প্রবল শ্বাসকষ্টের সমস্যা নিয়ে উডল্যান্ড হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। তার শরীরে কার্বন-ডাই-অক্সাইড জমে যাওয়া উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল চিকিৎসকদের। ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে রাখা হয়েছিল তাকে। দুপুরে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর থেকে মধ্যরাতে গিয়ে জ্ঞান ফিরেছে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের। জ্ঞান ফেরার পর উন্নতি দেখে চিকিৎসকরা ধীরে ধীরে তাকে ভেন্টিলেটার থেকে বার করেছে। বর্তমানে তার শরীরে অক্সিজেন মাত্রা অনেক কম হলেও কার্বন ডাই অক্সাইড মাত্রা নিয়ন্ত্রণ আছে।
গতকাল দুপুরে হঠাৎই শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যার জন্য বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের শরীর খারাপ শুরু হয়। তৎক্ষণাৎ বুদ্ধবাবুকে কলকাতার উডল্যান্ড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে বুদ্ধবাবুর শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যা আছে। তিনি বাড়িতে অক্সিজেন সাপোর্ট নিয়ে থাকেন। প্রায় সারাক্ষণ তাকে পোর্টেবল অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে ঘুরে বেড়াতে হয়। পোর্টেবল অক্সিজেন সিলিন্ডার থেকে নাকে নল লাগানো থাকে তার সর্বক্ষণ। প্রায় ১৫ বছর ধরে বুদ্ধবাবুর এই সিওপিডির সমস্যা রয়েছে। তবে আজ হঠাৎই সেই সমস্যা বেড়ে গিয়েছে।
হাসপাতালে ভর্তি করার সময় তার শরীরে অক্সিজেন স্যাচুরেশন মাত্র ৭০ শতাংশ ছিল। সেই সাথে ছিল জ্বর ও প্রবল শ্বাসকষ্ট। তাই হাসপাতালে তার বিকেল সাড়ে চারটে নাগাদ করোনা রাপিড টেস্ট করা হয়। সেই টেস্টে ফল নেগেটিভ আশায় এখন অনেকটাই স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছিলেন চিকিৎসকরা। তারপর থেকে তাঁকে অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া শুরু হয় এবং কৌশিক চক্রবর্তীর নেতৃত্বে একটি মেডিকেল টিম গঠন হয়। সন্ধ্যে থেকেই চিকিৎসায় সাড়া দিয়েছিলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। অবশেষে মধ্যরাতে তার জ্ঞান ফেরে। হাসপাতাল সূত্রে খবর, শেষবারে পরীক্ষায় তার শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা ৬২ কার্বন-ডাই-অক্সাইড মাত্র ৪২। এটা সিওপিডি রোগীর জন্য প্রায় স্বাভাবিক বলা যায়।
প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর অসুস্থতার খবর পেয়ে চিন্তায় পড়ে ছিল গোটা বঙ্গ রাজনীতি। গতকাল প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর হাসপাতলে ভর্তি হওয়ার খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ফিরহাদ হাকিমকে হাসপাতালে গিয়ে দেখা করার নির্দেশ দেন। তারপর তিনি নিজেও সন্ধ্যের দিকে হাসপাতালে বুদ্ধবাবুকে দেখতে যান। সেখানে তিনি বলেন, “উনি দ্রুত সুস্থ হয়ে যায় যাতে সেটাই কামনা করি।” সেই সাথে কথা বলেন বুদ্ধকন্যার সাথে। এছাড়াও প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী বলেন, “শুনলাম প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেববাবু অসুস্থ। খবরটা শুনে বিষন্ন হলাম এবং তার দ্রুত আরোগ্য কামনা করি।” এছাড়াও বামফ্রন্টের শীর্ষ নেতৃত্বরা মিনিটে মিনিটে তাদের নেতার শারীরিক অবস্থার খোঁজ রাখছে।