নিজের সাজানো জীবন না সান্টুর সংসার? ‘খেলাঘর’ সিরিয়ালে নয়া মোড়, দেখুন ভিডিও
30 শে নভেম্বর থেকে স্টার জলসায় শুরু হয়েছে বাংলা ডেইলি সোপ ‘খেলাঘর’। সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে ‘খেলাঘর’-এর ট্রেলার। ট্রেলারে দেখানো হয়েছে পাড়ার দুর্ধর্ষ মস্তান শান্টু হঠাৎ এসে অভিজাত পরিবারের মেয়ে পূর্ণার সিঁথিতে সিঁদুর পরিয়ে দেয়। আত্মীয়রা যখন এই বিয়েকে মান্যতা দিতে চান না, তখন পূর্ণা বলে, সিঁদুর দান কখনও মিথ্যে হয় না। ‘খেলাঘর’-এ পূর্ণার চরিত্রে অভিনয় করছেন স্বীকৃতি মজুমদার এবং শান্টুর চরিত্রে অভিনয় করছেন সৈয়দ আরফিন। প্রতি রবিবার থেকে সোমবার অর্থাৎ সপ্তাহের সাতদিন সন্ধ্যা 6 টায় স্টার জলসা চ্যানেলে সম্প্রচারিত হচ্ছে ‘খেলাঘর’।
ট্রেলার লঞ্চ হওয়ার সাথে সাথে নেটিজেনদের মধ্যেও প্রশ্ন জাগতে শুরু করে, একবিংশ শতাব্দীর এই আধুনিক যুগে হঠাৎ কোনো মেয়েকে পাড়ার গুন্ডা এসে সিঁদুর পরিয়ে দেওয়ার ঘটনা কতটা যুক্তিযুক্ত। নেটিজেনদের মধ্যে মেয়েরা ওপেন ফোরামে প্রশ্ন করেন, একটি মেয়েকে হঠাৎ কেউ এসে সিঁদুর পরিয়ে দেবে এবং মেয়েটি তা মেনে নিয়ে সবাইকে সিঁদুরের মাহাত্ম্য বোঝাতে বসবে, এই ধরনের চিত্রনাট্য আজকের যুগে প্রায় অচল হয়ে গেছে।
সমাজের প্রেক্ষাপট থেকে উঠে আসে সিরিয়ালের কাহিনী। কিন্তু এই ধরনের কোনো ঘটনা ঘটলে তার প্রতিবাদ করেন মেয়েরা। তাহলে কোন যৌক্তিকতা থেকে এই ধরনের চিত্রনাট্য লেখা হয়, তা অজানা। নব্বই-এর দশকে দূরদর্শনে সম্প্রচারিত জনপ্রিয় বাংলা ধারাবাহিক ‘মোহিনী’ তে একটি দৃশ্যে দেখানো হয়েছিল পাড়ার মেয়েকে একা পেয়ে একটি গুন্ডা তাকে সিঁদুর পরিয়ে দেয়। কিন্তু সেই সিরিয়ালে মেয়েটি এই ঘটনা মেনে নেওয়ার বদলে প্রতিবাদ করেছিলেন। এমনকি নব্বইয়ের দশকের সেই সিরিয়ালের চিত্রনাট্যে দেখানো হয়েছিল এই ঘটনায় মেয়েটির পরিবারের সদস্যরা ভয় পেয়ে মেয়েটিকে প্রতিবাদ করতে বারণ করলে মেয়েটি বাড়ি ছেড়ে আলাদা থাকতে শুরু করেন। এই মেয়েটির চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন অভিনেত্রী লাবণী সরকার। নব্বইয়ের দশকে ‘মোহিনী’র প্রবীণ চিত্রনাট্যকার অরূপশঙ্কর মৈত্র চিত্রনাট্যের মাধ্যমে নারীচরিত্রকে প্রতিবাদের স্বাধীনতা দিয়েছিলেন। অথচ একবিংশ শতকের নবীন চিত্রনাট্যকাররা এবং চ্যানেল কর্তৃপক্ষ এখনও সিঁদুরের মাহাত্ম্য নিয়ে পড়ে আছেন। চিত্রনাট্য ও কাহিনীর আধুনিকতাই তার সাবালকত্ব, এই যুক্তি এখনও অবধি মানতে নারাজ বহু সিরিয়াল-নির্মাতারা।