শ্রেয়া চ্যাটার্জি – ভগবানের আসনে বসিয়ে পুজো করা হচ্ছে সাদা, কালো ইঁদুর। এই মন্দিরে গিয়ে আপনি যদি সাদা ইঁদুর দেখে ফেলেন তাহলে বুঝতে হবে আপনি সাংঘাতিক সৌভাগ্যবান। আপনার জীবনে ভালো কিছু ঘটবেই। তবে যারা ইঁদুরে ভয় পান, তারা এই মন্দিরে কিন্তু খবরদার যাবেন না, কারণ একটা দুটো নয় ঝাঁকে ঝাঁকে ইঁদুররা এসে আপনার পায়ের ওপর দিয়ে চলে যেতে পারে। আর এখানে ইঁদুরদের কিছু করা হয় না, কারণ এখানে ইঁদুর দেবতা জ্ঞানে পূজিত হয়। এমন একটি অদ্ভুত মন্দির রয়েছে রাজস্থানে। রাজস্থানের করনি মাতা মন্দির। রাজস্থানের বিকানের শহর থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই মন্দিরটি। মা দুর্গার এক রূপ হলেন করনি মাতা।
এই মন্দিরকে ঘিরে রয়েছে নানান গল্পগাথা। শোনা যায়, করনি মাতার ছেলে লক্ষণ একবার কপিল একদিন স্নান করতে গিয়ে ডুবে মারা যান। করনি তখন যমরাজের কাছে তার ছেলে প্রাণভিক্ষা চান কিন্তু যমরাজ তার ছেলেকে ফিরিয়ে না দিয়ে, উল্টে তার সমস্ত সন্তানকে ইঁদুর বানিয়ে দেয়। আবার এও শোনা যায়, বেশ কিছু বছর আগে অনেক সেনা যুদ্ধক্ষেত্র থেকে প্রাণভয় আশ্রয় নিয়েছিল এই স্থানে। তখন করনি মাতা তাদেরকে ইঁদুরে পরিণত করে দেয়। এখানে ইঁদুরকে কেউ হত্যা করে না উল্টে খাবার খেতে দেন। মন্দিরে যদি কোন ইঁদুর মারা যায় তাহলে তার সমান ওজনের সোনা কিংবা রুপো দিয়ে পুনরায় একটি ইঁদুর বানিয়ে দেন ভক্তরা।
হাজার হাজার ইঁদুরকে এখানে খাবার হিসাবে দুধ দেওয়া হয়। কেউ কেউ তো আবার তাদের খাবার পাত্র থেকেই একফোঁটা আঙুলে করে দুধ নিয়ে মুখে দিয়ে নেন। মানুষের কতটা বিশ্বাস থাকলে তবেই ইঁদুরে খাওয়া খাবার থেকে মানুষ নিজে খেতে পারেন। ইঁদুর ক্ষতি করলেও এখানে একটা ইঁদুর কেউ মারা হয় না। প্রতিবছর মার্চ থেকে এপ্রিল এবং সেপ্টেম্বর থেকে অক্টোবর মাসে এই মন্দির সংলগ্ন জায়গায় বিশাল বড় মেলা বসে। দেশ-বিদেশ থেকে লোকের আগমন হয়।