নীল-তৃণার ‘মিনি হানিমুন’, দার্জিলিং-এ প্রেমেমাখা ভিডিও তুমুল ভাইরাল
ভ্যালেন্টাইনস ডে অর্থাৎ 14 ই ফেব্রুয়ারি পি.সি. চন্দ্র গার্ডেনে ছিল নীল ভট্টাচার্য (Nil bhattacharya) ও তৃণা সাহা (Trina saha)-র গ্র্যান্ড রিসেপশন। নীল ও তৃণার ফ্যানপেজ থেকে রিসেপশনের কিছু ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করা হয়েছে। ছবিগুলিতে দেখা যাচ্ছে টেলি ও টলিটাউনের বেশ কয়েকজন তারকা রিসেপশনে উপস্থিত ছিলেন। রিসেপশনের সন্ধ্যায় নীলের পরনে ছিল মেরুন রঙের শেরওয়ানি ও সোনালি উত্তরীয়। তৃণার পরনে ছিল মেরুন রঙের লেহেঙ্গা চোলি যাতে ছিল সোনালি কারুকার্য। তার সঙ্গে মানানসই কুন্দনের গয়না পরেছিলেন তৃণা। তার সঙ্গে সিঁথিতে ছিল সিঁদুর। রিসেপশনের দিন মোগলাই খানার ব্যবস্থা ছিল। মেনুতে ছিল গ্রীণ স্যালাড এবং ফ্রুট স্যালাড মিশিয়ে এগারো রকমের স্যালাড। নিরামিশাষীদের জন্য মেন কোর্সে ছিল বাটার নান, রুমাল রুটি, ডাল মাখানি, পনির পসন্দ, খুশকা, স্টীমড রাইস, আলু গোবি কষা। আমিষাশিদের জন্য ব্যবস্থা ছিল বাটার নান, রুমালি রুটি, ডাল মাখানি, ককটেল ফিশ ফ্রাই, মাটন বিরিয়ানি, স্টীমড রাইস,চিকেন চাঁপ, চিকেন কষা, চিংড়ি মাছের মালাইকারি। শেষ পাতে ছিল আলু বোখরার চাটনি, পাঁপড়, কেসরিয়া জালেবি রাবড়ি, গাজরের হালুয়া, সন্দেশ, ভ্যানিলা আইসক্রিম উইথ ফ্রেশ ফ্রুটস, সন্দেশ, পান। নীল ওতৃণার ছবিগুলি ভাইরাল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নেটিজেনরা নবদম্পতিকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
4 ঠা ফেব্রুয়ারি অর্কিড গার্ডেন্সে ছিল নীল এবং অভিনেত্রী তৃণার বিয়ের অনুষ্ঠান। একমাত্র ছেলে নীলের বিয়েতে বরযাত্রী অর্কিড গার্ডেন্সে ঢোকার সময় টাকার হরির লুট দেন নীলের বাবা। সোশ্যাল মিডিয়ায় নীলের বাবার এই ভিডিওটি ভাইরাল হয়েছে। সবাইকে অবাক করে দিয়ে নীল ও তৃণার আমন্ত্রণে তাঁদের বিয়েতে উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। তৃণা তাঁর জন্মদিনের দিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ি গিয়ে তাঁকে আমন্ত্রণ জানিয়ে এসেছিলেন। তবে মমতা কিছুক্ষণের জন্য এসে নীল ও তৃণাকে আশীর্বাদ করে চলে যান।
এদিন বোটে চেপে জলপথে বিয়ের আসরে পৌঁছেছেন নীল। পানপাতায় মুখ ঢেকে পিঁড়িতে বসিয়ে নিয়ে আসা হল তৃণাকে। বাঙালি বিয়ের রীতি মেনে বরের চারপাশে পিঁড়িতে বসা কনেকে ঘোরানো হল। শুভদৃষ্টির সময় তৃণা লজ্জা না পেলেও নীল ‘ব্লাশ’ করছিলেন। এরপরেই ছিল মালাবদলের পালা। মালাবদলের সময় নীলের বন্ধুরা নীলকে উঁচুতে তুলে ধরেছিলেন। অপরদিকে তৃণার ভাইয়েরাও উঁচুতে তুলে ধরেছিলেন তৃণার পিঁড়ি। তাও বহু কষ্টে নীলকে নাগালে পেয়ে তৃণা পরিয়ে দিলেন মালা। সবচেয়ে মজাদার ছিল সিঁদুর দান পর্ব। নীল তৃণার সিঁথিতে সিঁদুর পরিয়ে দিতেই চারপাশে বন্ধুরা চিৎকার করে ওঠেন ‘ইনকিলাব জিন্দাবাদ’ বলে। একই সঙ্গে হেসে ফেলেন তৃণাও। নীল ও তৃণার বিয়ের ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় তুমুল ভাইরাল হয়েছে।
টিম ‘কৃষ্ণকলি’ ও টিম ‘খড়কুটো’-এর সবাই আমন্ত্রিত ছিলেন নীল ও তৃণার বিয়েতে। ‘খড়কুটো’-র সোহিনী সেনগুপ্ত (Sohini sengupta), অম্বরীশ ভট্টাচার্য (Ambarish Bhattacharya), রাজা গোস্বামী (Raja Goswami), দেবোত্তম মজুমদার (Debottam Majumder), রাজন্যা ঘোষ (Rajanya Ghosh), রত্না ঘোষাল (Ratna Ghoshal), জয়শ্রী মুখার্জী (Jayashree mukherjee) বিশেষ ভাবে নজর কেড়েছেন নীল ও তৃণার বিয়েতে। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন পরিচালক সৃজিত মুখার্জী (Srijit Mukherjee) ও তাঁর স্ত্রী রাফিয়াত রাশিদ মিথিলা(Rafiyat Rashid mithila)। মিথিলার পরনের আকাশী রঙের ঢাকাই শাড়ি ও হাতের আকাশী রঙের ব্যাগ সকলের আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে। এদিন নীল ও তৃণা বাসরঘরে দুজনে দুজনের জন্য গান গেয়েছেন মাইক্রোফোন হাতে নিয়ে। ‘কৃষ্ণকলি’ ও ‘খড়কুটো’ -এর অনেকেই মাতিয়ে দিয়েছেন আসর। কেউ কেউ আবার গিটার বাজিয়ে নীল ও তৃণার সঙ্গে সঙ্গত করেছেন। তবে বাসরঘরে নীল চনমনে থাকলেও বিয়ের ধকলে ক্লান্ত লাগছিল তৃণাকে। বাসরঘর থেকেই বাসরের কিছু ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেছেন নীল। তবে বিয়ের পরের দিন সকালেই তৃণা শেয়ার করলেন একটি ছবি যেখানে তৃণা চোখ মারছেন ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে। ছবিতে নবদম্পতি ঘনিষ্ঠ হয়ে রয়েছেন। ছবিতে তৃণার মাথায় জ্বলজ্বল করছে লাল সিঁদুর ও কপালে লাল টিপ। কিন্তু তার পরেই তৃণা ঢুকেছিলেন রান্নাঘরে। শ্বশুর-শাশুড়ির জন্য এদিন নিজেই চা করেছেন তৃণা। রান্নাঘর থেকে তৃণা চায়ের কাপের ট্রে নিয়ে বেরোনোর সময় নীল তাঁর ছবি তুলে নেন। নীলের তোলা সেই ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। নীল জানিয়েছেন, শ্বশুরবাড়িতে তৃণাকে বরণ করার পর বর-কনেকে কোলে বসানোর প্রথাও পালিত হয়েছে।
6 ই ফেব্রুয়ারি ছিল ‘ত্রিনীল’-এর বৌভাতের ঘরোয়া অনুষ্ঠান ও ফুলশয্যা। এদিন লাল-সবুজ রঙের সিল্কের শাড়ি পরে তৃণা তাঁর নতুন বর নীলের পাতে পরিবেশ করলেন গরম ঘি-ভাত। তৃণার এই ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। কিন্তু সবচেয়ে বেশি নজর কেড়েছে তৃণার ‘টুম্পা’ নাচের ভিডিও। এর আগে ‘খড়কুটো’ সিরিয়ালের ‘গুনগুন’-এর ভূমিকায় তৃণা ‘টুম্পা’ নাচতে নাচতে ছাদনাতলায় গিয়েছিলেন। সেই ভিডিও মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়েছিল সোশ্যাল মিডিয়ায়। কিন্তু এবার রিয়েল লাইফেই ফুলশয্যার রাতে শ্বশুর-শাশুড়ির মনোরঞ্জন করতে ‘টুম্পা’ নাচলেন তৃণা। নীল ও তৃণার ফ্যানপেজ থেকে তৃণার নাচের ভিডিওটি ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। এছাড়াও ইনস্টা স্টোরিতে বৌভাতের তত্ত্বের ছবি শেয়ার করেছেন তৃণা। এছাড়াও ফুলের সাজে নিজের ও নীলের ছবি শেয়ার করেছেন তিনি। মাথায় ফুলের মুকুট, গলায় ফুলের মালা পরে তৃণাকে সুন্দর লাগছিল। প্রিয় ননদের সঙ্গে ছবি তুলেও শেয়ার করেছেন তৃণা। এরই মধ্যে নীল শেয়ার করেছেন একটি ভিডিও। সেখানে তাঁকে ও তৃণাকে অরিজিৎ সিং(Arijit singh)-এর বিখ্যাত গান ‘দরখাস্ত’-এর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে পারফর্ম করতে দেখা যাচ্ছে। ভিডিওতে নীলের পরনে রয়েছে লাল রঙের, জরির কারুকার্য করা শেরওয়ানি ও তৃণার পরনে রয়েছে লাল রঙের শাড়ি এবং মানানসই গয়না। নীলের বাড়ির রুফটপ সাজিয়ে সেখানে ভিডিওটি তোলা হয়েছে। নীল ও তৃণার এই ভিডিওটিও যথারীতি ভাইরাল হয়েছে।
দেখতে দেখতে নীল ও তৃণার বিয়ের এক মাস পূর্ণ হয়েছে। ওয়ান মান্থ অ্যানির্ভাসারি উপলক্ষ্যে নীল শেয়ার করেছেন ছবি। ছবিতে তাঁর সঙ্গে রয়েছেন তৃণা। ছবিটি তোলার সময় তৃণা পাউট করেছেন। তৃণার পরনে ছিল রাস্ট রেড রঙের শাড়ি ও হলুদ রঙের ব্লাউজ এবং গলায় মঙ্গলসূত্র ও সিঁথিতে সিঁদুর। তৃণার কানে ছিল ভারী ঝুমকো। চুলটা বিনুনি করেছিলেন তৃণা। নীলের পরনে ছিল পিচ রঙের চিকনকারি পাঞ্জাবী ও নীল রঙের কারুকার্য করা পশমিনা। নীল ছবিটি শেয়ার করে ক্যাপশন দিয়ে লিখেছেন, এক মাস পরিপূর্ণ। নেটিজেনরা নীল ও তৃণাকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
এতদিন ধরে নীল ও তৃণার হানিমুন ডেস্টিনেশন ছিল গ্রীস। অন্তত তাঁরা সবাইকে তেমনটাই জানিয়েছিলেন। ভোটের মুখে ‘ত্রিনীল’ যোগ দিয়েছেন তৃণমূলে। এতদিন ধরে প্রচারের কাজেও দেখা গিয়েছে তাঁদের। তার উপর করোনা অতিমারীর আতঙ্কে ছেয়ে গিয়েছে চারিদিক। তাই আপাতত গ্রীস না হলেও নীল ও তৃণা তাঁদের বন্ধুদের সঙ্গে শর্ট ট্রিপে পাড়ি দিয়েছেন দার্জিলিঙ। সেখান থেকে একের পর এক ভিডিও ও ছবি শেয়ার করছেন নীল ও তৃণা। দার্জিলিঙের নৈসর্গিক সৌন্দর্যের মাঝে বন্ধুদের সঙ্গে বাঁধনহারা হয়ে উঠেছেন নীল ও তৃণা। রিভার রাফটিং করতে করতেই দার্জিলিঙের বরফ ঠান্ডা জলে ঝাঁপ দিয়েছেন নীল। তবে তৃণা নীলের সঙ্গে রোম্যান্টিক খুনসুটি ও ইন্সটাগ্রাম রিলের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থেকেছেন।