এই দেবীর বর্ণনা : এই দেবী অঞ্জন পর্বতের ন্যায় কৃষ্ণবর্ণ শুষ্ক শরীর বিশিষ্ট, রক্তিম আভা চক্ষু, এনার কেশ আলুলায়িত। এই দেবীর ডান হাতে সদ্য চিহ্ন বাম হাতে পূর্ণ নবনির্মিত পানপাত্র। দেবী সর্বদা সদাশিবের উপর দণ্ডায়মান। কপালে অর্ধচন্দ্র শোভিতা।
শ্মশান কথাটির অর্থ হল মৃত স্থান। চলতি কথায় যেখানে সব দাহ করা হয়। করালবদনী আদ্যা শক্তি মায়ের বিচরণক্ষেত্র। মা কালী কে ধ্বংসের দেবী বলে। এই ধ্বংস মানে সর্বনাশ করা নয়। এর অর্থ তিনি নিজেই সমগ্র বিশ্বব্রহ্মাণ্ড রচনা করেছেন। আবার তিনি গুটিয়ে নেন। এখানে কালী পুজো করার অর্থ হল মানুষ তার শেষ জীবনে মায়ের কোলে আশ্রয় পায় এবং তাতে সে অসীম শান্তি ও আনন্দ পায়। শ্মশান মন্দিরের মতোই পবিত্র। মন্দিরের শাস্ত্র পাঠ করে দেহের পরিণামের কথা বলা হয়। সেটার জীবন্ত উদাহরণ স্বচক্ষে দেখা যায় শ্মশানে গেলে। তাই শ্মশান মা কালীর এত প্রিয় স্থান।
শ্মশান কালীর পুজো তান্ত্রিক মাছ, মাংস আর মদ দ্বারা পূজা করে থাকেন। তবে মাছ মাংস মদ এইসবই সংকেত মাত্র। এই পূজা সাধারণত শ্মশানেই হয়। সাধু-সন্তরা শ্মশানে এই কালী কে পুজো করে। শ্মশানের কালীর হাতের অস্ত্র খড়্গ। এর বাহন শিয়াল।
বীরভূমের দুবরাজপুর এ শ্মশান কালী পুজো হয়। এই মন্দিরের বর্তমান পুরোহিত মশাই জানান এই মন্দির প্রায় হাজার বছরের পুরনো। এই মাকে এক সাধক তপস্যা করে পান। তখন ভৈরব নামে এক পূজারী পুজো করতেন। মায়ের বেদী তৈরি 108 টি মরার মাথা দিয়ে এবং সেই বেদীর উপরে মা পূজিত হন। উলঙ্গ হয়ে মাকে পুজো করতে হয় এবং পুজো করার সময় মায়ের মন্দিরের ভিতরে কেউ প্রবেশ করতে পারেন না। মায়ের ঘট ভরতে যাওয়ার সময় সামনে শৃগাল যায়। এই প্রথাটি অনুযায়ী বিগত হাজার বছর ধরে হয়ে আসছে। মা দক্ষিণা কালী রূপে পূজিত হন এখানে। সারাবছর থেকে একাদশীর দিন মায়ের নিরঞ্জন করা হয়।
Written by – শ্রেয়া চ্যাটার্জী