টলিউডবিনোদন

মন খারাপ ‘দিদি নং ১’-এর সঞ্চালক রচনা ব্যানার্জির, লাইভে এসে ফ্যানদের কাছে ক্ষমা চাইলেন অভিনেত্রী

Advertisement

চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে অভিনেত্রী রচনা ব্যানার্জি (Rachana Banerjee) নিজের ছেলে এবং বান্ধবীদের সঙ্গে বেড়াতে গিয়েছিলেন সুন্দরবন। সেখানে গিয়ে নৌকায় করে ঘুরেছেন তাঁরা। সুন্দরবনের ছবিগুলি ইন্সটাগ্রামে শেয়ার করেছেন রচনা। রচনার শেয়ার করা ছবিগুলি ভাইরাল হয়েছে নেটদুনিয়ায়।

রচনা নিজের ছেলের মধ্যেই খুঁজে পান নিজের পৃথিবী। ক্রিসমাসের ছুটিতে রচনা তাঁর ছেলেকে নিয়ে বড়দিনের ছুটি কাটাতে গিয়েছিলেন ইবিজা ফার্ম রিসর্ট অ্যান্ড স্পা-তে। সেখানে গিয়ে শীতের রোদে জমিয়ে ক্রিকেট খেলেছেন মা ও ছেলে। সেই ছবিগুলি ইন্সটাগ্রামে শেয়ার করে রচনা বলেছেন, তাঁর ছেলেই তাঁর সবকিছু। ছবিতে রচনার পরনে রয়েছে মভ কালারের ট্র‍্যাক সুট ও চোখে সানগ্লাস। রচনার ছেলের পরনে রয়েছে কালো রঙের জিনস এবং নীল টি-শার্ট এবং হাতে ক্রিকেট ব্যাট। রচনার শেয়ার করা ছবিগুলি ভাইরাল হয়েছে। নেটিজেনদের কাছে প্রশংসনীয় হয়েছে মা ও ছেলের মিষ্টি ছবিগুলি।

কিছুদিন আগেই কোভ‍্যাক্সিন নিয়ে নিজের ছবি শেয়ার করেছিলেন রচনা। ভ‍্যাক্সিন নেওয়ার পর রচনার সামান্য জ্বর এলেও এখন সুস্থ আছেন তিনি। এর ফাঁকেই নিজের অন্যতম দুর্বলতার কথা এদিন শেয়ার করলেন রচনা। জ্বর থেকে উঠেই রচনা শেয়ার করলেন একপ্লেট মিষ্টি নিয়ে ছবি। মিষ্টি রচনার সবচেয়ে বড় দুর্বলতা বলে জানিয়েছেন তিনি। তবে মিষ্টিগুলি ‘বাঞ্ছারাম’-এর কিনা সেই কথা জানা যায়নি।

তবে শরীর একটু সুস্থ হতেই রচনা বেরিয়ে পড়েছেন শান্তিনিকেতনের উদ্দেশ্যে। বসন্তের শান্তিনিকেতন সত্যিই সুন্দর। তবে দোলের অনুষ্ঠান দেখার জন্য রচনা শান্তিনিকেতন গিয়েছেন, এমনটা ভাবার কোনো কারণ নেই। কারণ গত বছর রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (Rabindranath Tagore)-এর গান বিকৃত করে একটি অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছিল। সেই কারণে বিশ্বভারতীর উপাচার্য দোল উৎসব নিষিদ্ধ করে দিয়েছেন। কিন্তু ভ্রমণের টানে বসন্তের পলাশফুলের রাঙা আগুন জ্বলা শান্তিনিকেতনে গিয়েছেন রচনা। সেখান থেকে ইন্সটাগ্রাম ‘গজব কা হ্যায় দিন’ গানের সাথে হালকা নাচের ভিডিও শেয়ার করেছেন তিনি। রচনার এই ভিডিওটি তাঁর অনুরাগীদের পছন্দ হয়েছে। এই বিষয়ে অনেকে প্রশ্ন তুলতেই পারেন শান্তিনিকেতনের বুকে রবীন্দ্রসঙ্গীতের সঙ্গে ভিডিও না বানিয়ে রচনা কেন আধুনিক হিন্দি গানের সঙ্গে ভিডিও বানালেন! এই বিষয়ে একটি কথা বলা দরকার, রবীন্দ্রনাথের একাধিক গানে পাশ্চাত্য সুর পরিলক্ষিত হয়েছে। কবিগুরু নিজেও পছন্দ করতেন ছকভাঘা পথে চলতে। কারণ ঠাকুরবাড়িই যে রক্ষণশীল সমাজকে ক্রমশ আধুনিক করে তুলছিল। এই কারণে কবিগুরুর ভূমিতে দাঁড়িয়ে রচনার হিন্দি গানের সঙ্গে নাচের ভিডিও তৈরীর মধ্যে কোনো অপসংস্কৃতি নেই।

সম্প্রতি শান্তিনিকেতন থেকে দোলের প্রাক্কালে রচনা শেয়ার করেছেন বেশ কিছু ছবি। ছবিগুলিতে দেখা যাচ্ছে কলকাতার সংস্কৃতি জগতের আরও কিছু মানুষকে যাঁরা রচনার সঙ্গে শান্তিনিকেতনে গেছেন। শান্তিনিকেতনের বিভিন্ন জায়গা ঘুরে দেখেছেন তাঁরা। এমনকি রবীন্দ্রসঙ্গীত গবেষণা কেন্দ্রেও গিয়েছিলেন তাঁরা। তবে এর মধ্যেও একদিন সময় করে দোল খেলেছেন রচনারা। সেদিন সকলে পরেছিলেন সাদা রঙের পোশাক। প্রত্যেকের কপালে ছিল লাল রঙের আবীরের টিকা। তবে রচনার ছেলেকে দেখা যায়নি শান্তিনিকেতন আউটিং-এ।

ইতিমধ্যেই রচনা সবুজ রঙের সালোয়ার কামিজ পরিহিত ছবি শেয়ার করেছেন ইন্সটাগ্রামে। ছবিগুলি শেয়ার করে রচনা জানিয়েছেন, সবুজ রঙ তাঁর কাছে সৌভাগ্যের প্রতীক। সবুজের নেশা চারিদিকের নেগেটিভিটিকে সরিয়ে সৃজনশীল করে তোলে তাঁকে। সবুজ রঙের সালোয়ার কামিজে রচনার ছবি নেটিজেনদের কাছে প্রশংসিত হয়েছে।

কিন্তু বাংলা নববর্ষে সোশ্যাল মিডিয়ায় ফ্যানদের উদ্দেশ্যে কোনো শুভেচ্ছাবার্তা শেয়ার করেননি তাঁদের প্রিয় ‘দিদি’ রচনা। এর ফলে ভক্তদের মধ্যে অনেকের মনেই প্রশ্ন উঠেছিল, হঠাৎই সোশ্যাল মিডিয়া থেকে কেন সরে গেলেন রচনা! তবে সম্প্রতি রচনা গাড়িতে বসে একটি ভিডিও করে সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করে বলেছেন, তিনি তাঁর অনুরাগীদের ভোলেননি। প্রকৃতপক্ষে তাঁর সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টে কিছু সমস্যা হচ্ছিল ফলে তিনি কিছুই পোস্ট করতে পারছিলেন না। এতদিন পর নববর্ষের শুভেচ্ছাবার্তা জানানোর জন্য অনুরাগীদের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিয়েছেন রচনা। এই করোনা আবহে রচনার একটিই প্রার্থনা সকলের বছর সুস্থ ও সুন্দরভাবে কাটুক।

রচনা মূলত ঘরে ঘরে ‘দিদি নং 1’ শোয়ের দৌলতে বেশি পরিচিত। একসময় অভিনেত্রী হিসাবে প্রশংসিত হলেও টেলিভিশনের পর্দায় তাঁর উপস্থিতি ‘দিদি নং 1’- এর টিআরপি বাড়িয়ে দিয়েছে। রচনার পরিবর্তে একবার দেবশ্রী রায়(Debashree Roy)শোয়ের সঞ্চালক হিসেবে আনা হলেও দর্শকদের মন ছুঁতে পারেননি দেবশ্রী। তাই রচনাকেই আবার এই শো-তে ফিরিয়ে আনা হয়। রচনার জনপ্রিয়তার আরেকটি কারণ হলো তাঁর মানবিকতা। টলিউডের বহু দুঃস্থ শিল্পীকে সাহায্য করেন রচনা।ব্যক্তি রচনা ভালোবাসেন গাছ লাগাতে,বেড়াতে যেতে,নিজের ছেলেকে নিয়ে জমিয়ে সংসার করতে এবং জীবনকে ইতিবাচক ভঙ্গিতে এগিয়ে নিয়ে যেতে। আক্ষরিক অর্থেই রচনা ‘দিদি নং 1’।

Related Articles

Back to top button