প্রয়াত হলেন প্রবাদপ্রতিম অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। ভারতীয় ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে ঘটল ইন্দ্রপতন। আজ দুপুর 12:15 নাগাদ চলে গেলেন সৌমিত্রবাবু। গত 6 ই অক্টোবর করোনা সংক্রমণ নিয়ে বর্ষীয়ান অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় ভর্তি হন বেলভিউ হাসপাতালে। 2006 সাল থেকে সিওপিডির সমস্যা থাকায় ও করোনা সংক্রমণের ফলে তাঁর শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। সিটি স্ক্যান করে তাঁর বুকে কিছু না পাওয়া গেলেও এমআরআই রিপোর্টে জানা যায় তাঁর মস্তিষ্ক ও ফুসফুসে পুরানো ক্যান্সারের সংক্রমণ শুরু হয়েছে। এমনকি তাঁর মূত্রথলিতে সংক্রমণ ধরা পড়ে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী সৌমিত্রবাবুর শরীরে দুই বার প্লাজমা থেরাপি করা হয়। কিন্তু তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। তাঁর করোনা এনসেফ্যালাইটিস দেখা দেয়। ফলে তাঁর স্নায়বিক অস্থিরতা শুরু হয়। তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে যান সৌমিত্রবাবু।
তাঁর শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা ক্রমশ কমতে থাকে ও কার্বন-ডাই-অক্সাইডের মাত্রা বাড়তে থাকে। ফলে তাঁকে বাইপ্যাপ ভেন্টিলেশনে রাখা হয়। তাঁর শরীরে সোডিয়াম ও পটাশিয়াম লেভেলের তারতম্য ঘটে। কিন্তু তাঁর করোনা রিপোর্ট নেগেটিভ আসার পর তাঁর শরীরে চিকিৎসকরা অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োগ করা শুরু করেন। সেই সময় অ্যান্টিবায়োটিকে ভালো সাড়া দিচ্ছিলেন সৌমিত্রবাবু। কিন্তু তাঁর বয়সের পক্ষে স্টেরয়েডের ডোজ ক্ষতিকর হতে পারে, এই কারণে চিকিৎসকরা তাঁর শরীরে স্টেরয়েডের ডোজ কমিয়ে দেন। এর ফলে সৌমিত্রবাবুর স্নায়বিক সমস্যা জটিলতর হয়ে যায়।
সৌমিত্রবাবু ক্রমশ কোমায় চলে যান। তাঁর দুটি কিডনি বিকল হয়ে যাওয়ার ফলে তাঁর ইউরিন আউটপুটে সমস্যা দেখা দেয়। সৌমিত্রবাবুর ডায়ালিসিস করা হলেও তেমন লাভ হয়নি। ক্রমশ তাঁর অঙ্গ-প্রত্যঙ্গও বিকল হয়ে ‘মাল্টি অর্গ্যান ফেলিওর’-এর পরিস্থিতি তৈরী হয়। আজ সকালে সৌমিত্রবাবুর মস্তিষ্ক সূচক নেমে যায় 2-এ।
আজ দুপুর 12:15 নাগাদ চিকিৎসকরা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের মৃত্যু সংবাদ ঘোষণা করেন, ইতিমধ্যে পরিবারের কাউন্সেলিং করা হয়েছে। সৌমিত্রবাবুর কন্যা পৌলমী গতকাল রাত থেকেই উপস্থিত ছিলেন হাসপাতালে। বেলভিউ হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, রাজ্য সরকারের তরফে তাঁর শেষকৃত্যের ব্যবস্থা করা হবে।