গ্রেপ্তার হওয়ার পর থেকেই কার্যত নিরবতা পালন করছিলেন তৃণমূলের প্রাক্তন মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। মাঝে সংবাদমাধ্যমে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ করলেও, তদন্তে অসহযোগিতা করছেন বলে অভিযোগ উঠছিল লাগাতার। তবে সেই আবহে এবার নতুন ইঙ্গিত পূর্ণ মন্তব্য করলেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার আদালতে জামিনের আবেদন করেন তিনি। আর সেখানেই তিনি বলেন, ‘কেউ ছাড়া পাবে না।’
স্কুল শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার হয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তার ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছে কোটি কোটি টাকা গহনা এবং বেশ কিছু বিদেশী মুদ্রা। দুজনে যৌথ সম্পত্তির হদিস মিলেছে বহু জায়গায়। তাদের সম্পর্ক নিয়ে কাটা ছেঁড়া চলছে ইতিমধ্যেই। এবার সেখানেই নগর দায়রা আদালতে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে পেশ করলো কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা ইডি। সেখানেই তার আইনজীবীরা জামিনের আবেদন জানিয়েছেন। ইডির তরফে এই জামিনের আবেদনের তীব্র বিরোধিতা করা হয়। তবে সেখানেই হাত জোড় করা অবস্থায় দেখা যায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এদিন আদালতে শুধুমাত্র পার্থ চট্টোপাধ্যায় নয় তার সঙ্গে ছিলেন অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ও। তিনি চলে যাওয়ার পরে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে আসা হয়। হাতজোড় করে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় তাকে। বিচারকরা তাকে লকআপে নিয়ে যাবার নির্দেশ দেন।
সেইমতো পুলিশ তাকে নিয়ে এগিয়ে যাবার সময় মুখ ঘুরিয়ে পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘কেউ ছাড়া পাবে না।’ তাহলে কাকে উদ্দেশ্য করে এই মন্তব্য করলেন তৃণমূলের প্রাক্তন মহাসচিব? ইতি মধ্যেই এই বিষয়টি নিয়ে শুরু হয়েছে জল্পনা। অন্যদিকে, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আইনজীবীরা এদিন আদালতে জানিয়েছেন, হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কমেছে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের। ক্রিয়েটিনিন বেড়েছে। শৌচাগারে যেতে পারছেন না। গ্রেফতার হবার আগে পর্যন্ত সুস্থ ছিলেন পার্থ। এদিক ওদিক যেতে পারছিলেন। অন্যদিকে, ইডি পাল্টা জানিয়েছে, পার্থ চট্টোপাধ্যায় যদি অসুস্থ হতেন তাহলে তিনি জেল সুপারকে জানাতেন। অসুস্থ হলে অবশ্যই ওষুধের ব্যবস্থা করা হবে। ভুবনেশ্বর এইমস আগেই জানিয়েছিল এই বয়সে এই সমস্ত শারীরিক সমস্যা অত্যন্ত স্বাভাবিক।
তবে উল্লেখ্যনীয় বিষয়টি হলো, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আইনজীবীরা তার হয়ে জামিনের আবেদন দায়ের করলেও, অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের আইনজীবীরা কোন জামিনের আবেদন করেননি। দুর্নীতি মামলায় পার্থকে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা গ্রেপ্তার করার পর তার সঙ্গে দূরত্ব বৃদ্ধি করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। তাকে মন্ত্রীত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তুলে দেওয়া হয়েছে তৃণমূল মহাসচিব পদ। এমনকি পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জন্য পুরো দলকে লজ্জার মুখে পড়তে হয়েছে বলে জানিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। তারই মধ্যে, এবারে একটি বিশেষ ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। কেউ ছাড়া পাবে না বলে, তিনি কাকে বোঝাতে চাইছেন? তাদের উদ্দেশ্যে এমন মন্তব্য করলেন পার্থ? সেই নিয়েই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক টানাপোড়েন।