কিছুদিন আগে থেকেই মনে করা হচ্ছিল সব্যসাচী দত্ত আবারো তৃণমূলে ফিরে আসার জন্য পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন। এককালে মুকুল রায়ের বেশ ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত ছিলেন বিধান নগরের দোর্দণ্ড প্রতাপ নেতা সব্যসাচী দত্ত। তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে গিয়েছিলেন কিছুদিন আগে। কিন্তু, যেরকমটা চেয়েছিলেন সেরকমটা হয়নি, এবারের বিধানসভা নির্বাচনে সুজিত বসুর কাছে বেশ বড় ব্যবধানে হারতে হয়েছে সব্যসাচী দত্ত কে। তারপরেই আবারো মুকুল রায়ের সঙ্গে যোগাযোগ, এবং ঘর ওয়াপসির স্পষ্ট ইঙ্গিত।
কিছুদিন আগে তৃণমূল থেকে জেনে তারা বিজেপিতে চলে গিয়েছিলেন তাদের নিরাপত্তা তুলে নিয়েছিল নবান্ন কর্তৃপক্ষ। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফ থেকে ওই সমস্ত নেতাদের কেন্দ্রীয় সুরক্ষা ব্যবস্থার বন্দোবস্ত করা হয় অমিত শাহের দপ্তর এর তরফ থেকে। আবার মুকুল রায়ের মতো নেতা তৃণমূলে ফিরে আসার পরে তার কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা কেড়ে নিয়েছে কেন্দ্র। শুরু হয়েছে রাজ্যের নিরাপত্তা। কিন্তু, এ তো না হলে দল ত্যাগ করেছে তারপরে নিরাপত্তা পেয়েছে। কিন্তু চাঞ্চল্য হল যখন সব্যসাচী দত্তের ক্ষেত্রে চলে গেল রাজ্য নিরাপত্তা।খাতায়-কলমে তিনি একজন বিজেপি নেতা এখনও পর্যন্ত। কিন্তু তা হলেও তার জন্য রাজ্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা করেছে রাজ্য সরকার। অন্যদিকে তার কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা তুলে দেওয়া হয়েছে বলে সূত্রের খবর। ফলে আবারও রাজ্য রাজনীতিতে প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছেন সব্যসাচী দত্ত।
যদি সব্যসাচী দত্ত বলছেন, ” আমি তো কেন্দ্রের নিরাপত্তা ছাড়িনি। তবে হ্যাঁ আমার সঙ্গে রাজ্যের একটি নিরাপত্তা রক্ষী রয়েছেন।” প্রশ্ন করা হলো, যারা তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদান করেছেন তাদের সবার নিরাপত্তার তুলে নিয়েছিল রাজ্য। তাহলে আপনার সিকিউরিটি থেকে যাওয়া তো কথা নয়? কেন হলো এমন? এর জবাবে সব্যসাচী দত্ত বললেন, “সেটা আমি বলতে পারবোনা।” অন্যদিকে মুকুল রায়ের সঙ্গে দেখা হওয়া প্রসঙ্গে সব্যসাচী দত্ত বললেন, “মুকুলদার সঙ্গে আমার পারিবারিক সম্পর্ক।” মুকুল রায় দিন কয়েক আগে বলেছিলেন, বিজেপি থেকে বহু নেতা আবারো তৃণমূলে ফিরে আসবেন। সেই সম্ভাবনাকে ধীরে ধীরে তৈরী হচ্ছে? আপনি কি আর কিছুদিনের মধ্যে তৃণমূলের ফিরছেন? এই প্রশ্নের উত্তরে সব্যসাচী বললেন, “আমি তো জ্যোতিষী নই, ভবিষ্যতে কি হবে বলতে পারব না।”
তবে সব্যসাচী দত্ত এর গলায় এই সমস্ত কথাগুলি বেশ কমন। যখন, মুকুল রায়ের সঙ্গে দেখা করে সব্যসাচী দত্ত বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিলেন তখন তার সাথে বেশ খানিকক্ষণ বৈঠক করেছিলেন। তারপরে সুজিত বসুর শ্রীভূমি স্পোর্টিং ক্লাবে সমস্ত কাউন্সিলর নিয়ে জ্যোতিপ্রিয়মল্লিক বৈঠক করেছিলেন। সেখানে গিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছিলেন সব্যসাচী, তারপরেই মুকুলের সঙ্গে বৈঠক আর বিজেপিতে যোগ। সেই সময় সব্যসাচী দত্ত এর গলায় দুটি কথা শোনা যেত, মুকুল রায়ের সঙ্গে আমার পারিবারিক সম্পর্ক এবং আমি তো আর জ্যোতিষী নই। ২০২১ এ দাঁড়িয়ে পাল্টেছে শুধু দল। কিন্তু এখনো সব্যসাচী দত্ত এর গলায় সেই একই বক্তব্য। এই সমস্ত কথা শুনেই রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতামত আবারও হয়তো ঘরে ফেরার পরিকল্পনা গ্রহণ করছেন বিধান নগরের প্রাক্তন মেয়র।