সরকারের টাকা ব্যবহার করেই শুরু করে দিন ব্যবসা, বিরাট সুযোগ রয়েছে ভারতের বেকার যুবক-যুবতীদের জন্য
ভারত সরকারের এই প্রকল্প অনুযায়ী আপনারা নিজেদের ব্যবসার জন্য পেয়ে যেতে পারেন সহজ কিস্তিতে দারুন লোন
গত দু’বছর যাবৎ অতিমারির কারণে একেবারে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে আমাদের অর্থনৈতিক অবস্থা। শুধুমাত্র ভারত বলে নয় গোটা বিশ্বের অর্থনৈতিক হাল অত্যন্ত শোচনীয়। রুগ্ন অর্থনীতির কারণে ইতিমধ্যেই দু বছরে গোটা পৃথিবী জুড়ে কাজ হারিয়েছেন বহু মানুষ। তবে জীবন জীবিকা বলে কথা। তাই জীবিকার খোঁজে সরকারি কিংবা আর্থিকভাবে বিপর্যস্ত বেসরকারি চাকরির বাজারে না ঘুরে এখন গোটা বিশ্বের মানুষ চাইছেন সরকারি চাকরি করতে। গোটা দেশ কিছুটা স্থিতিশীল অবস্থায় এলেও এখনো পর্যন্ত অবস্থা প্রায় একই রকম রয়েছে। কিন্তু সব সময় তো আর সবাই সরকারি চাকরি পেতে পারে না। তাই এই মুহূর্তে দরকার নতুন ব্যবসায়িক আইডিয়া। যে আইডিয়ার মাধ্যমে ব্যবসা করে খুব সহজেই আপনারা হতে পারবেন লাখপতি।
কিন্তু ব্যবসা করতে গেলে তো সবার আগে প্রয়োজন মূলধনের। এই মূলধন কে যোগাবে? বেকার যুবক যুবতীদের এই পরিস্থিতি থেকে মুক্তি দেওয়ার জন্যই ভারত সরকার চালু করেছে প্রধানমন্ত্রী মুদ্রা যোজনা প্রকল্পে ঋণের ব্যবস্থা। যদি আপনাদের মাথায় ব্যবসার কোন আইডিয়া থাকে তাহলে অযথা চিন্তা না করে প্রধানমন্ত্রীর মুদ্রা যোজনা ঋণ নিয়ে শুরু করে দিন ব্যবসা। আলোতে দেশের বেকারদের কর্মঠ করে তুলতে এবং ব্যবসার মূলধন যোগান দেওয়ার জন্যই চালু করা হয়েছে এই প্রকল্পের। তবে দেশের বেশিরভাগ মানুষই এই প্রকল্পের ব্যাপারে খুব একটা অবগত নন। তাই আজ আমরা আপনাদের এই মুদ্রা যোজনা সম্পর্কে জানাতে চলেছি বিস্তারিত তথ্য। এই প্রকল্প অনুযায়ী আপনারা সর্বাধিক ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ পেতে পারেন।
প্রধানমন্ত্রী মুদ্রা যোজনার ব্যাপারে সবার আগে যে বিষয়টি জানা উচিত সেটা হল, শুধুমাত্র নতুন ব্যবসার ক্ষেত্রে নয়, যদি কোন উদ্যোগই বা ব্যবসাদার তার ব্যবসাকে বৃদ্ধি করতে চান তাহলেও তিনি এই মুদ্রা যোজনা ঋণ গ্রহণ করতে পারেন। তবে নতুন ব্যবসা হোক কিংবা পুরনো ব্যবসা সম্প্রসারণ দুই ক্ষেত্রেই সেই উদ্যোগীকে তার ব্যবসার সঠিক পরিকল্পনা বা লক্ষ্য আগে থেকে স্থির করে নিতে হবে। তারপর কাগজপত্র সঠিক রেখে সঠিক জায়গায় সঠিকভাবে আবেদন করলে ওই ব্যক্তি মাত্র ১০ দিনের মধ্যেই পেয়ে যাবেন ঋণ। কিন্তু ঋণ বা লোন পাওয়ার ক্ষেত্রে ওই ব্যক্তিকে কোন রকম বাড়তি প্রসেসিং চার্জ দিতে হবে না। শুধুমাত্র ঐ ব্যক্তি কি ধরনের ব্যবসা করতে চাইছেন সেই বিষয়টি সুস্পষ্ট হওয়া প্রয়োজন। তার সঙ্গে পরিষ্কার থাকতে হবে সমস্ত আবেদন পত্র।
আবেদনের ক্ষেত্রে আবেদনকারীকে অবশ্যই ভারতীয় নাগরিক হতে হবে। আবেদনকারীর বয়স হতে হবে ১৮ বছরের ঊর্ধ্বে। সরকার অথবা সরকারি নিয়ন্ত্রণাধীন বেসরকারি ব্যাংক মারফত সহজ কিস্তিতে আপনারা লোন গ্রহণ করতে পারবেন। আবেদনকারী যদি ছোট উৎপাদন ভিত্তিক কারখানা তৈরি করতে চান তাহলে তিনি লোন পাওয়ার যোগ্য। এছাড়াও মুদি দ্রব্য, মাছের চাষ ও ব্যবসা, সবজির ব্যবসা, মৌমাছি চাষ, কৃষিকাজ, পোল্ট্রি হ্যাচারি, ডেয়ারি ফার্ম জাতীয় ব্যবসা করতে চাইলেও লোন পাওয়া যাবে। এই লোনের জন্য আবেদন জানাতে হলে প্রথমে আবেদনকারীকে ভারত সরকারের মুদ্রা যোজনা প্রকল্পের ওয়েবসাইটে ঢুকে আবেদন পত্র ডাউনলোড করে নিতে হবে। তারপরে তার ব্যবসায়িক পরিকল্পনা পত্রের যাবতীয় তথ্য আপলোড করে ওই আবেদনপত্র সাবমিট করে একটি প্রিন্টেড কপি অবশ্যই আবেদনকারীকে তুলে রাখতে হবে নিজের কাছে। এই আবেদনপত্র পরবর্তীতে তিনি ব্যবহার করতে পারবেন।
আবেদন করার সময় আবেদনকারীকে নিম্নলিখিত ডকুমেন্ট সঙ্গে রাখতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে, আধার কার্ড, ভোটার কার্ড এবং প্যান কার্ড, আবেদনকারীর স্থায়ী বাসস্থানের ঠিকানা, ব্যবসায়িক পরিকল্পনা পত্র অর্থাৎ আবেদনকারী কি ধরনের ব্যবসা করতে চাইছেন, আবেদনকারী ইনকাম ট্যাক্সের তিন বছরের খতিয়ান, আবেদনকারী যদি আগে থেকে ব্যবসা করে থাকেন তাহলে সেই ব্যবসার তিন বছরের ব্যালান্স শিট। এ প্রসঙ্গে একটি কথা অবশ্যই মনে রাখতে হবে, মুদ্রা যোজনা এই লোন ব্যবস্থাকে ক্ষুদ্র মাঝারি এবং বৃহৎ এই তিনটি আকারে ভাগ করা হয়েছে। ক্ষুদ্র ঋণের ক্ষেত্রে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত আপনারা লোন পাবেন। মাঝারি ক্ষেত্রে ৫০০০০ থেকে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত লোন পাওয়া যাবে, বৃহৎ ক্ষেত্রে ৫ লক্ষ থেকে ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ পাওয়া যাবে।