প্রধানমন্ত্রী বারংবার বাংলার মানুষকে আশ্বাস দিয়ে আসছেন তারা সোনার বাংলা গড়ে তুলবেন। কিন্তু পঞ্চম দফার ভোট গ্রহণ যে দিন ছিল সেদিন এই সোনার বাংলায় প্রতিশ্রুতির উপরে একটা বড়সড় প্রশ্ন চিহ্ন তুলে দিয়ে গেলেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। নরেন্দ্র মোদির মুখে প্রায় সবসময়ই শোনা যায় বাংলার বিভিন্ন শিল্পীদের নাম। কিন্তু কবি নজরুল ইসলামের জন্ম ভিটা জামুড়িয়ায় শনিবার জনসভা করলেও সেখানে একবারও নজরুলের নাম তুললেন না নরেন্দ্র মোদি। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সহ নানান মনীষীর ফ্ল্যাক্সে সারা এলাকা মোরা ছিল। কিন্তু নিজের জন্মভিটেতেই ব্রাত্য রয়ে গেলেন কাজী নজরুল ইসলাম।
নজরুল ইসলাম লিখেছিলেন, ‘গাহি সাম্যের গান, যেখানে মিশেছে হিন্দু, বৌদ্ধ, মুসলিম, ক্রিশ্চান।’ কিন্তু নজরুল ইসলামের জন্মভিটে তার এরকম অপমান অনেকেই মেনে নিতে পারছে না। তার আত্মীয় থেকে সাধারণ মানুষ সকলেই এ বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। ফলে পরোক্ষে প্রশ্ন উঠেছে সোনার বাংলা গড়ার প্রতিশ্রুতি নিয়ে। জামুরিয়া বিধানসভা কেন্দ্রের চুরুলিয়া গ্রামে বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্ম। সেখানে নজরুল একাডেমী করে তোলা হয়েছে। কলকাতায় নজরুল মঞ্চ নামক একটি অডিটোরিয়াম রয়েছে। আসানসোলে কবির নামে বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে। এমনকি মেট্রো স্টেশনের নাম রয়েছে কবি নজরুল ইসলামের নামে।
কিন্তু সেই পশ্চিমবঙ্গে এসে কবির জন্মভিটেতে দাঁড়িয়ে বিজেপি কবি কে অপমান করেছে বলে প্রশ্ন তুলেছে সাধারণ মানুষ। যখন বিজেপি কেন্দ্রীয় কমিটি বারংবার বাংলার মনীষীদের নাম আওড়াতে থাকেন, ব্যাকগ্রাউন্ডে দক্ষিণেশ্বর মন্দির, কখনো আবার কোচবিহারের রাজবাড়ি দেখা যায় তাদের বক্তৃতার সময়, রবি ঠাকুরের কবিতা বলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, এমনকি বাংলা ভাষায় বক্তব্য শুরু করে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী কে সরাবার জন্য আশীর্বাদ চান তিনি বারবার। এরকম পরিস্থিতিতে নজরুলকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ব্রাত্য করে রাখলেন? বিষয়টি নিয়ে চরম অসন্তোষ কবির পরিবারে। নজরুলের ভাইপো তথা নজরুল একাডেমীর সাধারণ সম্পাদক কাজী রেজাউল করিম বলেছেন, “কোন জায়গাতেই প্রধানমন্ত্রী নজরুল ইসলামের নাম নেন না। জামুরিয়া এসে অন্তত কবির মর্যাদাটুকু দেবেন না এটা আশা করেছিলাম। কিন্তু তা হলোনা। আমরা অত্যন্ত ব্যথিত।”