আমেরিকার হিংসা নিয়ে ব্যথিত প্রধানমন্ত্রী, টুইট করে নিজের উদ্বেগের কথা জানালেন মোদি
নয়াদিল্লি: সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী ২০ জানুয়ারি (January) মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসাবে শপথ নেওয়ার কথা জো বাইডেনের (Joe Biden)। কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে বুধবার সেই জয়ের শংসাপত্র দেওয়ার কথা ছিল বাইডেনকে। কিন্তু তার আগেই ট্রাম্প সমর্থকদের তাণ্ডবে এখন উত্তাল গোটা মার্কিন মুলুক। নিজের জমানার একেবারে শেষ লগ্নে এসে পৌঁছেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প (Donald Trump)। কংগ্রেসের অধিবেশন চলাকালীন মার্কিন পার্লামেন্ট ক্যাপিটল হিলে নজিরবিহীন হামলা চালিয়েছে শত শত ট্রাম্প সমর্থক। এই হামলায় প্রথমেই পুলিশের গুলিতে এক মহিলা নিহত হন। পরে ‘মেডিকেল ইমার্জেন্সি’পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় আহত আরও তিনজনের মৃত্যু হয়। গোটা ঘটনায় স্তম্ভিত গোটা বিশ্ব। ক্যাপিটল হিলে উগ্র ট্রাম্প সমর্থদের হামলা নিয়ে নিন্দার ঝড় উঠেছে। ভারতের প্রধানমন্ত্র নরেন্দ্র মোদীও এই নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিলেন। গোটা ঘটনা দেখে ‘মর্মাহত’ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi) ট্যুইটে লিখেছেন, ‘ওয়াশিংটন ডিসির হিংসার ঘটনা খুবই পীড়াদয়ক৷ ক্ষমতার বদল শান্তিতে এবং নিয়মানুযায়ী হোক৷ গণতন্ত্রে আইনবিরুদ্ধ প্রতিবাদ মেনে নেওয়া যায় না৷’
Distressed to see news about rioting and violence in Washington DC. Orderly and peaceful transfer of power must continue. The democratic process cannot be allowed to be subverted through unlawful protests.
— Narendra Modi (@narendramodi) January 7, 2021
শুধু প্রধানমন্ত্রী মোদি নন, বহু রাষ্ট্রনেতা এই ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন৷ খোদ রিপাবলিকান পার্টির একাধিক গুরুত্বপূর্ণ নেতা এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। নেব্রাস্কার রিপাবলিকান সিনেটর বেন স্যাসি বলেছেন, ‘এটা একটা কুৎসিত দিন।’ এমনকি জর্জিয়ার সিনেটে সদ্য হেরে যাওয়া কেলি লফলার এ ঘটনার সমালোচনা করেছেন। ঘরে বাইরে নিন্দিত হচ্ছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। মনে করা হচ্ছে তাঁর একের পর এক উস্কানিমূলক মন্তব্যের জেরেই এত বড় হামলা ঘটেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। ইতিমধ্যেই ট্রাম্পের ট্যুইটার অ্যাকাউন্ট নিষিদ্ধ হয়েছে। ইন্সটাগ্রামও তাঁর অ্যাকাউন্ট ২৪ ঘন্টার জন্য রাখতে বাধ্য হয়েছে।
এই ঘটনায় প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন আমেরিকায় রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচিত বাইডেনও । জো বাইডেন দেশবাসীর উদ্দেশ্যে লিখেছেন, “এটা আমেরিকার ছবি হতে পারে না। যারা একাজ করেছেন তাঁরা উগ্র। আমরা আইন মেনে চলব। গণতন্ত্রে এটাই নিয়ম।” প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ঘটনাকে দেশের লজ্জা বলে ব্যখ্যা করেছেন। ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছন আরেক প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ। নিন্দা এসেছে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর তরফেও।
এদিকে মোদী আমেরিকা নিয়ে ট্যুইট করতেই তাঁকে বিঁধে পাল্টা ট্যুইট করেন কংগ্রেসের লোকসভার দল নেতা অধীর চৌধুরী। গত বছর জুন থেকেই লাদাখ নিয়ে চিনের সঙ্গে চাপা উত্তেজনা চলছে ভারতের। এমনকি চিনের ফৌজ ভারতের অভ্যন্তরে ঢুকে পড়েছিল এমন অভিযোগ বারবার উঠেছে। এই নিয়েই অধীর চৌধুরী মোদীকে নিশানা করেছেন। তিনি চিনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে এই নিয়ে আলোচনায় যত্নবান হলে এমন পরিস্থিতি তৈরি হোত না বলেই কটাক্ষ করেছেন অধীর। মার্কিন সফরে গিয়ে মোদীর বলা ‘ফির একবার ট্রাম্প সরকার’ নিয়েও আক্রমন শানিয়েছেন কংগ্রেস নেতা।