দুঃসময় কাটিয়ে রাণু মন্ডল (Ranu Mandal) আবারও ফিরছেন সঙ্গীতদুনিয়ায়। সম্প্রতি রাণু মন্ডলের আরও একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। এই ভিডিওতে রাণুকে জনপ্রিয় হিন্দি ফিল্ম ‘চোরি চোরি চুপকে চুপকে’-এর টাইটেল সঙ সাবলীল দক্ষতায় গাইতে শোনা গেল। গত বছর বিখ্যাত গায়ক রূপঙ্কর বাগচী (Rupankar Bagchi)-এর ডিজিটাল কনসার্টে গেয়েছেন রাণু। রূপঙ্কর তাঁর গায়কীর প্রশংসা করেছেন। কিন্তু তার পাশাপাশি রাণুকে নিয়ে ট্রোল ভিডিও মারাত্মক ভাইরাল হয়ে চলেছে নেট দুনিয়ায়। এই ভিডিওতে ‘কলকাতার সেরা রূপসী’ গানের সঙ্গে এডিটিং-এর কারসাজিতে অন্য একজনের শরীরে রাণুর মুখ বসিয়ে তাঁকে ট্রোল করা শুরু হয়েছে। নেটিজেনদের একাংশ এই ভিডিওটির সমালোচনা করেছেন। তাঁদের সঙ্গে একমত হয়ে অনায়াসেই বলা যায়, সমাজ ক্রমশ নিম্নমুখী হয়ে চলেছে। একজন মহিলার চেহারা ও তাঁর গায়ের রঙ নিয়ে এই ধরনের ট্রোলিং ভিডিও বানিয়ে শেয়ার করা হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায় যা অত্যন্ত মানহানিকর ও অসাংবিধানিক।
সোশ্যাল ওয়ার্কার অতীন্দ্র (Atindra)একটি ভিডিও পোস্ট করেছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। এই ভিডিওতে রাণু মন্ডলকে বলতে শোনা গিয়েছে, পরিচালক ধীরাজ মিশ্র (Dhiraj Misra) প্রথম রোম্যান্টিক ফিল্ম ‘সীতামগর’ এবং ভারতের স্বাধীনতাযুদ্ধ নিয়ে তৈরী ফিল্ম ‘সরোজিনী’-র কিছু গান গাইবেন রাণু মন্ডল। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিডিওটি ভাইরাল হয়েছে। নেটিজেনরা অনেকেই রাণু মন্ডলকে কটাক্ষ করে মানসিক রোগী বলেছেন। আবার অনেকেই অতীন্দ্রকে বলেছেন, লকডাউনের সময় রাণু মন্ডল যখন খেতে পাচ্ছিলেন না, তখন কোথায় ছিলেন অতীন্দ্র। তবে অতীন্দ্র এই প্রশ্নের কোনো উত্তর দেননি।
লকডাউনের সময় আর্থিক কষ্টের সম্মুখীন হতে হয় রাণু মন্ডলকে। কিন্তু তা সত্ত্বেও রাণু এলাকার গরীব মানুষদের জন্য নিজের চেষ্টায় কিছু ত্রাণের ব্যবস্থা করেছিলেন। নিজে না খেতে পেলেও অন্যের সেবায় ব্রতী হওয়া রাণুর এই রূপ সেদিন বহু মানুষের কাছে প্রশংসনীয় হয়েছিল। রাণু সেইসময় নিজে প্রায় প্রতিদিনই চিঁড়ে-মুড়ি খেয়ে কাটাতেন। রাণুর অভাবের কথা জানতে পেরে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা তাঁর জন্য কিছু আর্থিক সহায়তা ও খাবারের ব্যবস্থা করেন।
রানাঘাট স্টেশনে বসে ‘এক পেয়ার কা নাগমা’য় গেয়ে ভাইরাল হওয়া রাণু মন্ডলকে বলিউডে প্লে ব্যাকের সুযোগ দিয়েছিলেন মিউজিক ডিরেক্টর হিমেশ রেশমিয়া। হিমেশ রেশমিয়া(Himesh Reshmiya)-এর সঙ্গে ডুয়েট গেয়েছিলেন রাণু। তাঁর গাওয়া ‘তেরি মেরি কাহানি’ গানটি যথেষ্ট বিখ্যাত হয়েছিল। এরপর রাণু বহু স্টেজ শোয়ের অফার পেতে শুরু করেন। কিন্তু রাণু দর্শকদের সঙ্গে এবং তাঁর অনুরাগীদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করতে শুরু করেন। একসময় মিডিয়ার সামনেও খারাপ আচরণ করেন রাণু। ফলে তাঁর প্রতি ইন্ডাস্ট্রির বৈরিতা তৈরি হয়। পরবর্তীকালে লকডাউনের সময় স্বাভাবিকভাবেই কর্মহীন হয়ে পড়েন রাণু।