখে!”
পুলিশের সঙ্গে ধাক্কা ধাক্কি, ব্যারিকেড ভেঙে ফেলার চেষ্টা করল তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা। তাদের গলায় একটা অভিযোগ, যদি এই তিনজনকে গ্রেফতার করা হয় তাহলে শুভেন্দু এবং মুকুলকে একই দিনে গ্রেফতার করতে হবে। না হলে বাংলায় আগুন জ্বলবে। ইতিমধ্যেই এই বিক্ষোভের আগুন নিজাম প্যালেস থেকে অন্যান্য জায়গায় ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে। জেলায় জেলায় শুরু হয়েছে তৃণমূল কর্মীদের বিক্ষোভ অবস্থান। টায়ার জ্বালিয়ে প্রতিবাদ করা হচ্ছে। তাদের একটাই অভিযোগ, শুভেন্দু মুকুলকে কি কোনভাবে সিবিআই ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে ? কারণ ওই একই ভিডিওতে কিন্তু শুভেন্দু অধিকারী এবং দেখা গিয়েছিল। সিবিআই সাফাই দিয়েছে, যেহেতু ওরা দুজনে তখন লোকসভা এবং রাজ্যসভার সাংসদ ছিলেন তাই লোকসভা এবং রাজ্যসভার স্পিকার এর অনুমোদন লাগবে, সে অনুমোদন এখনও মিলেনি।