ফের একবার বিজেপি শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বিবাদে জড়ালেন বনগাঁর বিজেপি সংসদ তথা কেন্দ্রীয় জাহাজ প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর। তাকে কিছুদিন আগে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী করা হয়েছিল কিন্তু তার কাজকর্মে এবং আচার-আচরণে রাজ্য বিজেপি কমিটি খুব একটা বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে না। এই বিষয়টিকে দিন আরো স্পষ্ট করে জানিয়ে দেওয়া হল বিজেপির পক্ষ থেকে। বিজেপির সাংগঠনিক বৈঠকে নরম-গরম বার্তা দেওয়া হল শান্তনু ঠাকুর এর উদ্দেশ্যে। এই বিষয়টি সামনে আসা মাত্রই বোঝা গেল শান্তনু ঠাকুর বর্তমানে বনগাঁ বিজেপির কাছে একটা সমস্যা থেকে কিছু কম নয়। তবে শুধুমাত্র যে রাজ্য বিজেপির পক্ষ থেকে তাকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে সে রকম কিন্তু না। বরং কেন্দ্রীয় নেতা তথা বিজেপি রাজ্য পর্যবেক্ষক শিবপ্রকাশ পর্যন্ত তাকে রাজ্য বিজেপির সঙ্গে সমন্বয় রেখে কাজ করার পরামর্শ দিয়েছিলেন। তবে, শুধু রাজ্য কমিটি নয় বরং শান্তনু ঠাকুর নিজেও রাজ্য বিজেপি কমিটির কাজকর্মে খুব একটা বেশি খুশি নয় এবং এই বিষয়টি তিনি বারংবার বুঝিয়ে দিয়েছেন একাধিক সাংগঠনিক বৈঠক এবং দলীয় কাজ কর্মের মধ্য দিয়ে।
তবে শান্তনু ঠাকুর এর সঙ্গে বনগাঁ বিজেপির রাজ্য কমিটির সম্পর্ক খুব একটা ভালো নয়। বনগাঁ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি মনস্পতি দেবের সঙ্গে শান্তনু ঠাকুর এর সম্পর্ক খুব একটা ভালো না। পাশাপাশি বিজেপির অন্দরে এটাও খবর, বনগাঁ বিজেপির সঙ্গে রাজ্য কমিটির খুব একটা বেশি সমন্বয় নেই। এরকম পরিস্থিতিতে, কেন্দ্রীয় নেতা গজেন্দ্র সিংহ শেখাওয়াত যখন বনগাঁ একটি সভা করতে এসেছিলেন সেই সময় তার সভায় অনুপস্থিত ছিলেন বিজেপির অনেকেই। বাগদার বিজেপি বিধায়কের সঙ্গে তৃণমূলের যোগাযোগ থাকার সম্ভাবনা রয়েছে বলে তার অনুপস্থিতিতে খুব একটা বেশি গুরুত্ব দিতে চায়নি বিজেপি। কিন্তু গাইঘাটার বিজেপি বিধায়ক এবং উত্তর বনগাঁর বিজেপি বিধায়ক গজেন্দ্র সিংহ শেখাওয়াত এর সভায় অনুপস্থিত ছিলেন। এই বিষয়টি নিয়ে বর্তমানে বেশ চর্চা শুরু হয়েছে বিজেপির অন্দরে।
তবে শান্তনু ঠাকুরকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী করা নিয়ে বনগাঁ সাংগঠনিক দলের মধ্যে সমস্যা রয়েছে। মূলত মতুয়া অধ্যুষিত এলাকায় জয় লাভের জন্য ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনের আগে বসিরহাট সাংগঠনিক জেলা ভেঙে বনগাঁ সাংগঠনিক জেলা তৈরি করা হয়। সেখান থেকেই শান্তনু ঠাকুর এর উত্থান। কিন্তু শান্তনু ঠাকুর এর উত্থানের সঙ্গে সঙ্গে এও দেখা যায় বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার মনোসপতি দেবের সংগে তার মনোমালিন্য চলছে। এই মনোমালিন্যের কারণে বিজেপির অন্দরে শান্তনু ঠাকুর কে নিয়ে সমস্যা রয়েছে।
অন্যদিকে মনস্পতি নিজে একজন আরএসএস কর্মী ছিলেন। বাংলার বিজেপি সবথেকে পুরনো নেতাদের মধ্যে একজন ছিলেন তিনি।তাই শান্তনু ঠাকুর এর সঙ্গে তার সম্পর্ক খারাপ হওয়ার কারণে রাজ্য বিজেপির বনগাঁ সাংগঠনিক জেলায় সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। এই কারণেই আজকে সাংগঠনিক বৈঠকে কার্যত নরমে-গরমে বার্তা দেওয়া হল শান্তনু ঠাকুর এর উদ্দেশ্যে। রাজনৈতিক মহল মনে করছে, শান্তনু ঠাকুর কে সমস্ত কিছুর রফা করে নেওয়ার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু অন্যদিকে, শান্তনু ঠাকুর এর যারা অনুগামী রয়েছেন তারা আবার বলছেন, এতদিন ধরে শান্তনু ঠাকুর সব কিছু মুখ বুজে সহ্য করে আসছিলেন, এই কিছুদিন হলো তিনি দলে নিজের জায়গাটুকু বুঝে নেওযা শুরু করেছে।ন।














