২০২০ সালের ১৪ই জুন দুপুরবেলাতে গণমাধ্যমের একটি খবর সারা দেশের মানুষকে অবাক করে দেন। মুম্বাইয়ের বান্দ্রায় নিজের ফ্ল্যাটে অভিনেতা সুশান্ত সিংহ রাজপুত আত্মঘাতী হন। তাঁর বাড়ি থেকেই ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়েছিল। অভিনেতার পরিবার সহ অনুগামীরা মনে করেন এটি একটি খুন। কিন্তু পোস্টমর্টেম রিপোর্ট বলছে এটি আত্মহত্যা। এই নিয়ে চলছে তদন্ত। সুশান্তের মৃত্যুর পর একপ্রকার ঝলসে গিয়েছে বলিউডের অন্দরমহল। উঠে এসেছে একের পর এক বিতর্ক। ফাঁস হয়েছে বলিউডের মাদক চক্র।
সুশান্ত নেই একবছর হতে চললো। তবু সুশান্তের মৃত্যুতদন্ত এখন চলছে। এর মধ্যেই গত ২৬ শে মে হায়দরাবাদ থেকে সুশান্ত সিং রাজপুতের ক্রিয়েটিভ ম্যানেজার তথা ফ্ল্যাট মেফ সিদ্ধার্থ পিঠানিকে গ্রেফতার করে কেন্দ্রীয় মাদক নিয়ন্ত্রক সংস্থা। সুশান্তের মৃত্যুর পর জানা যায় তিনি এই মাদক চক্রের সাথে যুক্ত ছিলেন। সিদ্ধার্থ পিঠানি গ্রেফতার হওয়ার দিন কয়েকের মধ্যেই ফের অভিনেতার বাড়ি পরিচারকদের তলব এনসিবির সদস্যরা।
এনসিবি সূত্রে খবর থেকে জানা গিয়েছে, রবিবার গভীর রাতে সুশান্তের দুই পরিচারক নীরজ এবং কেশবকে সুশান্ত তদন্তে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার বাল্লাড এস্টেটে মুম্বইয়ের দফতরে নিয়ে আসা হয়। সেখানেই সারারাত জিজ্ঞাসাবাদ চালানো হয় এই দুই পরিচারককে। তবে এই দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সমন পাঠিয়েছিল এনসিবি।
অনেক আগেই সিদ্ধার্থ পিঠানিকে গ্রেফতার করা উচিত ছিল বলে মন্তব্য করেন সুশান্তের পরিবারের উকিল বিকাশ সিং। কারণ সুশান্তের মৃত্যুর আগের দিন বান্দ্রার ফ্ল্যাট ছেড়ে তাঁর প্রেমিকা রিয়া চক্রবর্তী বেরিয়ে যান সেই সময় সিদ্ধার্থ সেখানে উপস্থিত ছিলেন। এমনকি সিদ্ধার্থের আত্মহত্যার সময়েও সেই ফ্ল্যাটে ছিলেন সিদ্ধার্থ পিঠানি। এই বন্ধুই ১৪ই জুন সিদ্ধার্থই প্রথম সুশান্তের ঘরে ঢুকেছিল আর ঘরের বাইরে তালা খোলার জন্যে লোক নিয়ে এসেছিল। আর ওই সুশান্তের ঝুলন্ত দেহ ওই নামিয়ে আনে। তাই সুশান্তের মৃত্যউর সাথে এই বন্ধুর গভীর যোগ আছে তা এনসিবি আর সুশান্তের উকিল আশঙ্কা করছিলেন।
সিদ্ধার্থ পিঠানিকে গ্রেফতারির পর তাঁকে মুম্বই নিয়ে আসা হয়। এবং সেখানে আদালতে তোলা হলে তার পাঁচ দিনের এনসিবি হেফাজত মঞ্জুর করেছে আদালত। আগামী ২রা জুন পর্যন্ত এনসিবির কাস্টডি-তে থাকবে সিদ্ধার্থ। এই বন্ধুটি ছাড়াও সুশান্তের পরিবার ও তাঁর গোটা পরিবারের বিরুদ্ধে সুশান্তকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ আনেন।রিয়াকে গ্রেফতারের পর বলিউডে মাদক চক্রের ঘটনা সামনে আসে। এই মামলায় গত সেপ্টেম্বর মাসে রিয়া সহ তাঁর ভাই শৌভিক চক্রবর্তী, সুশান্তের বাড়ির ম্যানেজার স্যামুয়েল মিরান্ডা এবং দীপেশ সাওয়ান্ত গ্রেফতার হন। আপতত জামিনে মুক্ত রয়েছেন চারজনেই।