শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের জন্ম দিবস উপলক্ষে বিজেপির কর্মসূচি ঘিরে ধুন্দুমার বাঁধলো কলকাতায়। বুধবার সকালে ভবানীপুরে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের বাড়িতে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়েছিলেন রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। অভিযোগ উঠেছে, সেখানে তাকে ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন তৃণমূল সমর্থকরা। ‘গদ্দার’ স্লোগানও ওঠে ঐ বিক্ষোভ কর্মসূচিতে, এমনটাই জানিয়েছেন বিজেপি কর্মীরা। যদিও তৃণমূল কংগ্রেস এই অভিযোগ সম্পূর্ণরূপে অস্বীকার করছে।
তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক কুনাল ঘোষ বলেছেন, “ওই জায়গায় তৃণমূলের কেউ ছিলনা। হিন্দু মহাসভার লোকজন ওকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। এখানে আমাদের কি করার আছে?” প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, জনসংঘের প্রতিষ্ঠাতার জন্ম দিবস উপলক্ষে রাজ্য বিজেপির সদর দপ্তরের বাইরে শ্যামাপ্রসাদের মূর্তিতে মাল্যদান করা হয়। শ্রদ্ধা জানানো হয় রেড রোডে তার মূর্তিতে। বিকেলে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের জন্ম দিবস উপলক্ষে ভারতীয় জনতা পার্টির তরফ থেকে শ্যামাপ্রসাদ যাত্রার আয়োজন করা হয়। মিছিলে উপস্থিত ছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল এবং বিজেপি নেতা রাহুল সিনহার মত ব্যক্তিত্বরা। মিছিলটি গোলপার্ক থেকে হাজরা পর্যন্ত যাওয়ার কথা ছিল। তবে বিজেপির অভিযোগ, পুলিশ নাকি এই মিছিলের অনুমতি দেয়নি।
বিধানসভাতেও এদিন শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের জন্ম দিবস পালন করা হয়। তবে এই অনুষ্ঠানে কোন ভারতীয় জনতা পার্টির নেতাকে দেখা যায়নি। পরে বিরোধী দলনেতা সহ কয়েকজন বিজেপি বিধায়ক আলাদা করে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের ছবিতে মাল্যদান করেন। এই নিয়ে তরজা শুরু হয়েছে তৃণমূল এবং বিজেপির মধ্যে। বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ওরা যে শ্যামাপ্রসাদকে নিয়ে এত হইচই করছেন, কিন্তু ওরা তো বিধানসভার অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন না। আগে এমনটা কখনো হয়নি। আগেও অনেকবার অনুষ্ঠান হয়েছে। সেই সময় যারা বিরোধী দলের বিধায়ক ছিলেন তারা এই অনুষ্ঠানে যোগ দিতেন।” পাল্টা শুভেন্দু বলেছেন, “শ্যামাপ্রসাদকে কিকরে শ্রদ্ধা জানাতে হয়, তা ওদের থেকে আমরা শিখব না।”
অন্যদিকে শ্যামাপ্রসাদের জন্ম দিবস পালন করে রাজ্যের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়েছেন রাজ্যপাল। রেড রোডে শ্যামাপ্রসাদের মূর্তিতে মালা দিয়ে জগদীপ ধনখড় বলেছেন, “রাজ্যে দম বন্ধ করা পরিস্থিতি কায়েম হয়েছে। গণতন্ত্রের ন্যূনতম পরিসর অবশিষ্ট নেই। এর বিরুদ্ধে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। মুখ খুলতে হবে এর বিরুদ্ধে।” যদিও এর পাল্টা রাজ্যের অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেছেন, “রাজ্যপাল রোজ কিছু না কিছু বলছেন। তার কথায় কারো কোন মাথা ব্যথা নেই। তার কথা মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য পর্যন্ত নয়।”